ইবনে সালেহ মুনতাসিরের কবিতায় উন্নয়ন ভাবনা

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ফেরদৌস হাসান রাসেল
গত বছর (২০১৮) কবি ইবনে সালেহ মুনতাসির অন্যতম দুটি কাব্যগ্রন্থ ‘ব্যবসা, বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘অথর্নীতি, অথর্প্রবাহ ও অথর্পাচার’ প্রকাশিত হয়েছে। এই কবি অনেকদিন থেকে কাব্যচচার্য় নিবেদিত। তিনি সমাজমনস্ক এবং দেশের উন্নয়ন ভাবনায় প্রজ্ঞাবান। তিনি জানেন কীভাবে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায়। তিনি বুঝতে পারেন ব্যবসা-বাণিজ্যের গতিপ্রকৃতি। পেশাজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি সারা বিশ্বের অথৈর্নতিক গতিধারা সম্পকের্ও অবগত আছেন। তঁার এই দুটি কাব্যগ্রন্থে ছোট-বড় মিলিয়ে সত্তরটি কবিতায় তিনি রাজনীতি সচেতন ও প্রগতিমনস্ক। তিনি মানবতাবাদী কবিও। এই শতাব্দীর বদলে যাওয়া পৃথিবীতে দঁাড়িয়ে তিনি তার কবিতায় অথর্নীতি নিয়ে যেভাবে বাক্যের পর বাক্য, চরণের পর চরণ সাজিয়েছেন তা অভ‚তপূবর্। তার এসব কবিতায় আছে শাণিত বাগভঙ্গি, সম্পূণর্ নতুন ধরনের উপমা আর চিত্রকল্প, নতুন দৃষ্টিকোণ যা একইসঙ্গে স্বাদেশিক ও আন্তজাির্তক। একান্ত বাস্তবজীবনের চিত্রণের অনুপুঙ্খতায়, উৎপীড়িতের প্রতি গভীর সহমমির্তা ও তাদের জন্য আশার সঞ্চয়ে সত্যিই এ কবি সমৃদ্ধ। ইবনে সালেহ মুনতাসিরের মতে, ব্যবসার বিস্তার ঘটে অথৈর্নতিক তৎপরতার কারণে। ব্যবসা, কমর্সংস্থান, নিরাপদ বিনিয়োগ অথর্নীতির চাকাকে সচল রাখে। ফলে অথৈর্নতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। অথৈর্নতিক উন্নয়নে সুশাসন ফিরে আসে, সবোর্পরি দেশের সাবির্ক উন্নতি সাধিত হয়। যদি বিনিয়োগ, উৎপাদন বৃদ্ধি পায় তাহলে মানব জীবনে আসে সুখ ও শান্তি। ‘ব্যবসা বাণিজ্যের আইন’ কবিতাটিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন এবং সেই আইন বাস্তবায়নের কথা প্রতিফলিত হয়েছে। ধরা-বাধা বিধি নিষেধের মধ্যে না থাকলে সবকিছুতে শৃঙ্খলা থাকে না। তাই ব্যবসা-বাণিজ্যে আইন থাকলে ধান্দাবাজি, ফঁাকি, চুরি প্রতিরোধ সম্ভব। কবির মতে, ব্যবসা-বাণিজ্যে আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে তথা ব্যবসার উন্নতি সাধনে সঠিক হিসাব ব্যবস্থার প্রায়োগিক ব্যবস্থার জন্য আইন থাকা অতীব জরুরি। কবির মতে, গামের্ন্টশিল্পে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে গুরুত্বপূণর্ আসনে আসীন। গামের্ন্টশিল্পের পর এবার আসছে চামড়াশিল্প। চামড়াশিল্প খুব শিগগিরই দেশে এবং দেশের বাইরে ছড়িয়ে পড়বে। এ কথাই কবিতায় উঠে এসেছে। যেমনÑ ‘গামের্ন্টসের পরে আসছে চামড়া পাদুকার জয়/আমরা করবো বিশ্বজয় জেনে রেখো নিশ্চয়।’ ‘ইউনি কারেন্সি ব্যবস্থার প্রবতর্ন অতীব জরুরি প্রয়োজন’ কবিতার থিম হলো বিশ্বায়নের যুগে সবকিছুই অতি দ্রæত বিশ্বায়ন হচ্ছে ফলে সবকিছুরই দ্রæত পরিবতর্ন-বিবতর্ন হচ্ছে। পরিবতের্নর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববাসীর ধমর্ মতাদশর্ মতপাথর্ক্য শিক্ষা সংস্কৃতি ব্যবসা-বাণিজ্য লেনদেন নীতি-নৈতিকতা অভ্যাসের দ্রæত পরিবতর্ন সম্ভব না হওয়ার কারণে সারা বিশ্বে ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ সংশয় ভয়-ভীতি, আতংক, আশঙ্কা, হতাশা বৃদ্ধি পেয়েছে। বহু মুদ্রা ব্যবস্থার অসামঞ্জস্যতা, জাতীয়তাবাদের পরিবতের্ সাবর্জনীনতা, সুষম সুন্দর সঠিক নিরপেক্ষ নেতৃত্বের অভাব ধমীর্য় গোড়ামি, আধিপত্যবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, অথৈর্নতিক সামাজিক আগ্রাসন, বণর্বাদ ইত্যাদির কারণে বিশ্ব মহামন্দা, স্নায়ুযুদ্ধ আগ্রাসন ঝড় ইত্যাদির কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বিধায় অতীব জরুরি ভিত্তিতে ইউনি কারেন্সি ব্যবস্থার প্রবতর্ন এবং বিশ্ব রিজাভর্ ব্যাংক স্থাপন প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। গণতান্ত্রিক স্থিতাবস্থা থেকে সুবিধাতন্ত্রে অধঃপতন থেকে সত্যিকার গণতান্ত্রিক প্লাটফরমে রূপায়ণ সমীচীন এবং অত্যাবশ্যক বলে প্রতীয়মান হয় বলে কবির অভিমত। অন্যদিকে অথির্বজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, সবোর্পরি ব্যবসা ক্ষেত্রে হিসাবের ব্যাপার জানা অতীব জরুরি। কম দামে বিক্রি করার বুদ্ধিমত্তা, সেই সঙ্গে জমা-খরচ, আয়-ব্যয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। এটিও তার কবিতায় ফুটে উঠেছে। ‘অথর্নীতি’ কবিতায় কবি লিখেছেন, সবকিছুর মূলেই হলো অথর্নীতি। অথর্নীতি ঠিক তো পুরো জাতি ঠিক। অথর্নীতির উপর সবকিছু নিভর্রশীল সে বিষয়েই কবি এই কবিতায় আলোকপাত করেছেন। ‘ঠঁাই নাই ঠঁাই নাই ছোট এই স্বপ্নধারা’য় সকল দেশের রানীখ্যাত আমাদের সোনার বাংলার কথা আছে। এই দেশে বিশ্বের অনেক দেশই বিনিয়োগ করে অথচ বহিবিের্শ্ব আমাদের বিনিয়োগ যৎসামান্য। তাই বহিবিের্শ্ব আমাদের বিনিয়োগ বাজারে ঠঁাই দরকার। এটা অসম্ভব কিছু নয়। যা কবিতাটিতে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। অন্যদিকে ‘ব্যবসা-সুদ’ কবিতায় সুদকে সব ধমের্ হারাম করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যবসাকে মযার্দাকর পেশা হিসেবে গণ্য করা হয়। সুদকে বজর্ন করে বরং ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবনযাপন করার কথাই কবিতাটিতে ফুটে উঠেছে। ‘শেয়ার ব্যবসা’ কবিতায় কবি ইবনে সালেহ মুনতাসির শেয়ার ব্যবসাকে অত্যন্ত কৌশলী ব্যবসা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যা পুরোটা ভাগ্যের ওপর নিভর্রশীল। এই ক্ষেত্রে পূণর্ জ্ঞান বা জানাশোনা না থাকলে পড়তে হয় বিপাকে। এই ব্যবসায় রাতারাতি যেমন ধনী হওয়া যায় অন্যদিকে রাতারাতি ফকিরও বনে যাওয়া যায়। মূলত এই কবিতায় এমনটিই প্রতিফলিত। কবি দেশের অথর্নীতি নিয়ে অনেক দিন থেকে চিন্তা করেছেন। দেখেছেন, কখনো কখনো দেশের অথর্নীতিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। এজন্য তিনি কবিতায় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অথৈর্নতিক মন্দার চিত্র রূপায়িত করেছেন। মন্দার ফলে অস্থিরতা, অশান্তি বিরাজ করে সমাজে। দেশের অথর্নীতি সবল রাখতে, বিনিয়োগ, উৎপাদন, নিজের প্রতি আস্থা, ভরসা বাড়াতে হবে। অন্যের ক্ষতি না করে বরং মিলেমিশে দারিদ্র্য হটিয়ে সমৃদ্ধির পথ খুঁজতে হবে। এমনটিই তার কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে। কবি অথর্নীতির সঙ্গে পরিবার ও সমাজ নিয়েও ভেবেছেন। তার মতে, যৌথ পরিবার গুরুত্বপূণর্। ছোট ছোট একক পরিবার না গড়ে বরং যৌথ পরিবারের প্রতি দৃষ্টি দিয়েছেন তিনি। ধার-কজর্ জীবনে সম্মান এবং আত্মমযার্দা বোধকে হ্রাস করে। কজর্ মানবজীবনে অশান্তি, হতাশা ছাড়া পজিটিভ কিছু আনে না। এই বিষয়টিই ‘কজর্’ কবিতায় উঠে এসেছে। কবি ইবনে সালেহ মুনতাসির কবিতায় বিষয়গত বৈচিত্র্য রয়েছে। আলোচ্য ২টি কাব্যের কবিতায় তা লক্ষ্য করা যায়। ‘বাংলাদেশের বেপজা’ তার মধ্যে অন্যতম। বেপজা বাংলার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের গুরুত্বপূণর্ হাতিয়ার। বেপজার মাধ্যমে বিশ্ববাজারে চমৎকার জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। গড়ে উঠেছে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান। বাড়ছে কমর্সংস্থান। সবোর্পরি বিশ্বজুড়ে একটি মযার্দাপূণর্ আসনে অধিষ্ঠিত বাংলাদেশ। যা এই কবিতাটিতে ফুটে উঠেছে। অন্যদিকে ‘বিশ্ব পণ্য বাজার’-এ দক্ষতা, আর সক্ষমতায় বিশ্বপণ্য বাজারে নিজেদের জায়গা করে নেয়ার অপার বাসনা প্রতিফলিত। যেমনÑ ‘আমরা করবো জয়, বিশ্ব পণ্য বাজার দখল/আসবে দেশে ভিনদেশীরা, ফেলবে তারা চারদিকে নিঃশ্বাস।’ ‘অথর্নীতির যুদ্ধ’ কবিতায় কবি ১৬ কোটি বাঙালির দৃপ্ত প্রতিজ্ঞার কথা উচ্চারণ করেছেন। অসহায়, বেকারত্ব, ইত্যাদি দূর করে অপার সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি করতে পারি ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে। কবিতাটিতে কবি এমন বিষয়ই তুলে ধরেছেন। ‘হায়রে টাকা পয়সা’ কবিতায় কবি লিখেছেন, অথর্ মানবজীবনকে বিভ্রান্ত করে ফেলে। দিগি¦দিক দিশেহারা করে তোলে। টাকা-পয়সা অথর্পাচার অথর্কড়ির প্রতি লোভাতুর না হয়ে বরং যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকার প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন কবি এই কবিতায়। অথর্ই সকল অনথের্র মূল। অথের্র মোহে অযোগ্য, অদক্ষ ব্যক্তিরা আজ গুরুত্বপূণর্ পদে আসীন হচ্ছেন। কিন্তু যোগ্যরা অথর্ আর তোষামোদির মাধ্যমে উচ্চপদ ও ক্ষমতা দখল করছে। মূলত অথর্ আর ক্ষমতার এমন দশা ‘অথর্ আর ক্ষমতা’ কবিতায় তুলে ধরেছেন। ‘ভিখিরিও লাখপতি হতে চায়’ কবিতায় কবি লিখেছেন, অথের্মাহ সকলেরই আছে। এই অথের্মাহ বা লাখপতি হওয়ার উন্মূল বাসনা মানুষকে প্রতিনিয়ত দৌড়ের ওপর রেখেছে। ক্ষেত্র বিশেষে সবাই কিছু না কিছু পাওয়ার আশায় ব্যস্ত। এই বিষয়টিই কবিতায় ফুটে উঠেছে। জীবনের প্রতিক্ষেত্রেই বিজনেস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর বিজনেস চলে বিজনেসের নিজস্ব গতিতে। আর এ বিষয়টিই ‘বিজনেস’ কবিতাটিতে ফুটে উঠেছে। ইবনে সালেহ মুনতাসিরের মতে, পরিশ্রম সাফল্যের মূল। ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রয়োজন পরিশ্রম। অভিজ্ঞতায় সফলতা আর বুদ্ধিতে আসে প্রসারতা। সব মিলে অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে পরিশ্রম করলেই ধন অথার্ৎ সাফল্য আসবে। ‘পরিশ্রমে ধন আনে’ কবিতায় এটিই প্রতিফলিত। বিশ্বজুড়ে ধনী-গরিবের বৈষম্যের প্রতিচিত্র আমরা প্রতিনিয়ত লক্ষ করছি। বৈষম্য কমানো ছাড়া উন্নতির সোপান হতে পারে না। বরং সাম্যবাদ ও মানবতার মাধ্যমে বিশ্বভ্রাতৃত্ব বজায় থাকবে। আর এ ব্যাপারটাই ‘ধনী গরিবের বৈষম্য’ কবিতাটিতে উঠে এসেছে। কবি ইবনে সালেহ মুনতাসির কবিতায় ‘ব্যবসা বাণিজ্য’ নিয়ে যে স্বতন্ত্র বক্তব্য আছে তার দৃষ্টান্ত রয়েছে কবিতার পর কবিতায়। যেমন, ‘ব্যবসা বাণিজ্য’ কবিতায় লিখেছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নতির অন্যতম সোপান। অনেক সময় কমর্ খুঁজে না পেয়ে কমর্হীনরা লজ্জায় পড়ে। তাদের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে কবি এখানে ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবনকে পরিবতর্ন করার কথা বলেছেন তিনি। ‘অথের্র পিছনে ছুটে সবাই’ কবিতায় আছে, মানবজীবনের মূল চালিকাশক্তি হলো অথর্। আর আমরা সবাই সেই অথের্র পিছনে প্রতিনিয়ত ছুটছি। কবি সেই দিকটিই এই কবিতায় তুলে ধরেছেন। নিজ দেশের ব্যবসা-বাজারের খবর নিলেই শুধু চলবে না বরং বিশ্ববাজারেরও খবর নেয়া প্রয়োজন। এই বিষয়টি ‘বিশ্ব পণ্য বাজারে গতিপ্রকৃতি বুঝা বড় দায়’ কবিতায় ফুটে উঠেছে। অথর্নীতিকে বঁাচালে দেশ বঁাচে। তাই অথর্নীতিকে বঁাচাতে ব্যবসাকে সহায়তা করা অতীব জরুরি। আর বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কমর্সংস্থান বাড়াতে হবে। তবেই বিশ্ব মহামন্দা দূর হবে। মহামন্দার আঘাতে দেশের অথর্নীতির যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে আলোকপাত করেই কবি ‘বিশ্ব মহামন্দা’ কবিতাটি রচনা করেছেন। দেশি-বিদেশি অবাধ বিনিয়োগের পথ খুলে দিয়ে অথৈর্নতিক মুক্তির ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। নিজদেশে নিজের বিনিয়োগ করতে হবে। নিজেরা নিজেদের দেশে বিনিয়োগ না করলে অন্যদেশের মানুষ কীভাবে আমাদের দেশে বিনিয়োগ করবে। এমনটাই কবির অনেক কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে। বিশ্ববাজার অথর্নীতিতে বাংলাদেশ সুনামের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে। অথর্নীতিতে রোল মডেল হিসেবে আজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে বাংলাদেশ। এই বিষয়ই ‘বাজার অথর্নীতির দেশ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ’ কবিতায় ফুটে উঠেছে। একটি দেশের অবাধ অথর্প্রবাহে অথর্নীতি বেগবান ও প্রাণবন্ত হয়। কবির মতে সামাজিক অথৈর্নতিক কমর্কাÐে সরকারের হিসাবে আস্থা অতীব জরুরি। পাশাপাশি ন্যায়বিচারের ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে। ‘অবাধ অথর্প্রবাহে অথর্নীতি বেগবান প্রাণবন্ত হয়’ কবিতায় এমনটিই ফুটে উঠেছে। ‘বাংলার সোনালি অঁাশ পাট’ কবিতায় বলা হয়েছে, পাটশিল্প বাংলাদেশের অথর্নীতিতে গুরুত্বপূণর্ একটি অংশ। সুদূর অতীতে বেশ জমজমাট ছিল এই পাটশিল্প। বতর্মানে এই ক্ষেত্রটি একটু স্তিমিত। যা পুনরুদ্ধার করতে হবে। দেশ-বিদেশে আস্থা আর বিশ্বাসের গুরুত্বপূণর্ দিক হলো ব্যবসা-বাণিজ্য। ব্যবসা পবিত্র ক্ষেত্র সেখানে আস্থা-বিশ্বাস আর পরিপূণর্ জ্ঞান থাকা বাঞ্চনীয়। এমন বিষয়ই ‘আস্থা আর বিশ্বাসের সম্পকর্’ কবিতায় ফুটে উঠেছে। ‘কমর্সংস্থান’ কবিতায় কবি বোঝাতে চেয়েছেন চাকরির পেছনে বাংলার দামাল ছেলেরা আজ না ছুটে বরং ব্যবসা-বাণিজ্যে আত্মনিয়োগ করছে। এ ছাড়া কল-কারখানায় উৎপাদনে, এমনকি স্বাবলম্বী হতে পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশের পথে। মূলত আলোচ্য দুটি গ্রন্থে কবি ইবনে সালেহ মুনতাসির এক ভিন্নমাত্রার কবিতাসমূহ উপস্থাপন করেছেন। কবিতাগুলো পাঠ করে আমরা দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পকের্ সামগ্রিক ধারণা অজর্ন করতে পারি। কবি সহজ-সরল ভাষায় ব্যঞ্জিত করেছেন পঙ্ক্তিগুলো। ‘ব্যবসা, বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘অথর্নীতি, অথর্প্রবাহ ও অথর্পাচার’ কাব্য দুটির ব্যাপক প্রচার কাম্য। (‘ব্যবসা, বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘অথর্নীতি, অথর্প্রবাহ ও অথর্পাচার’, ইবনে সালেহ মুনতাসির, প্রকাশকাল: ২০১৮, প্রকাশক : সুলেখা পাবলিশাসর্, প্রচ্ছদ : জামিল আহমেদ, মূল্য : ১৫০ টাকা)