গল্প

হায়জ

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

মাসুম বিল্লাহ
উত্তেজনায় কঁাপতে কঁাপতে অফিসে এলাম। উত্তেজনা মানুষের শরীর ও মনকে একদম ভেঁাতা করে দেয়, আমারও সে দশা। আজ বাড়ি যাব। গত রাতে অফিস থেকে ফিরে হঠাৎ মনে হলো কতদিন বাড়ি যাই না। রাত হয়ে গিয়েছিল তা না হলে তখনই রওয়ানা দিতাম। টিকিট কেটে বাসে চেপে বসতাম। ইচ্ছে করেই ফারহানাকে ফোন দিলাম না। অবশ্য ওকে বললে ও তখনই বলত, তুমি এখনই বের হও, রাত বেশি হয়নিÑ সারারাত গাড়ি চলে। ঠিক করলাম কাল অফিস শেষ করে আগেভাগে রওয়ানা দেব। রাতেই ব্যাগ গুছিয়ে রাখলাম। উত্তেজনায় সারাদিনের ক্লান্তি ও খিদে কোথায় হারিয়ে গেল। ফ্রিজে এখনো কয়েকটা বক্সে খাবার রয়ে গেছে, ওগুলো ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। মনে মনে বললাম, বাড়ি গেলে আর ফ্রিজের খাবার কে খায়! রাত বাড়ল। জানালার পাশে বসে আছি। দূরে একটা বিল্ডিংয়ের ছাদের উপরে অধের্কখানা চঁাদ তাকিয়ে আছে। মনে হলো আমাকে দেখছে। রাতে আর ঘুম এল না। সকাল হতে কত দেরি! আজ অফিসের কাজে এদিক-সেদিক হতে লাগল। আজ যে বাড়ি যাব! হাতে কাজ জমতে লাগল একটার পর একটা। আজ যে বাড়ি যাবÑ তাই! এদিকে মেজাজের মিটার উপরের দিকে উঠছে। কোনো ফঁাক পাচ্ছি না বসকে গিয়ে ছুটির কথা বলার। ইচ্ছে করছে এদের সব কাজ ছুড়ে ফেলে কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে পড়ি। কী আর হবে! প্রয়োজনে করব না তোদের চাকরি। এ সময় এক কলিগ বলে বসল, তুহিন ভাই, আজ বাড়ি যাবেন নাকি? কঠিন স্বরে বলি, আপনাকে কে বলল? আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে। বসকে বলে বেরিয়ে পড়েন!Ñকলিগ চোখে-মুখে রহস্যের ইঙ্গিত দিয়ে সরে গেল। লাঞ্চ টাইমে খেতে ইচ্ছে করল না। খিদে নেই। তবু খেতে গেলাম। কিন্তু খেতে আর পারলাম কই! গলা দিয়ে নামলে তো। দুপুরের পর এক ফঁাকে বসকে ছুটির কথা বলতেই বললেন, বাড়ি যাবেন কেন? মানুষ এত বাড়ি গিয়ে কী করে, বুঝি না! চাকরি করলে এত ছুটি নেয়া যায় না, জানেন না?Ñতারপর গলা খাদে নামিয়ে বলেন, আচ্ছা যান, কিন্তু একদিনের বেশি থাকা চলবে না। ‘থ্যাঙ্কু’ বলে বসের রুম থেকে চলে আসার মুহূতের্ বস ডাক দিলেন, বললেন, বউকে নিয়ে আসলেই তো পারেন, তুহিন! হাসতে হাসতে বললাম, বস, আমার বেতন কত? মাস শেষে টাকা ধার করতে না পারলে অফিসেও আসতে পারি না। জানেন? বস্ বেলুনের মতো চুপসে গেলেন! আর এক সেকেন্ডও অফিসে থাকতে ইচ্ছে করছে না। আমার শরীর অফিসে থাকলেও মন ছুটে গেছে বাড়ি-এর মধ্যে একবার আমি বাড়ি থেকে ঘুরেও এলাম মনে মনে। বিকেলের মৃত্যু। এক লাফে বাইরে এসে সিএনজি ধরলাম। সিএনজিঅলা আমার মুখ দেখে বুকের ভেতরটা দেখে ফেলল, ভাড়া হঁাকাল ইচ্ছেমতো। কিছু বলে লাভ হবে নাÑউঠে পড়ি। ঢাকা শহরের জ্যাম মনে হয় আজ একটু বেশিই। একটু পর পর সময় দেখছি। বাসস্ট্যান্ডে এসে আকাশ থেকে পড়লাম। টিকিট নেই। অগ্যতা পথ ভাগ ভাগ করে যেতে হবে। লোকাল বাসের টিকিট কাউন্টারেও উপচেপড়া ভিড়। কাহিনী কী? ঈদের ছুটি নাকি! জানতে চাইলে একজন জানায়Ñজানেন না, আজ বৃহঃস্পতিবার, ‘সবাই নাড়ির টানে বাড়ি যাচ্ছে’! কপাল পুড়তে পুড়তে এ যাত্রা রক্ষা পেলাম। টিকিট পেলাম ইঞ্জিন কভারে। এখানেও বসে যেতে রাজি এমন মানুষের সংখ্যাও অনেক। তবু তাদের টিকিট চাই। দঁাড়িয়েও যেতে আপত্তি নেই। যাত্রীদের টিকিট পেতে যত দেরি কিন্তু বাসে উঠে বসতে দেরি হলো না। এখনো বাস ছাড়ছে না, যাত্রীরা একযোগে চিৎকার করে ওঠলÑওই ড্রাইভার, ওই সুপার ভাইজার কী শুরু করছ তোমরাÑগাড়ি ছাড়ো না কেন?Ñআমাদের সময়ের দাম আছে। বাস ছাড়ল। কিছু দূর গিয়ে আবার থামল। কাউন্টার থেকে যাত্রী উঠবে। তর সইল না এক ভদ্রলোকের, হঁাক ছাড়লেনÑশালাদের মাইরের কাম, রাস্তার মধ্যে ফাজলামি শুরু করছেÑএখানেই এক ঘণ্টা লেট। আবার বাস চলতে শুরু করল। কিন্তু গাড়ির গতি মন্থর। অন্যদিনের চেয়ে আস্তে আস্তে চলছে মনে হলো। আমার মনের কথা আরেকজনের কণ্ঠে অনুবাদ হলো তখনই, সহযাত্রী ভাই খুব ভদ্রস্বরে বললেন, সুপার ভাইজার সাহেব, ড্রাইভার সাহেব গাড়ি এত আস্তে চালাচ্ছে কেন? তেল নেই নাকি? সারারাত গাড়িতে থাকলে হবে, অন্য কাজ নেই আমাদের? সুপার ভাইজার হাসিমুখে আশ্বস্ত করে গেল কিন্তু কাজ তেমন হলো বলে মনে হলো না। গাড়ি চলে না, গাড়ি চলে না... এদিকে মনও বসছে না। আমার পাশেরজন মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল, বৃহঃস্পতিবার চাপ একটু বেশি থাকে, চাকুরিজীবীরা বাড়ি যায় তো, মাঝে শুক্রবার-শনিবার ছুটি থাকে, অনেকে আবার দুইদিন ছুটি বাড়িয়ে নেয়। লোকটি তারপর আমার শরীর টিপে দিয়ে বলে, বুঝলেন না ভাই, ‘সবই নারীর টান’!Ñতারপর কথা থামিয়ে শব্দ করে হেসে উঠে লোকটি, সে হাসি অবশ্য ইঞ্জিনের শব্দে চাপা পড়ল। আমি ড্রাইভার সাহেবকে বিনীতস্বরে বলি, ড্রাইভার সাহেব, গান-বাজনার ব্যবস্থা নেই, থাকলে বাজান। ড্রাইভার কথা শুনলেন। মনির খান গেয়ে উঠলেনÑচিঠি লিখেছে বউ আমার ভাঙা ভাঙা হাতে...। ...কিন্তু চিঠির বাকি অংশ শোনার আগেই একজন কড়া মেজাজে বললেনÑওই সুপার ভাইজার গান বন্ধ কর। পেছন তাকিয়ে দেখি হুকুমকারী একজন মুসল্লি। যার চোখে গান-বাজনা শোনা হারাম। শক্ত হয়ে বসে রইলাম। আর তো মাত্র ঘণ্টা খানেক, তারপর অন্য আরেকটা বাসে চড়তে হবে; নিজেকে সান্ত¡না দিলাম। বিপদের সময়ে সান্ত¡না খুব কাজে দেয়। বাস স্টপেজে এসে থামল। হুরমুড় করে নেমে পড়ল সবাই। তারপর চোখের পলকে যে-যার মতো রাতের অন্ধকারে মিশে গেল। আমি এবারও বাসের টিকিট পেলাম না। রাতটা বুঝি এখানেই বসে কাটাতে হবে! গুম হয়ে দঁাড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। তারপর একটা চায়ের দোকানে গিয়ে বসি। এ সময় একটা অল্প বয়সী ছেলে ঘোষণার ভঙ্গিতে বলল, আপনারা কেউ একজন আমার গাড়িতে যেতে পারেন, চারশ টাকা ভাড়া দিবেন। আমি হাত উঁচু করলাম। রিক্স হয়ে যাচ্ছে। যা থাকে কপালে। ড্রাইভারের পাশের আসন। একটা পিকআপ। মালামালে বোঝাই। কী মাল তা অবশ্য বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেইÑতিরপলে ঢাকা। গাড়িতে উঠেই বলি, বড় উপকার করলেন কিন্তু এভাবে অচেনা লোক উঠালে যদি আপনার বিপদ আপদ হয়?Ñমনে মনে বললাম, যেচে শাল নিলাম না কি! ড্রাইভার ছেলেটা আমাকে উল্টো চমকে দিয়ে বলল, যদি আমি আপনারে বিপদে ফালাই, তাইলে?Ñকথা শেষ করেই হো হো করে হাসতে লাগল। মাঝরাতে সে হাসি আমার বুকে কঁাপন ধরিয়ে দিল। বাইরে তা প্রকাশ করলাম না। বরং ওর হাসিতে যোগ দিয়ে বলি, তোমাকে দেখলে ড্রাইভার মনে হয় না, মনে হয় তুমি গাড়ি চালাতেই পার না!Ñসরি তুমি করে বলে ফেললাম। ছেলেটি বলে, গাড়ি চালাই ল্যাংটা কাল থেইক্যা, ডরাইয়েন না, আরাম কইরা বসেন। হা হা হা। টুকটাক কথা চলতে লাগল। এক ফঁাকে বলি, কথা বললে তোমার গাড়ি চালাতে অসুবিধা হবে তো! তাছাড়া গাড়ি চালানোর সময় চালকের সঙ্গে কথা বলা ঠিক না। ছেলেটি বলে, কথা না কইলে আমার চোখে ঘুম চইল্যা আইবো! যাক, তাহলে তো ভালই হলো। গল্প করতে করতে যাওয়া যাবে।Ñ আমি বললাম। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে গাড়ি সঁাই সঁাই করে ছুটে চলেছে। ইচ্ছে করছে, ফারহানাকে ফোন করে কথা বলি। ইচ্ছাকে দমন করলামÑবাসায় গিয়ে ফারহানার চমকে যাওয়া মুখটা দেখব বলে। মনে হচ্ছে কতদিন ওকে দেখি না, ছুঁই না, অথচ গত মাসেই বাড়ি থেকে ঘুরে গেছি। বুকের মধ্যে কেমন একটা শূন্যতাÑঠিক বোঝানোর নয়; কবি-লেখক হলে সুন্দর করে ব্যাপারটাকে লিখে ফেলত, আর সে লেখা পড়ে হাজার হাজার পাঠক-ভক্ত জুটে যায় তঁাদের। আমারও ফারহানাকে নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করে, আমাদের দুজনের কথা লিখতে ইচ্ছে করে কিন্তু কলমের জোর বিধাতা সবাইকে দেবেন কেন? আমাকেও দেননি। মাঝে মাঝে মনে হয় আমি কী ঠিক ঠিক ওকে বোঝাতে পারছিÑকতটা ভালোবাসি ওকে! ফারহানা আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি, তোমাকে ছাড়া এক মুহূতর্ থাকতে ইচ্ছে করে না, আমার তো ইচ্ছে করে সারাক্ষণ তোমার সঙ্গে লেপ্টে থাকি, কে কী ভাববে, তাতে আমার কী? কেমন হাস্যকর লাগছে? তা একটু লাগুকÑআর কেউ তো পড়ছে না, শুধু তুমি আর আমি।...আর তো মাত্র ঘণ্টা তিনেকের ব্যাপার- তারপরই ফারহানাকে দেখতে পাব, ছুঁতে পাব; আমার খুব করে ইচ্ছে করে ফারহানাকে জড়িয়ে থাকি বছরের পর বছর! আমার মনের খাতায় কলমের অবাধ বিচরণ থেমে গেল ড্রাইভার লোকমানের কথায়, আমাকে মৃদু ধাক্কা মেরে বলল, ভাই কী ঘুমাইলেন, নাকি ভাবির কথা ভাবতাছেন? আমার উত্তর না নিয়েই আবার বলেÑবউরে বাড়ি রাইখা টাউনে কাম-কাইজ করতে মন চায় না ভাই, মাসে এক দিনের বেশি মালিক ছুটি দেয় না; রাইতে ঘুমাতে গিয়া বউরে কাছে পাইতে মন চায়, শরীরডারে কি দিয়া বুঝাই, সেইসোম মন চায় দা দিয়া কোপাইয়া শরীরডারে দুই ভাগ কইরা ফালাই! ভাই, আপনে কিছু মনে করতাছেন নাকি? প্রথমে একটু বিব্রত হলেও স্বাভাবিক থেকে মাথা নেড়ে সায় দেই। এ প্রসঙ্গে কথা জমাতে মন টানল না। কিন্তু লোকমানকে রাতের ভূতে ধরেছেÑকথার ভূতে; সে কথা টেনে নিয়ে গেল আরো গভীরেÑবুঝলেন ভাই, ট্রিপ নিয়া এ জেলায় যাই, ওই জেলাই যাই, ঝিনাইদহ গাড়ি নিয়া গেলে বাড়িতে যাইÑএক বেলা কি এক রাইত, কি এক ঘণ্টা কামে লাগাই! কাইল সকালেও চাঞ্জ পাইয়া বাড়ি গেছিলাম তয় গিয়া কোনো লাভ হয় নাই ভাইÑবউয়ের হায়েস হইছেÑবোঝেন নাইÑমাসিক হইছে; এ খবর তো জানি না, কেমন লাগে কন, বেহুদা আইলাম না! বউতো কাইন্দা-টাইন্দা শ্যাষ; কয়Ñআপনে আইবেন মোবাইল করতেন একবার, অহন আপনের কী হইব... লোকমানকে থামিয়ে দিলাম। কেমন অস্বস্তির মধ্যে পড়লাম, অথচ লোকমান অবলীলায় জীবনের গোপন অধ্যায়ের গল্প বলে গেল অচেনা একজন মানুষের কাছে! যা আমরা সহজে করি না, পারি না; চিন্তাও করি না। এই সত্যটাও আমরা স্বীকার করতে পারব কখনো? এখন আমি ভয়ে আছিÑলোকমান আবার কোনো প্রশ্ন-ট্রশ্ন না করে বসে, তাহলে চরম বিপদে পড়ে যাব! কপাল ভালো বাকি পথ লোকমান এ পথে না গিয়েÑঅন্য পথে হঁাটতে লাগল... ঘড়ি দেখলাম রাত তিনটের মতো বাজে, চারটার মধ্যে পেঁৗছে যাবো মনে হচ্ছে। আল্লাহ আল্লাহ করে বাকি পথটুকু যেতে পারলেই হয়। লোকমানের গাড়িতে এখন কিশোর কুমার গাইছেনÑএই পথ যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হতো বল তো?... বুক হালকা লাগল এক মুহূতর্। গাড়ি থেকে নামার সময় লোকমানের আন্তরিক কথায় মুগ্ধ হলাম। মনে মনে বললাম, লোকমান ছেলেটা খারাপ না! ভোরের দিকে বাসায় পৌঁছে গেলাম। গেটের কাছে দঁাড়িয়ে ফারহানার মোবাইলে কল দিলাম, দুইবারের সময় কল রিসিভ হলো। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে ফারহানা ‘হ্যালো’ বলল। যখন গেট খুলতে বললাম তখন ও গলা চড়াল, ওরে শয়তানÑদঁাড়াও, এক মিনিট! গেট খুলেই আমাকে জড়িয়ে ধরল ও।Ñযাক ওকে তাহলে চমকে দিতে পেরেছি। হাত-মুখ ধুঁয়ে এসে বসলাম। আলোতে সদ্য ঘুম থেকে ওঠা ফারহানার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে খুব ভালো লাগছে। ব্যাপারটা টের পেয়ে ও বলল, কী দেখছ? তোমাকে। আমাকে দেখার কী হলো, আমার চেহারা তো আর পাল্টায়নি; তোমার পছন্দের নায়িকাদের মতোও হয়নি। আমি চেহারায় কৃত্রিম রাগ ধরে বসে রইলাম। ও আমার পাশ ঘেঁষে দাড়াল। ওর হাত ধরে বললাম, নায়িকা-ফাইকার বেল নাই! ফারহানা প্রসঙ্গ পাল্টে বলল, তুহি, ফোন দিলে না যে? ছুটি কয়দিন এনেছ? আমি কিছু বলার আগে ফারহানা মিহি গলায় ‘কথাটা’ বলল! থমকে গেলাম। সঙ্গে সঙ্গে শব্দ করে হেসে ওঠলাম। আমার তখন ড্রাইভার লোকমানের কথা মনে পড়ল। আমি ফারহানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। আমি নিশ্চিত ও আমার ভালোবাসাটা টের পাচ্ছে। তবে আমি অনুভব করছিÑআমার প্রতি ওর ভালোবাসার মাত্রাটা আমার ভালোবাসার চেয়ে অনেক অনেক গুন বেশি! আমি ফারহানার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম, নো টেনশন, বস্!