শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শীতের পরিবেশ

মোজাম্মেল সুমন
  ১৫ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

বাংলাদেশে ছয় ঋতুর খেলা ক্রমান্বয়েই সম্ভব,

গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ ও 'হেমন্ত বসন্ত শীত' উৎসব।

পৌষের পরে মাঘে বাঘ কাঁপে তীব্র কনকনানি শীতে,

ছিন্নমূলের দিনরাত কেটে যায় সুখের বিপরীতে।

শীতে পেঁয়ারা, বরই, পেঁপে, জলপাই ও কলা জোটে,

চন্দ্রমলিস্নকা, ডালিয়া, গোলাপ, গাঁদা বাগানে ফোটে।

কাঁচাবাজারে সবুজ শাকসবজি আজ সাধ্যের নাগালে,

পুকুরে কিংবা নদীতে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায় সকালে।

পৃথিবী সাদা পোশাকে আবৃত থাকা যেন বিধবা,

শীতের স্বামীটা মারা গেছে শীতের পূর্বে হয়তোবা।

ভোরের শিশির ছুঁয়ে যায় গাছগাছালিদের পাতায়,

কিচিরমিচির পাখির ডাক- ডালে বসে ডানা ঝাপটায়।

শীতের সকালে জটলা বেঁধে বসে বিভিন্ন আসর,

কবি তার কবিতা লেখে! কেউ পড়ে পত্রিকার খবর।

সকালের পরে সূর্যিমামা মিষ্টি আলো নিয়ে আসে,

মাফলার ঢিলে হলেই কান ভরে বাতাসের নিশ্বাসে।

প্রকৃতির যৌবনেই বিষণ্নতার ছাপ লেগে আছে,

মানুষেরা নিজে থেকে বাঁচার লড়াই করে বাঁচে।

গরিবেরা দুঃখেকষ্টে রাত্রি পোহায় ঠিক অসহায়ে,

খড় জ্বালিয়েই উষ্ণতা মাখে নগ্ন দুটি হাতে পায়ে।

গুনগুনানি শব্দে মুক্ত অবাধেই মৌমাছিরা ছোটে,

ফুলের মধু সংগ্রহে খুব আগ্রহে ব্যস্ত হয়ে ওঠে।

অদৃশ্যেই ভরা যেন আধামরা শীতের সকাল,

আকাশের কান্না বুঝি চারিদিকে কুয়াশার জাল।

শীতের সকালে রান্না ঘর থেকে সুগন্ধ আসে মিঠা,

খেজুর রসে বাড়িয়ে দেয় লোভনীয় স্বাদের পিঠা।

মামার বাড়ি নানান পিঠার হাঁড়ির গল্প নয় মোটে,

মাকড়সার জাল ছড়িয়ে থাকে সকালের দৃশ্যপটে।

ঠান্ডার হারমোনিয়ামে বেজে ওঠে করুণ সংগীত,

মনে পড়ে ফেলে আসা ছেলেবেলার পুরনো অতীত।

শীত যতই হোক কর্মেই ছুটছে তবুও গরিব লোক,

কী দুর্ভোগ! কষ্টেকষ্টে জর্জরিত জীবন, যাই হোক!

শীতে ধনীদের ঠান্ডা ছুঁতে পারে না সহজে অত,

বস্ত্রহীন গরিবেরা দিনেরাতেই ঠান্ডা পায় যত।

ধনীদের জীবন তো শীতের পোশাকে আরামের,

কাঁথা এবং এক টুকরো রোদই স্বর্গতুল্য গরিবের!

মাটির বিছানা কত কষ্ট! ঠান্ডা বায়ুর ভর্ৎসনা,

বনবাদাড়ে পশুপাখিদের আর্তনাদের বেদনা।

মানুষের ঝামেলা হয় আরামে কর্মস্থলে পৌঁছিতে,

রাস্তাঘাটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা বেড়ে যায় এই শীতে!

অজুর ঠান্ডা পানিতে নামাজির ইমানী পরীক্ষা,

জাহান্নামের শাস্তির ভয়ে মনে আসে পুণ্য দীক্ষা।

বিত্তবানেরা এগিয়ে আসুক গরিবের নিকটে,

গরিবের হাসিতেই যেন বাংলাদেশ হেসে ওঠে।

হাসিকান্না প্রকৃতির সৃষ্ট জাগতিক পরিবেশে,

শীতে বন্ধুত্বপূর্ণের উষ্ণতা ছড়াবো বাংলাদেশে।

হে প্রকৃতি! তুমি থেকো আপন মনেই সহনীয়,

শীতে গরিবদের বেঁচে থাকাটা সহজ করে দিয়ো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে