গল্প

বঁাশফুল মনিজা হাবীব

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শীতকাল না হলেও ভোরের হিম বাতাসে খাইরুলের ঘুমটা যেন আরও গভীর হয়। গতরাতে আকাশ ভাইঙ্গা বৃষ্টি নামছে। খালি বৃষ্টি না সাথে বজ্রপাতও হইছে। আল্লাহ জানে কোনখানে কার কোন বিপদ হইছে। গতবার সরদার বাড়ির পুরনো আমগাছটা ঝড়ে পড়ে গেছে। নদীর ক‚লে মোল্লা বাড়ির তিন পুরুষের বটগাছটি ছিল। ঝড়ে বড় বড় ডাল ভেঙে ন্যাড়া মাথায় কোন রকমে ঠায় দঁাড়িয়ে আছে গাছটি। এবার কার কি ক্ষতি হইছে, ঘরে বসে জানা যাবে না। কিন্তু ঘর থেকে এখন বাইরেও যেতে মন চায় না। ঝড়-বৃষ্টি হলেই নাকি ভালো! জমি উবর্র হয়। ঘরে ফসল ওঠে বেশি। তয় এতকিছু এখন খাইরুলের মাথায় ঢোকে না। আসল কথা সময় নেই। তার মাথায় কেবল একটাই চিন্তা-বৌ। নতুন বৌ রোমেলার গায়ের গন্ধ যেন খাইরুলকে নেশা ধরিয়ে দেয়। মনে হয় অনন্তকাল যদি এমন কইরা ঘুমাইয়া কাটানো যাইত! বৌ ছাড়া তার মাথায় আর কিছু ঢোকে না। কাজে যেতে ইচ্ছে করে না। এই ক’দিনে মা-বাবার কাছে কম কথা শোনেনি। আড়ালে-আবডালে পাড়া প্রতিবেশিরা ওকে নিয়ে হাসাহাসি করে-এসবই জানে খাইরুল। তাতে তার কিছু যায় আসে না। বৌ তো তারই। খাইরুল বৌকে ছেড়ে দু’দÐ থাকতে পারে না। পরের জমিতে নিড়ানির কাজ করতে গেলেও মাঝখানে সকলের অলক্ষ্যে এক ফঁাকে বৌ-এর মুখ দেখতে হবেই। নতুন বৌ বলে কথা! জিড়েনতলা, গাংনি, বিশ্বেসডাংগী, ঘোষগাতী, রাজপাট, গাওলাসহ চেনাজানা কোনো গ্রাম ধলুমিয়া বাকি রাখেনি মেয়ে দেখতে। অথচ পাশের গ্রাম রসূনপুরের নওশের আলীর মেয়ে রোমেলাকে দেখে ছেলে খাইরুলের এক কথা বিয়ে করলে ওই রুমি। মানে রোমেলা। তয় ওদের কথা-বাতার্ খুব একটা ভালো লাগে না। কেমন জানি বরিশালের মানুষের মতো কথা কয়। সেই কোনকালে বরিশাল ছেড়ে এই অঞ্চলে বসবাস, তবু সেই ভাষা যেন রক্তে মিশে আছে। এ ছাড়া দেনা-পাওনায় মিল না হলেও ছেলের কথা ভেবে ধলুমিয়া শেষ পযর্ন্ত বিয়েতে মত দেয়। কিন্তু বিয়ের পর ছেলের মতিগতি দেখে মেজাজ একেবারে মাথায় উঠে যায়। আরে ব্যাটা আমি কি তোর মারে বিয়ে করি নাই। তখন আমার কি বয়স? বেশি হলে বাইশ কি তেইশ। তাই বলে দিন-রাত বৌ নিয়ে কি এমন পাগলামি করছি। ছেলে বৌ পাইয়া যেন লাজ-সরমের মাথা খাইছে। আশপাশের মানুষও মুখ টিপে হাসে, খাইরুলের কাÐ দেখে। এমন বৌ পাগল জামাই! ধলুমিয়া লজ্জায় ছেলেরে কিছু বলতে পারে না। রাগ দেখায় বৌয়ের ওপর। ওই বেডি তোর ছেলে কি নবাব