শিক্ষার্থীদের ভাবনায় স্বাধীনতা

অগ্নিঝরা মার্চ মানে হলো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সেই ভাষণ, যা বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শিকল ভেঙে স্বাধীনতার আশা জাগিয়েছে। ১৯৫২ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে যে আগুন বাঙালি জাতির অন্তরে লেগেছিল তার অবসান ঘটে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ২৫ মার্চ ছিল একটি নির্মম কালো অধ্যায়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম আক্রমণের ফলে ২৬ মার্চ ভোরবেলা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে দীর্ঘ ৯ মাসব্যাপী স্বাধীনতা যুদ্ধ। তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন এ দেশের শান্তিকামী জনতা। অগ্নিঝরা মার্চে আমার স্বাধীনতার চেতনায় নতুন করে উজ্জীবিত হয়। এ দেশের আগামীর কর্ণধার তারুণ্য সমাজ কী ভাবছে স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে। স্বাধীনতা দিবসে তরুণদের ভাবনা ও প্রত্যাশা নিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন নাজমুল হুদা।

প্রকাশ | ২৫ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

নাজমুল হুদা
তারেক হাসান ৯ম ব্যাচ, বাংলা বিভাগ। পাবনার সাথে বাংলাদেশের স্বাধীনতার গল্পটা অনেক বেশি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সেই ইতিহাসের আজকের ধারক পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একদম শুরু থেকে আজ পর্যন্ত শুদ্ধ স্বাধীন চিত্তে বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারণ এবং লালন করার চর্চা অব্যাহত। নানান সাংস্কৃতিক অঙ্গণে এই কথাগুলো একদম ফুলের মতো ফুটে উঠছে। সময়ের শিলালিপিতে তা কখনো স্বাধীনতা চত্বর, কখনো বা খেলার মাঠ কিংবা গল্প আড্ডায় বারবার লেখা হচ্ছে। মো. সোহাগ চৌধুরী ৯ম ব্যাচ, লোকপ্রশাসন বিভাগ। ত্রিশ লাখ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের এ স্বাধীনতা। স্বাধীনতা শুধুই একটা দিবস নয়। এটা আমাদের স্বাধীনভাবে বাঁচতে শিখিয়েছে। পরাধীনতার গস্নানি থেকে মুক্ত করেছে। স্বাধীনতার চেতনায় আমাদের নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই সোনার বাংলায় মুক্তিযুদ্ধের সেই আদর্শ আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আমার প্রত্যাশা এই আদর্শকে বুকে ধারণ করে সামনে এগিয়ে যাবে বাংলার তরুণসমাজ। মো. শরিয়ত-উলস্নাহ ১০ম ব্যাচ, রসায়ন বিভাগ। স্বাধীনতা শব্দটা বৃহৎ। স্বাধীনতা শব্দটা মনে এলেই যে চিত্রটা মস্তিষ্কে আসে তা হলো একটা পাখি খাচা থেকে বের হয়ে ডানা ঝাপটিয়ে উড়ে যাচ্ছে। আর যে শব্দগুলো কানে বাজে 'এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম'। স্বাধীনতা আমাদের এই প্রজন্মের কাছে কতটুকু আনন্দের বা আমরা কতটুকুই বা অনুভব করতে পারি। আদতে যারা অনুভব করে, ভালোবেসে এ দেশের মানুষের মুক্তির কথা চিন্তা করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কথায় ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজের জীবনকে বাজি রেখে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। তাদের স্বাধীনতা অনুভব করা আর আমাদের স্বাধীনতা অনুভব করা এক নয়। তবুও যতটুকু আনন্দ হয় আমাদের বুকে তা বলে ব্যক্ত করার নয়। \হএ দেশের মানুষ স্বাধীনতার মূল্য বুঝে ভালো কাজ স্বাধীনভাবে করতে পারে সেটুকুই প্রত্যাশা। রওনক জাহান ১১তম ব্যাচ, বাংলা বিভাগ স্বাধীনতা হলো বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় অর্জন। স্বাধীনতার চেতনা আমাদের সবসময় উজ্জীবিত করে। বাঙালি জাতি স্বাধীনতার এ চেতনা লালন করে বাংলাদেশকে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ঠিক একইভাবে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং বিভিন্ন সংগঠন সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশেষ বিশেষ দিনগুলোকে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালন করে চলেছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক বিভিন্ন বিষয়াবলির ওপর প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে তার সঙ্গে দিবসগুলোতে ফুটবল-ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়। এভাবে স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আগামীর সফলতার দিকে পদার্পণ করেছে পাবিপ্রবি। ইসান খান, ১২তম ব্যাচ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ এক ঐতিহাসিক দিন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এ দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যে স্পর্ধা ও সাহসের জোগান দেয়। ৭ মার্চ শিক্ষা দেয় কীভাবে মুক্তি ও স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়। বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে তরুণরা জ্ঞান ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে নিজেকে বিশ্বপরিমন্ডলে উপস্থাপন করার, অধ্যয়ন-গবেষণা-আবিষ্কারের দ্বারা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করে বাংলাদেশকে গৌরবান্বিত করার স্বপ্ন দেখে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ছাত্র সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাকে বুকে ধারণ করে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের অংশ হিসেবে স্মার্ট ক্যাম্পাস গড়ে তুলবে এবং স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে রুখে দিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে যাবে। তনুশ্রী রানী ঘোষ ১২তম ব্যাচ, ইংরেজি বিভাগ স্বাধীনতা হলো সমুদ্রে পাওয়া দ্বীপের মতো। যা মনে প্রশান্তির জন্ম দেয়। প্রতিটি জনগণ সর্বোপরী আপামর বাঙালি সবার কাছে স্বাধীনতা মানে নিজের সত্তাকে আরও বেশি উজ্জীবিত করে তোলা। এটি একটি চেতনা, যা বাঙালিরা লালন করে আসছে এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে আরও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার প্রেরণা দিয়ে চলেছে। আর, এভাবেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক রোপিত স্বাধীনতার বীজ প্রতিটা মানুষের স্বাধীন সত্তাকে জাগ্রত করছে এবং বাংলাদেশ উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির পথে অগ্রসর করছে। মার্চ মাস আসলেই যেন প্রতিটি জনগণের অন্তরে স্বাধীনতার উজ্জীবনা শক্তি আরও বেশি প্রগাঢ় হয়ে ওঠে। এ লক্ষ্যেই প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সংগঠনগুলো গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে এই দিনকে পালন করে আসছে। স্বাধীনতা লাভের আত্মগরিমায় গৌরবান্বিত হয়ে ওঠে প্রতিটি বাঙালি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতার প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ সবাইকে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটিকে পালন করে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনাকে আরও জাগ্রত করে তুলতে তারা আয়োজন করে চলেছে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি।