জার্মানিতে দশ লাখের বেশি দক্ষ শ্রমিকের অভাব রয়েছে। এ ঘাটতি পূরণে নতুন অভিবাসন আইন করা হয়েছে, যা ১ মার্চ থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন আইনে এমন অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা আগের আইনে ছিল না।
আগের আইনে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ডিগ্রিধারীরা জার্মানিতে চাকরির আবেদন করতে পারতেন। নতুন আইনে কারিগরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের জন্যও আবেদনের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে এই প্রশিক্ষণের মেয়াদ কমপক্ষে দুই বছরের হতে হবে এবং এই ডিগ্রি জার্মান ডিগ্রির সমান বলে অনুমোদিত হতে হবে।
সার্টিফিকেট ঠিক আছে কিনা তা জার্মান শ্রম মন্ত্রণালয়ের ইনফরমেশন পোর্টালে গিয়ে যাচাই করে দেখা যাবে। কীভাবে যাচাই করা যাবে তার ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে 'মেক ইট ইন জার্মানি' ওয়েবসাইটে।
তিন মাসের মধ্যে আবেদন যাচাই প্রক্রিয়া শেষ করতে চায় জার্মানি। এরপর চার সপ্তাহের মধ্যে ভিসা ইসু্য করা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে বসবাসকারীরাও জার্মানিতে চাকরির আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে আগের চেয়ে আইন সহজ করা হয়েছে। কারণ আগে জার্মানি বা ইইউর নাগরিকরা কোনো চাকরির যোগ্য না হলেই কেবল ইইউর বাইরের কেউ চাকরির আবেদন করতে পারতেন।
কারিগরি শিক্ষার যে লেভেল ঠিক করা হয়েছে, তার চেয়ে কম যোগ্যরা চাকরির আবেদন করতে না পারলেও অভিবাসনের চেষ্টা করতে পারবেন। তবে শর্ত হচ্ছে, জার্মানির কোনো চাকরিদাতার কাছ থেকে তাদের চাকরির অফার পেতে হবে। সে ক্ষেত্রে চাকরিদাতাকে আবেদনকারীর জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং দুই বছরের মধ্যে তিনি যেন পেশাদার পর্যায়ের সার্টিফিকেট পেতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।
যারা চাকরির সুযোগ পাবেন তাদের চার বছর কিংবা চাকরির মেয়াদ পর্যন্ত ভিসা দেয়া হবে। চার বছর পর তারা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
জার্মান ভাষায় 'বি২ লেভেল' পর্যন্ত দক্ষতা ও নিজের খরচ বহনের সামর্থ্য থাকলে জার্মানিতে এসে চাকরি খোঁজার অনুমতিও পাওয়া যাবে। ৪৫ বছরের বেশি বয়সি আবেদনকারীদের মাসে কমপক্ষে ৩,৬৮৫ ইউরো আয় করতে হবে।
জার্মানিতে যে সব খাতে দক্ষ জনশক্তির অভাব প্রকট, যেমন- চিকিৎসা, তথ্যপ্রযুক্তি, নার্সিং, সে সব ক্ষেত্রে আইন একটু শিথিল করা হয়েছে। অর্থাৎ আবেদনকারীর যদি অন্তত পাঁচ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে জার্মান কর্তৃপক্ষের দ্বারা সার্টিফিকেট যাচাইয়ের যে শর্ত, তার আর প্রয়োজন পড়বে না।
যারা চাকরি পাবেন, তারা স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের জার্মানি নিয়ে আসতে পারবেন। অবশ্য সে ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের থাকা-খাওয়ার সামর্থ্য রয়েছে কিনা তার প্রমাণ দিতে হবে।