বাহাদুর হইছে? দঁাতে রইদ লাগায়া ঘুমায়। এই ভাবে চললে, নবাবিও বেশিদিন চলতো না। যা এহনি তোর পোলারে ডাক। নাইলে ঘুম কিন্তুক আইজ আমি বাইর কইরা ছাড়–ম। আমার হইছে যতজ্বালা-বলে কুলসুম বিবি ছেলেকে ডাকতে যায়। ছেলের ঘরের সামনে গিয়ে রাগ চলে যায় বৌয়ের ওপর-বউ, ও বউ হুনছো। কেমন বেডি তুমি। বেলা দুফুর জামাই নিয়ে বইসা রইছো। কাম-কাইজ নাই। লাজ শরমের মাথা খাইছো। আর কত ঘুমাইবা। বাইর অও। কথার ধরনে মনে হয় রোমেলাই যেন তার ছেলেকে আটকে রেখেছে ঘরে। আহা করো কি? ছাড় না। তোমার মা চিক্করও পাড়তাছে। একটু পর তোমার বাপেও শুরু করবে। আর যত দোষ, সব তো আমার। নিজের শরীর থেকে স্বামীর হাত সরিয়ে দেয় রোমেলা। বউ যত সরায় দেয় খাইরুল তত জাপটে ধরে। নাহ, তোরে ছাড়–ম না। যার যা খুশি কউক। বউতো আমার। খাইরুল দুই হাত দিয়ে জাপটে ধরে রোমেলাকে। যেন পিশে মারতে চায়। স¦ামীর বুকের মধ্যে হঁাসফঁাস করে ওঠে রোমেলা। ওরে আমার বউওয়ালারে-খাইরুলকে ঠেস মারে রোমেলা। ছাড়তো তুমি। খাইরুলকে ধাক্কা মেরে উঠে দঁাড়ায়। ধাক্কা সামলাতে না পেরে বিছানার পাশের কাঠের টুলে গুঁতা খায় খাইরুল। ব্যথায় মেজাজ গরম হয়ে যায়, বেডি রাইতকালে তোরে পাই। তহন বুজামু মজা। টের পাবি কত ধানে কত চাইল। রোমেলা বাইরে এসেই রান্না ঘরে ঢোকে। আরে কর কি, কর কি বলে দৌড়ে আসে কুলসুম বিবি। গোসল না কইরা তুমি এই ঘরে ঢুকলা ক্যান? ছি ছি বউ, তোমার কি কোনো বাচ-বিচার নাই। রোমেলা হতচকিত হয়ে যায়। ক্যান মা কি হইছে? আবার জিগাও কি হইছে? ফরজ গোসল না কইরা রান্দা ঘরে ঢুকলা কোন আক্কেলে। যাও, গোসলে যাও। সব সময় সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া যায় না। রোমেলা শাশুড়িকে বলতে পারে না ফরজ গোসল দেয়ার মতো কোনো কিছুই গতরাতে হয়নি। স্বামীর কাছে থাকলেই ফরজ গোসল দিতে হবে? তার শাশুড়ী কি প্রতিদিন এইটা করে। সেও তো রাতে স্বামীর কাছেই ঘুমায়। কথাটা ঠেঁাটে এনেও আবার ফিরিয়ে নিয়ে যায় রোমেলা। শাশুড়ি মুরব্বি বলে কথা! অনিচ্ছা সত্তে¡ও রোমেলা রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। বেলা বাড়তে থাকে। উঠানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিরিষের শুকনা ডালগুলো গুছিয়ে অঁাটি বঁাধতে থাকে রোমেলা। বষার্কালে এগুলো খুব কাজ দেবে। তার মাও একাজই করত। বৃষ্টির দিনে শুকনা কাঠ-খড়ির বড় আকাল হয়। রান্না করতে গেলে চোখের জল-নাকের জল এক হয়ে যায়। তয় এই