ময়না বুড়ি

প্রকাশ | ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

দালান জাহান
এক নিজর্ন প্রান্তরে তার পাকা বাড়িটায় কি হয় আর কি হতে পারে! এসব ভাবনার অন্তক‚ল নেই ময়না বুড়ির। এ যেন এক নরকপুরীতে পরিণত হয়েছে। নিশিতে নারীর চিৎকার কত মানুষ যে লাশ হয়ে চলে যায় তা অনুমান করেছেন ময়না বুড়ি। আর সেসব প্রতিবাদ করাতেই নিজ স্বামীর ঘর ছাড়তে হয়েছে তাকে। ঠিক যেন দড়ি বেয়ে পবর্ত আরোহণের মতো শঙ্কা দুঃসবাদে পূণর্ হাওয়ার ফলে কান দুটো খরগুশের মতো দঁাড়িয়ে থাকে ময়না বুড়ির। আজ তিনদিন হলো রাজার ঘরে আছেন এক যুবতী মেয়ে। কচি আমড়ার মতো শরীর, গোলাপের মতো তার ঠেঁাট। জানালার কপাট ভেঙে ময়না বুড়ির কানে বাজে মেয়েটির শব্দহীন কথা ও জীবন রক্ষার কবচে বঁাধা অসহায় ব্যাকরণÑ ময়না বুড়ির চোখে আগুন ধরে তার মুখ পোড়ে যায়। রণডঙ্কা ধ্বংসের মতো ঝড় ঝঞ্ঝায় ঝলসে যায় জীবনের বন্ধন। ময়না বুড়ি স্পষ্ট দেখতে পায় মাঠগুলো বৃক্ষের ক্রোধে নিণর্য় করছেন ঘাস ও উদ্ভিদের পাথর্ক্য। শনশন হিম বাতাসের ধাপাধাপিতে কিভাবে কত কষ্ঠে নিজের মাটি ধরে রাখছে মাটি। রাতের অঁাধার যেন জলের মতো ভেজা প্রকৃতির শীতল নিঃশ্বাস ভরা আতর্নাদ কণ্ঠ এবং কণ্ঠের স্রোত বিগলিত কান্নার রোল নদীর প্রবাহের মতো হৃদয় ভাঙে ময়না বুড়িরÑ তার কান্না ও হাসি এক হয়ে যায় কুঁচকে যাওয়া চামড়ার নিচে জমা হতে থাকে অভিশপ্ত উদরের কষ্ট। কী গভীর প্রতাপে সবকিছু পুড়ে যাচ্ছে জ্বলন্ত বাড়ির মতোই চোখের সামনে জ্বলে যাচ্ছে সবকিছু পেছনে দঁাড়িয়ে আছে ক্ষুধাতর্ সিংহ । মাটি ছিঁড়ে যায় গাছের মূল ছিঁড়ে যায়। বঁাশ পাতারা ফুল ছেড়ে অপেক্ষা করে মৃত্যুর জন্য। ময়না বুড়ি বঁাশের ধানে রান্না করে ভাত। তার গন্ধ ভরা অন্ধকার। কিন্তু এই গহীন অন্ধকারও চলে যায় মনুষ্য আলো আসে দূর সমুদ্রের ঢেউ নিয়ে। কিন্তু এই কণ্ঠ যায় না ফেবিকলের মতো আটকে থাকে কানে। ‘আজ তিন দিন হলো ছাড়ো এবার বাড়ি যাব, বাবা-মা খুব কষ্ট পাচ্ছে অথবা আমাকে মেরে ফেল।’ প্রতি উত্তরে যে কথা বলছে, সে কে? তার হাসিতে এত গন্ধ কেন? তার হাসির গন্ধে তৃণলতায় আগুন লেগেছে। বনের পাখিরা ছেড়ে গেছে বনভূমি। ভাগাড়ে তো এত গন্ধ নেই! মরা গরু যা শকুনে খায় তার শরীরেও তো এত গন্ধ নেই । দুই ময়না বুড়ি ভাবেন এই হাসি যদি কোনো শিশুর নাকে লাগে অথবা কোনো গভর্ধারিণীর, অচিরেই গভর্পাত হতে পারে অথবা সে সন্তান মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হতে পারে । কিন্তু সে কার সন্তান? তার কী মা আছে? সে কী কলাগাছ ফেটে পৃথিবীতে এসেছে? না, এ তো আমার সন্তান হতে পারে না! এমন সন্তান আমার গভর্ ধারণ করতে পারে না। এ মানুষের শত্রæ, শিশুর শত্রæ, সমস্ত মানব জাতির শত্রæ। তবে কী আমার গভর্ কেটে ফেলে দেব! কিন্তু তাতে কী কোনো লাভ হবে? প্রতিবাদের ভাষা বড়ো কঠিন হতে পারে মাজলুম মানুষের হাতেও উঠে যেতে পারে ঢাল তলোয়ার। হয়তো বেনিয়াদির নিমর্ম অত্যাচারে মৃত্যুও হতে পারে, কিন্তু তাতেই কী? পৃথিবী তো জানলো শেষ বিকেলটা দেখে যাওয়া মানেই জীবন নয় অথবা সূযাের্স্তর পর যে সন্ধ্যা আসে তা একমাত্র সন্ধ্যা নয় । সন্ধ্যা সকালেও হতে পারে, দুপুরেও পায়ে লুটিয়ে পড়তে পারে সূযের্র ছায়া । ময়না বুড়ি সাহস করে এগিয়ে গেল যদিও সে জানে কত বড়ো জানোয়ার সে জন্ম দিয়েছেন। তবুও গেল সে । দরজায় ঠুকঠুক শব্দ করতেই রাজা বের হয়ে এলো । তার চোখ সপের্র মতো লাল । তার মুখ ভরা মদের গন্ধ । এক হাতে ধরে আছে মেয়েটির লাল সবুজ দোপাট্টা। আরেক হাতে একটি বড়ো রাইফেল । ময়না বুড়ি কিছু বলার আগেই রাজা বলে ফেলল, ‘কি জন্য এসেছিস বুড়ি? ঘুম নেই তোর? রাইফেল দেখে তোর ভয় হয় না? (এই বলে রাইফেল তাক করল বুড়ির দিকে) মারব না কিরে! সারা দুনিয়া তোর ছেলের রাইফেল কে না ভয় পায়, আর তুই ভয় পাস না বুড়ি? তিন পরদিন সকালে ময়না বুড়ির কুঁড়েঘরের পেছনে কিশোরী মেয়েটির ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে রইল। তার সমস্ত শরীরে পুরুষ পশুর জ্বলন্ত দাগ জ্বলজ্বল করছে, যেন কামুড়ে কামুড়ে কেটে মেয়েটিকে কুটিকুটি করা হয়েছে। ছোপ ছোপ রক্তে রঞ্জিত মুখটা যেন এক পৃথিবীর দুঃখ জানিয়ে ছেড়ে গেছে তার দুরন্ত ইঞ্জিন। এ দুঃখের ঘনত্ব মাপার মতো যন্ত্র এখনো আবিষ্কার করেনি আমাদের পৃথিবী। সমবেত মানুষের কণ্ঠস্বর ভেসে যাচ্ছে আত্মার গতিতে। পাপের গন্ধে ফুলে উঠছিল তাদের ফুসফুস। এই গন্ধ যেন দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে মানুষের অস্তিত্বকে। অস্বীকার করে মানুষের বন্ধন। দুঃসংবাদ বাতাসের আগেই ছুটলো মুহ‚তের্র মধ্যেই এই খবর ছড়িয়ে পড়ল সারা দেশে। সংবাদ টিভি চ্যানেলে ফলাও করে প্রচার করা হলো এই মমর্ স্পশর্ খবর। কিছুক্ষণ পর চাটাইয়ে মুড়িয়ে মেয়েটির লাশ নিয়ে গেল থানার পুলিশরা। উৎসুক মানুষের সামনে সাংবাদিকদের মাইক্রোফোন নড়েচড়ে উঠল, কথা বললো ক্যামেরা। জীবনের সব সুখ মরে গেল জননীর। অধিক শোকে পাথর মূতির্ ক্লান্ত কণ্ঠে ‘অঁাচল তুলে বিচার চাইলো দেশ ও মানুষের কাছে’। বনের গভীরে যেখানে কুকুর ও যায় না ভয়ে। মাঝে মধ্যে অচেনা পাখির ডানার শব্দে নড়েচড়ে উঠে গাছের পাতা, আর তার ফঁাক দিয়ে গড়িয়ে পরে সামান্য আলোর ঝিলিক। দিনের বেলায় এই জঙ্গলটিকে সবসময় সন্ধ্যা মনে হলেও, রাতে মনে হয় ভয়ঙ্কর সমুদ্র। সমুদ্রের সেই ঢেউ সেই হুঙ্কারে শনশন নিরবতায় ময়না বুড়ির বুক চিড়ে বয়ে যায় দুফেঁাটা রক্তজল। এখানেই মাটির নিচে গুহা বানিয়ে আস্থানা গড়েছেন রাজা । অপরাধ করে এখানেই সম্ভবত সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে আশ্রয় নেন রাজা। কিন্তু এখন প্রাণভয়ে একমাত্র রাজ সাক্ষী ময়না বুড়িকেও এখানে আটকে রেখেছেন রাজা। সন্তানের অমানবিক ব্যবহার আর পৈশাচিক অত্যাচারে ময়না