আড়াল
প্রকাশ | ০৫ মার্চ ২০২১, ০০:০০
রহিমা আখতার কল্পনা
আমাকে চিনতে চেয়ে পথ খুব দীর্ঘ হবে
দীর্ঘ পথ হাঁটাবে আমায় একা। সেই ফাঁকে
দেখবে আমার আত্মা ও বহির্কাঠামো, অন্দর-বাহির,
খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে নেবে চোখ, মুখ, ঠোঁটের আদল,
পদক্ষেপে কতখানি গতিস্পৃহা, জড়তা কতটা
কতখানি ভার আমি রেখে যাই পৃথিবীর নির্বিরোধ দেহে,
কতখানি হাড়মজ্জা, কতখানি পোশাক আশাক-
এসব ওজন হবে।
কতটা ঘৃণা ও প্রেম, কতখানি বিদ্বেষের ধোঁয়া
রেখেছি বুকের ঘরে, গোপন পকেটে
কতখানি রেখেছি আগুন, অশ্রম্ন, ঈর্ষা ও জিগীষা
এইসব দেখার নিয়ম ধ'রে পথ আর সহযাত্রী পথচারী
দেখবে আমাকে সন্তর্পণে।
চেনা হবে ঘরবাড়ি, পরিচয় হবে, দেখা হবে বাম ও দক্ষিণ,
চেনা হবে ঘরবাড়ি, চলাচল হবে, দেখা হবে নদী ও পর্বত,
তবু কেউ কোনোদিন চিনবে না আমার আমাকে।
আমাকে লুকাতে চেয়ে বন খুব ঘন হবে
বৃক্ষদের সবুজ পত্রালী হবে হলুদ সহসা,
খুব দ্রম্নত ঝ'রে যাবে। বিবর্ণ পাতার স্তূপে ঢেকে দেবে
নিজদেহে ঢেকে রাখা গোপন লজ্জার মতো ঢেকে দেবে
আমার দারিদ্র্য আর দরিদ্র শরীর, শব।
এইভাবে দিন যাবে, ঋতুভেদে বৃক্ষ ফের পত্রময় পুষ্পময় হবে,
দিগন্ত-বিস্তারী রোদ নতুন পাতার ফাঁকে
একটি পুরানো মুখ আতিপাতি খুঁজবে ভীষণ
\হমেঘে ও সমুদ্রে খুব চুপিচুপি সন্ধি হবে; ঝড় হবে
পাতারা নিবিড় হবে আরো-
আততায়ী অন্ধকার জয়ী হবে, জয়ী হবে খুব সহজেই।
তবু কোনো ঘনঘোর আড়ালেই ঢাকবে না আমার আগুন।
আমিও থাকবো জেগে, থাকবে আমার দাহ, আমার মনীষা
শুধু কেউ কোনোদিন বুঝবে না আমার আমাকে।।