জেনে নিন ট্রান্সনিস্ট্রিয়া

মূল্যহীন পাসপোর্ট নাগরিকদের কী কাজে লাগে?

প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
জাতিসংঘের কোনো সদস্যই স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার অস্তিত্ব স্বীকার করে না। বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল পাসপোর্ট এই দেশের নাগরিকদেরই। ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের দেশ মলডোভা থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার আগে গেলেই এই দেশ। ইউক্রেন ও মলডোভার মাঝামাঝি এক চিলতে জমির নাম ট্রান্সনিস্ট্রিয়া। কাগজে-কলমে এই দেশের নাম প্রিডনেস্ট্রোভিয়ান মলডোভিয়ান রিপাবলিক বা পিএমআর। কিন্তু আসলে এই দেশের কোনো অস্তিত্বই নেই। বর্তমানে, জাতিসংঘের সদস্য সবকটি দেশই মনে করে ট্রান্সনিস্ট্রিয়া আসলে মলডোভারই অংশ। কিন্তু ১৯৯০ সালে ট্রান্সনিস্ট্রিয়া নিজেকে স্বাধীন হিসাবে ঘোষণা করলে শুধু দক্ষিণ ওসেটিয়া, আর্টসাখ ও আবখাজিয়ার মতো আধাস্বীকৃত দেশগুলোই তাকে পূর্ণ রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকার করে। মাত্র সাড়ে পাঁচ লাখ জনবসতির এই দেশের মানুষ একসঙ্গে দুই বা তিন দেশের নাগরিকত্ব রাখতে পারেন। প্রায় ৩০ হাজার মানুষ আবার রাষ্ট্রহীন। দেশটির ৯০ শতাংশ মানুষই ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার নাগরিক হওয়ার পাশাপাশি হয় মলডোভা, রাশিয়া বা ইউক্রেনের নাগরিক। ফলে, ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার পাসপোর্ট থেকেও নেই। আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে কোথাও যেতে হলে তাই ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার বাসিন্দাদের ভরসা এই তিন পাসপোর্টই। সমীক্ষা বলছে, স্বাধীনতা ঘোষণার পর প্রায় তিন দশক কেটে গেলেও ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার রাজধানী টিরাসপোলের জনসংখ্যা কমছে। বেশির ভাগ মানুষই জীবিকার খোঁজে পাড়ি দিয়েছেন রাশিয়ায়। স্থানীয়দের মধ্যে দেশপ্রেমের গর্ব থাকলেও বাস্তবিক চিত্র নিয়ে রয়েছে হতাশাও। বিবিসির একটি প্রতিবেদনে রয়েছে ৪৫ বছর বয়সি ট্রান্সনিস্ট্রিয়ান নারী ভেরা গালচেংকোর কথা। তিনি সেখানে বলেছেন, 'আমাদের দুঃখ হয় যে আমাদের স্বাধীনতা স্বীকৃত নয়, কিন্তু তাও আমরা স্বাধীনতা অনুভব করি। আমাদের নিজস্ব সংবিধান, সরকার, সামরিক বাহিনী, টাকা এমনকি পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও স্বাধীনতার স্বীকৃতি নেই।'