কাঠ গুছিয়ে রাখার কথা মনে হলেই একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে যায় রোমেলার। কিছুতেই ভুলতে পারে না। এত বছরেও যেন ঘটনাটা বুকের মধ্যে জ্বল জ্বল করে। সেদিনও ছিল ফাল্গুনের শেষ বিকেল। তখন রোমেলার বয়স খুব বেশি হলে টেনে-টুনে চৌদ্দ। জয়গুণ বিবি মেয়েকে বলেছিলেন বাড়ির সামনের ক্ষেত থেকে শুকনা পাটখড়িগুলো আনতে। রোমেলা মায়ের কথামতো ক্ষেতে গেলে আচমকা পেছন থেকে ঝঁাপিয়ে পড়ে তরফদারের ছেলে আলকাস। বাবারে মারে বলে চিৎকার দিলে ছুটে আসে জয়গুন বিবি। এসে মেয়েকে উদ্ধার করে। নালিশও দেয় মাত্তবরের কাছে। বিচারে আলকাসকে জরিমানা করা হয়। নাকে খত দেয়, আর কোনোদিন সে আর কারো সাথেই এমন কাজ করবে না। রোমেলা কেমন জানি অন্য মনষ্ক হয়ে যায়। দূর থেকে ডাক পাড়ে কুলসুম বিবি- ও বউ রইদের মধ্যে বইসা ধ্যান কর ক্যা। ঘরে ওঠ। অসময়ে জ্বরজারি বাদাইও না। হ মা যাই- বলেই আটি বঁাধতে থাকে রোমেলা। তাছাড়া দুনিয়ার কাজ পড়ে আছে। ওদিকে শশুর-আর তার ছেলের আসার সময় হয়ে যাচ্ছে। এসে কোনো রকমে দুইটা মুখে দিয়েই আবার কাজে চলে যাবে। সকাল গড়িয়ে দুপুর। সন্ধ্যায় মুরগিগুলোকে ঘরে ঢুকিয়ে রোমেলা চলে যায় রাতের রান্নার জোগাড় করতে। শাশুড়ি বউয়ের ওপর এবার রেগে যায়, ও বউ তোমার কি কোনো চিন্তা-ভাবনা নাই। স্বামী-পুতের কোনো খবর নাই। তুমি আবার গেছ রান্দা করতে। দুফুরের খাওনই তো পইড়া রইছে। আবার কি রানবা। রোমেলা কিছু বলতে যাবে, এমন সময় চেঁচামেচির আওয়াজ শোনা যায়। আরে একটু ভালো কইরা ধরো- করিম চাচার গলা মনে হয়। আস্তে, আস্তে। আরে ওইডা বলদ নাকি, বুড়া মানুষটারে একটু ভালো কইরা ধরো। পঁাচ-ছয়জন মিলে ধলু মিয়াকে খাটের ওপর শুইয়ে দেয়। কুলসুম বিবি চিৎকার দিয়ে কাইন্দা পড়েÑ ওরে আমার একি হলোরে। ও বাজান তর বাপের কি হইছে। খাইরুল মাকে বোঝায়, তেমন কিছু না। জমিতে কাজ করার সময় বাজান মাথা ঘুইরা পড়ছিল। ডাক্তার দেখাইতে গিয়া দেরি হইছে। কুলসুম বিবি কঁাদতে কঁাদতে বলে, দুফুরেও তোরা কিছু খাও নাই। সারাডা দিন না খাওয়া! না মা আইজ রইস চাচা সগলডেরে দুফুরে ভালো খাওন দিছে। গরুর গোসতো দিয়া প্যাট ভইরা ভাত খাইছি। বাজানও ঠিকমতো খাইছে। তয় সঁাঝের বেলা আওনের আগে হঠাৎ বাজানের যে কি হইলো? যাউগগা। ডাক্তার কইছে চিন্তার কিছু নাই। কয়দিন শুইয়া বিশ্রাম নিলে ঠিক হইয়া যাবে। তুমি যাও, করিম চাচারে কিছু খাইতে দাও। আরে মিয়া কি কও