বুড়ির মুখে আতর্ নিস্তব্ধ মেঘের পাহাড় জমেছে। আতঙ্কে ঘেন্নায় উনুনের জলের মতো ফুটছে তার ক্ষয়ে যাওয়া হৃদপিÐটা। ভয়ঙ্কর ভয় আর হতাশায় তার ঠেঁাট কেঁপে উঠলেও কথা বলার শক্তি নেই ময়না বুড়ির। দুদিন ধরে গুহায় একটু জল ও দেইনি রাজা। পানি চাইলে অসভ্য জানোয়ারটা এনে দিয়েছে মদ । ‘এটাই পানি ভেবে খা বুড়ি’ কুকুরে মুখ দেয়া জল কে খেতে চায় বলুন । দুঃখ পরিতাপ আর উদরের লজ্জায় ময়না বুড়ির তৃষ্ণা খেয়ে ফেলে তৃষ্ণায়। আজ গ্রামে এক মেয়ের বিয়ে। রাজা মেয়ের বাবার কাছে তিন লাখ টাকা চঁাদা চেয়েছেন। কিন্তু মেয়ের বাবা দরিদ্র মানুষ, তাই টাকা দিতে অপারগ। তাই রাজা আজ রাতে এক নববধূকে তুলে আনতে যাচ্ছেন। যাওয়ার প্রাক্কালে ময়না বুড়িকে রাজা বলে গেলেন। ‘ঠিকমতো থাকিস বুড়ি, নইলে কিন্তু খালাস করে দেব,’ এই বলে দলবল নিয়ে চলে যান রাজা। ময়না বুড়িকে শক্ত করে মাটির গুহার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে গেছেন রাজা। এই গভীর জঙ্গলে তার কান্না যেন প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে তার কাছেই। পাতার শব্দেরা সমুদ্রের মতোই ঢেউ খেলে। একমাত্র মহান খোদা ছাড়া আর কেউ নেই এখানে, যে তাকে সাহায্য করতে পারে। অসহায় ময়না বুড়ি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানায় । ‘হে খোদা তুমি আমাকে রক্ষা করো’ ‘এই উদর থেকে যে জানোয়ারের জন্ম দিয়েছো তার থেকে মানুষকে হেফাজত করো’ ‘অথবা শয়তান সন্তানের অভিশপ্ত বুলেটে আমাকেও হত্যা করো খোদা আমাকে হত্যা করো’। চার উঁচু বৃক্ষেরা আনন্দ বৃষ্টির গান ধরেছে , পাতায় পাতায় জমানো ক্লোরোফিল ছেয়ে নিঃশ্বাস নিচ্ছে প্রাকৃত জীবনের দানবিক শোক। অশুভের বিরুদ্ধে সত্যের সংগ্রাম মেঘেদের উপরে ওড়ে যাচ্ছে চিল । একের পর এক মাটি স্পশর্ করে আবার আকাশে উঠে যাচ্ছে বৃক্ষের উঁচু মাথা । কয?েকটা আবার চুমো খেতে হেলে পড়ছে ময়না বুড়ির উপর। কিন্তু আজ ময়না বুড়ির মনে কোন ভয় নেই । নিশ্চিত মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে মানুষ যেভাবে উপেক্ষা করে জীবন ছাড়িয়ে যায় মৃত্যুর অলীক আধিপত্যকে তেমনই পাষাণ পাথরে পরিনিত ময়না বুড়ির মন। অপেক্ষা আর দুরত্বের দৃষ্টিতে দপদপ জ্বলছে প্রতিহিংসার আগুন । বুলেটগুলো ছুটে যাওয়ার প্রত্যয়ে নিচ্ছে আগুন প্রস্তুতি । ট্রিগারে চরে আছে দুবের্লর ক্ষতবিক্ষত শাহাদত আঙুল। হয়তো মরবো নয়তো মারবো এমন একটি সংকল্পে আকাশ ও মাটি মিশে যাচ্ছে একে অপরের সাথে। আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানে অকৃত্রিম সহমমির্তা ও গভের্র ভালোবাসা ভুলে অশ্রুর নদী তুলেছেন অনাত্মীয়তার দেয়াল। জীবন ও বেদনার নিমর্ম সঙ্গিন তুলে দাঁড়িয়েছেন সত্যবতী সহজ বীরব্রতী বীরা। হঠাৎ কান্নার শব্দ শোনা গেলো । ময়না বুড়ির অপেক্ষার হলো অবসান। নিভের্য় অসঙ্কোচে এগিয়ে গেলো ময়না