অদৃশ্য জাদুঘর
প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
রেজাউদ্দিন স্টালিন
জাতীয় জাদুঘরের সামনে
দৃষ্টিতে ভর দিয়ে দাঁড়ানো লোকটি
চায়ের কাপ নিংড়ে বের করছে ভবিষ্যৎ
পাশে এক রিকশা চালক পানপাত্রে তৃষ্ণা পরিবেশনের
ভঙ্গিতে ঠিক করছিল গন্তব্য
লোকটি রিকশা চালকের বাঁকা মেরুদন্ডের মধ্যে
আবিষ্কার ক'রে সকল বিস্ময়ের প্রবেশ পথ
এক সেতু-হাজার বছরব্যাপী
পার হচ্ছে ক্রীতদাস আর পিরামিড
প্যাডেলে পায়ের রগ থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসছে
প্রাগৈতিহাসিক সিংহ আর হরিণের দল
শিকার করা ষাঁড়ের রক্ত প্রবাহিত তার শিরার নদীতে
কিন্তু হাতে স্থির প্রভুর পেয়ালা
পানপাত্র হচ্ছে এক দুর্বিষহ জগৎ
কপালের বলিরেখায় আঁকা জীবন যুদ্ধের পান্ডুলিপি
রিকশার চেইন মধ্যযুগের মানুষ পেষা যন্ত্র,
চায়ের চুলিস্ন থেকে উদ্গত ছাই
ডাইনি বানানো নারীদের দেহভস্ম
লোকটি বহুদিন ধরে মানুষের ভবিষ্যৎ গুনছে
বারবার তাকাচ্ছে পালহীন রিকশায় বসা
ক্লিওপেট্টার দিকে
শত শত বন্দিদের আর্তনাদ আটকে আছে রিকশার সিকে
প্যাডেলে গড়িয়ে যাচ্ছে নিরপরাধ মানুষের নিয়তি
চালকের চোখের চিতায় সাতটি সূর্যঢোল
বাজাচ্ছে সাতজন মৃতু্যর দেবদূত
তার মাথায় বাঁধা গামছা-
তিতুমীরের বাঁশের কেলস্নায় ওড়ানো পতাকা
বুক তার আকাশ মাটির ব্যবধানে বিশাল হাপর
পাঁজর-একাত্তরে শহীদের কঙ্কাল
লোকটি ইতিহাসের পৃষ্ঠা থেকে উঠে দাঁড়াতে চাইলো
আর তৃষ্ণার রাজত্বের লোকজন ঘিরে ধরলে তাকে
সে দেখলো প্রতিটি মানুষই একটি অদৃশ্য জাদুঘর