তুমি, আমি কি খাইবার আইছি- কিছুটা বিরক্ত হয় করিম উদ্দিন। নাহ চাচা, ঠিক তা না। তয় আপনেরও তো বয়স হইছে। বেশি সময় খালিপেটে থাকা ঠিক না। চোখ মুছে কুলসুম বিবি চলে যায় গুড়-মুড়ি আনতে। বলে, না করিম বাই, আপনি আসছেনও অনেকদিন পরে। খালি মুখে যাইবার পারবেন না। রাতে খাইয়া যাইতে হবে। রাত গভীর হয়। অনেকদিন পর করিম উদ্দিন পেট ভইরা ভাত খায়। কতকাল পর রয়না মাছ দিয়া ভাত খাইল। সাথে ছিল পিপুল পাতা। রোমেলাকে মন ভরে দোয়া করে এমন স¦াদের রান্দা, সবাই রানতে পারে না। আন্ডা-বাচ্চায় যেন ঘর ভরে যায়। রোমেলা শরমে মুখ ঢাকে। শাশুড়িও সায় দেয়, হ করিম বাই, সেই দোয়াই কর। আল্লাহ তো খাইরুল ছাড়া আমারে আর কোনো পোলাপান দিল না। আমার খাইরুলের যেন ঘর বরা পোলা মাইয়া হয়। বাচ্চা-কাচ্চা ছাড়া ঘর অন্ধকার। রাতে সবার খাওয়া শেষ হলে রান্না ঘরের কাজ গুছিয়ে রোমেলা নিজের ঘরে আসে। এসে দেখে খাইরুল নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। রোমেলা অবাক হয়ে যায়! এত তাড়াতাড়ি মানুষ এভাবে ঘুমাতে পারে? বিছানায় গেলেই ঘুম আসে? নিজের মনেই বলে, বাবারে বাবা, এত ঘুম যে কেমনে ঘুমায়? আয়নার সামনে বসে চুল খুলে বঁাধতে বসে। চোখে কাজল দেয়। আলতা দিয়ে ঠেঁাট লাল করে। বিয়ের আগেও রোমেলা এমনটা করত। রাতে তার খুব ইচ্ছে করে সাজতে। তবে তখন কেউ দেখার ছিল না। এখন সাজলে খাইরুল একভাবে বউয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। পলক ফেলে না। রোমেলার তখন খুব ভালো লাগে। ভালোলাগায় মরে যেতে ইচ্ছে করে। কেউ একজন তাকে এত ভালোবাসে, এত খেয়াল করে। রোমেলা শিহরিত হয়। হঠাৎ পেছন থেকে খাইরুল জাপটে ধরে- ওই কার জন্য এত রাতে সাজ তুমি। রোমেলা অবাক হয়, আরে তুমি ঘুমাও নাই। হেসে ফেলে খাইরুল, ভান ধরছি। দেখতে ছিলাম তুমি কি কর? স্বামীর কথায় রোমেলাও হেসে ফেলে। খাইরুলের বুকে রোমেলা মাথা রেখে বলে, তুমি খুব খারাপ। মাথার মধ্যে খালি বদবুদ্ধি। খাইরুল বলে, বঁাশফুল মনে আছে আইজ করিম চাচায় তোমারে কি দোয়া করছে। খাইরুল মাঝে মাঝে রোমেলাকে আদর করে বঁাশফুল ডাকে। দুনিয়াতে এতকিছু থাকতে কেন যে বউকে বঁাশফুল ডাকে, একমাত্র তা খাইরুলই জানে। হ, মনে আছে কি বলছে। তোমার মতো ডাকাতের হাতে পড়ছি না, আল্লাহ জানে কপালে কি আছে। তয় তুমি যে আমারে বঁাশফুল কইয়া ডাক, এই ফুলের পরিণতি তুমি জান? খাইরুল জিজ্ঞাসা করে, তার মানে? হ, বঁাশগাছে ফুল ধরলেই