বুড়ি। লাল টুকটুকে একটা মেয়ে চুলের মুঠি ধরে টেনে আনছে হারামজাদা। মেয়েটা হাঁটছে একটু একটু করে । নিজের অনিচ্ছা থাকতেও যেভাবে কেউ হেঁটে যায় ফাঁসির মঞ্চের দিকে । বৃষ্টির জলে ভেসে যাচ্ছে তার পায়ের আলতা? তার শাড়ির সুব্রত রঙ তার নব জীবনের সবটুকু আনন্দ হাসি জবাই করা হচ্ছে শনশন মেঘের ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর গজের্ন। ময়না বুড়ি চোখ মুছে, কি মুছে! বৃষ্টির জল না নয়নের জল তা বুঝতে পারে না । ‘দাঁড়া জালিমের দল আর এক পা সামনে যাবে না’ আর এই নিষ্পাপ মেয়েটিকে এখনই ছাড়’! এই বলে রাইফেল তাকে করে আর ঠাঃ ঠাঃ ট্রিগার চাপে ময়না বুড়ি। সাথে সাথেই রাজার একজন সাগরেদ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। রাজা নববধূকে ছেড়ে দেয় এবং ময়না বুড়ির দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। ময়না বুড়ি আবারও সাবধান করেন তাকে ‘ওখানেই দাঁড়া কুলাঙ্গার আর মেয়েটিকে আমার কাছে আসতে দে’। রাজা বাধ্যগত সন্তানের মতো তাই করেন। নিষ্ঠুরতার শেষ নদী যেন শেষ হয় না। গভীর বিদ্রোহী ঝরে পড়েছে পৃথিবী কাঁপানো বজ্রপাত, মেঘে মেঘে যুদ্ধের দামামা হুঙ্কার, সমস্ত নক্ষত্রের বিগ্রহ ক্ষোভ । কম্পিত হৃদস্পন্দনে ঝলসিত মুখ নিয়ে মেয়েটি চলে আসে ময়না বুড়ির কাছে। ময়না বুড়ি মেয়েটিকে নিয়ে হাঁটতে থাকে সামনের দিকে। কিন্তু রাজা তার গুহায় ঢুকে দ্রæত একটি রিভলভার নিয়ে বের হয় এবং ময়না বুড়ির পিছু পিছু ছুটতে থাকে । ময়না বুড়ি পেছনে তাকায় রাইফেল তাক করে চেপে ধরে ট্রিগার। কিন্তু তার রাইফেলে যে বুলেট ছিলো তা তিনি প্রথম চাপেই সব শেষ করেছেন । বুলেট বের হয় না রাজার মুখ হাসি বের হয়। মূহূতের্ই কাতর ও মলিন হয়ে যায় ময়না বুড়ির মুখ। রিভলভার তাক করে এগিয়ে আসছেন নিষ্ঠুর রাজা । এবার নিশ্চিত মৃত্যু বুঝতে পারে ময়না বুড়ি। নববধূটি ময়না বুড়ির দিকে তাকায় ময়না বুড়ি মেয়েটির মেহেদি রাঙা মুখটি দেখে দুজনেই হাসে । সে হাসির অথর্ কি কেউ জানে । রাজা হাসতে হাসতে এগিয়ে আসছে হাঃহাঃ রাজার হাসির শব্দ বজ্রপাতের শব্দে মিশে লাল হয়ে যায়। তারা দুজনেই চোখ বন্ধ করে নিজেদের সমপর্ণ করেন অমোঘ মৃত্যুর কাছে। হঠাৎ ভয়ঙ্কর শব্দে তারা দুজনেই পড়ে যায় বৃষ্টি ভেজা কাদা মাটিতে । তাদের চোখের পাতা বন্ধ হয়ে আসে । নিস্তেজ হয়ে যায় শরীর। ময়না বুড়ি অবচেতন সে ভাবছে মৃত্যু তুই কতো না সুন্দর । কিন্তু এতো দেরিতে কেন তোর আলিঙ্গন। হঠাৎ ময়না বুড়ির চোখ ঝকমক করে ওঠে ঠাÐা আলো আর সুগন্ধ ভরা এক স্পশের্ । ধীরে ধীরে চোখ খুলেন ময়না বুড়ি, ময়না বুড়ি ভাবে এসেছি পরপারে । একটা দুরন্ত আগ্রহ তাকে তাড়া করে। কিন্তু চোখ খুলে সে অবাক হয় বিস্মিত হয় , যখন দেখে মেয়েটা তার কাছে বসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। একটু সামনেই পড়ে আছে শুয়োরটার লাশ।