বঁাশগাছ মারা যায়। হ, একটা বঁাশ বাগানে একসাথে ফুল ধরে। আবার একসাথেই সেখানকার সব গাছই মারা যায়। কারণ কি কেউ কইতে পারে না। তয় আমার দাদাজান কিছু কিছু কবিরাজির কাজও জানত। দাদায় কইত, ফুল আর বীজ বানাইতে গিয়া গাছের নাকি খুব শক্তি খরচ হয়, তাই গাছগুলা মইরা যায়। আবার এমনও হইতে পারে নতুন গাছগুলাকে জায়গা দিতে মা গাছ মইরা যায়। জানো, আমার খুব মা হইতে ইচ্ছা করে। তয় ক্যান জানি না খুব ডরও লাগে। আমার সব সময় মনে হয় বাচ্চা হইতে গিয়া মইরা যাব। দূর পাগলী বলে রোমেলাকে সান্ত¡না দেয়, আরে এগুলা তোমার মনের ভুল। আদরে-সোহাগে ওরা মেতে ওঠে আদিমতম খেলায়। গ্রামে তেমন কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিক নেই। তবে আছে মন্দের ভালো উজান কবিরাজ। গভর্ধারণের আড়াই মাস পর থেকে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। কুলসুম বিবির এক কথা প্রথম প্রথম পোয়াতী হলে এরকম একটু হতেই পারে। ভয়ের কিছু নেই। রোমেলাও শাশুড়িকে তার সমস্যার কথা সবটা জানায় না। রোমেলার বাবা-মা মেয়েকে নিতে চাইলেও কুলসুম বিবি বউকে বাপের বাড়ি যেতে দেবে না। তার নাতি তার কাছে থাকবে। খাইরুলও মাকে রাজি করাতে পারে না। মনের দুঃখ মনেই থাকে। খাইরুলের প্রতি অপরিসীম অভিমান জমে। কেন সে মাকে রাজি করাতে পারল না। সবচেয়ে বড় কথা এ গ্রামে ভালো কোনো ডাক্তার নেই। একদিন রেগে গিয়ে রোমেলা বলেই ফেলে, আমি মরলেই শান্তি। কে জানে, বিধাতা আড়ালে থেকে হয়তো বলেছিলেন, তবে তাই হোক। রোমেলা নেই। রেখে গেছে পুত্র সন্তান জাহিদুলকে। গ্রামে দু’চারটা বিয়ে কোনো বিষয় না। কিন্তু খাইরুল পারেনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে। খাইরুলের কেবলই মনে হয় রোমেলা তার ওপর অভিমান করেই চলে গেছে। আবার ভাবে খাইরুল ক্যান তাকে বঁাশফুল বলে ডাকতো। বঁাশগাছের পরিণতির কথা একদিন রোমেলা তাকে বলেও ছিল। কে জানে আসল সত্য কি? সৃষ্টিকতার্ এ জগতে এত রহস্য রেখেছেন, এসব বোঝা ভার। তাছাড়া তার সৃষ্টিতে খাইরুল এমন কেউ না, যার কষ্ট বা যন্ত্রণায় সেই ওপরওয়ালার কিছু যায় আসে। মাঝে মাঝে ফ্যাল ফ্যাল করে জাহিদুলের মুখের দিকে চেয়ে থাকে, আর মনে পড়ে রোমেলার সেই কথা নতুন গাছরে জায়গা দিতে মা গাছ মরে যায়। তাহলে জাহিদুলের জন্যই কি রোমেলার মৃত্যু? এসব ভাবলে খাইরুলের সবকিছু আওলা আওলা লাগে। বিড়বিড় করে বলে, কাজটা ঠিক হয় নাই বঁাশফুল। ঠিক হয় নাই।