কবিতায় মুক্তিযুদ্ধ

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

এস ডি সুব্রত
'আমি আমার সমস্ত কবিত্ব শক্তি উজাড় করে যে-কবিতা লিখেছি তার নাম শেখ মুজিব, এই মুহূর্তে আর কোনো নতুন কবিতা লিখতে পারব না আমি কিন্তু এই যে প্রতিদিন বাংলার প্রকৃতিতে ফুটছে নতুন ফুল শাপলা-পদ্ম-গোলাপ সেই গোলাপের বুক জুড়ে ফুটে আছে মুজিবের মুখ।' (মহাদেব সাহা : 'শেখ মুজিব আমার নতুন কবিতা'।) পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন জাতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এমন একজন ব্যক্তির নাম চলে আসে, যে ওই জাতির ক্রান্তিকালে জাতিকে সংকট থেকে মুক্তির দিশা দেখিয়ে উত্তরণের পথে নিয়ে যায়। এমন একজন মহামানব বা মহান ব্যক্তি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কবি নির্মলেন্দু গুণ তার 'আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি' শিরোনামের কবিতায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি আবেগাপস্নুত হয়ে উচ্চারণ করেছেন, 'সমবেত সকলের মতো আমিও গোলাপ ফুল খুব ভালোবাসি, রেসকোর্স পার হয়ে যেতে সেইসব গোলাপের একটি গোলাপ গতকাল আমাকে বলেছে, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি। আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি আমি আমার ভালোবাসার কথা বলতে এসেছিলাম।' 'বাঙালি, একটি ফিনিক্সপাখি' শিরোনামের কবিতায় কবি আখতারুজ্জামান আজাদ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকে বলেছেন বাঙালি জাতির সপরিবারের হত্যা। কবি বলেন,/'আমরা বাহান্নতে মরেছি দলে দলে,/আমরা একাত্তরে মরেছি ঝাঁকে ঝাঁকে, আমরা পঁচাত্তরে মরেছি সপরিবারে।' বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুগে যুগে জন্মায় না। হাজার বছরে একজন জন্মায়। এমন অকুতোভয় নেতা ছিল বলেই আজ আমরা উড়াতে পারছি লাল-সবুজের প্রিয় পতাকা। চোখের সামনে কবর খুঁড়তে দেখেও যে মানুষ বিচলিত হয় না মৃতু্যভয়ে, তিনি বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা। তাকে নিয়ে শত সহস্র লক্ষ গল্প কবিতা গান প্রবন্ধ লিখলেও শেষ হবে না তার কীর্তি লেখা। রাজনীতির মহাকবি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ নামের দেশটির জন্ম হতো কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট অবকাশ থেকে যায়। বঙ্গবন্ধু আছেন এদেশের মানুষের হৃদয়ে, থাকবেন আজীবন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রম্নয়ারি, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এই তিনটি তারিখ মিশে আছে আমাদের অস্তিত্বে। বায়ান্ন এবং একাত্তর এই দুটো চেতনা নিয়েই একজন বাঙালি কবির সত্তা। শুধু কবিগণ নয়, পুরো বাঙালি জাতির অভু্যদয় এই দু'টি সালের সেতুবন্ধন থেকে উৎসারিত। একাত্তরে বিজয় অর্জিত বাঙালি জাতির কবিতাকাহনে, লাল-সবুজের পতাকার দেশে কবিতা নিয়ে আলোচনা শুরু করলে দেশাত্ববোধক কবিতার কথা প্রথমে আসে। যারা লেখালেখি করেন তারা বাংলার রূপ সৌন্দর্য, ঋতুবৈচিত্র্য যেমন এড়াতে পারেন না কোনোভাবেই, তেমনি একটি মহান চরিত্রকে উপেক্ষা করতে পারেন না। আর সে চরিত্রটি হচ্ছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিভিন্ন প্রেক্ষিতে, বিভিন্ন উপলক্ষে, বিভিন্ন দিবসে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন কবিদের লেখনিতে অন্যতম প্রধান চরিত্র। আমার প্রিয় দেশমাতার সমান কোনো ব্যক্তিত্ব কল্পনা যদি করতে হয় কবিতার প্রয়োজনে, তবে তিনি একমাত্র বঙ্গবন্ধু। কবিমাত্রই দেশপ্রেমিক। দেশপ্রেম তার মনকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। দেশের সমসাময়িক বিষয়াবলী ধনাত্মক এবং ঋনাত্মক উভয়ভাবেই ফুটে ওঠে দেশের কবিতায়। আমাদের দেশের সঙ্গে জড়িত সব ঘটনায় বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিকভাবে জড়িত। ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের কবিতায় তিনি উজ্জ্বলতম চরিত্র। ১৯৬৩-র ২৮ আগস্ট বর্ণবাদী আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের সেই 'আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম' মহাকাব্যের পর আরও একটি মহাকাব্য রচিত হয় ১৯৭১-র ৭ মার্চ রেসকোর্সে। যেমন- এতিহাসিক ৭ মার্চ নিয়ে 'স্বাধীনতা এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো' কবিতায় নির্মলেন্দু গুণ লিখেছেন, 'অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন? তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল, হৃদয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার সকল দুয়ার খোলা কে রোধে তাহার বজ্রকণ্ঠ বাণী? গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তার অমর-কবিতাখানি : 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।' আমাদের মহান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেছেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সাধারণ কোনো নাম বা উপাধি নয়- একটি ইতিহাস, একটি স্বাধীন বাংলাদেশ, একটি স্বাধীন জাতিসত্তা।' দেশপ্রেমের কবিতার ক্ষেত্রে সব কবির কবিতায় বঙ্গবন্ধু এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী চরিত্র। এ দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকে জাতির জনক বলেছিলেন, 'এখন যদি কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতা হরণ করতে চায়, তাহলে সে স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্যে মুজিব সর্বপ্রথম তার প্রাণ দেবে।' যুগে যুগে শুধু স্বাধীনতার জন্যই পৃথিবীর বুকে লড়াই হয়েছে, রক্ত ঝরেছে, মানুষ জীবন দিয়েছে। আমরা ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। বাঙালি জাতি যখন নির্যাতন নিপীড়নে ক্লান্ত তখন আশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছিলেন একমাত্র বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন তখন তিনি বলে দিলেন এটি আমাদের মুক্তিরও সংগ্রাম। সে কারণেই কবিদের স্বাধীনতার কবিতা, মুক্তির কবিতা লেখার প্রেরণার অন্যতম ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 'ধন্য সেই পুরুষ' কবিতায় কবি শামসুর রাহমান বলেছেন, 'ধন্য সেই পুরুষ, যার নামের ওপর পতাকার মতো দুলতে থাকে স্বাধীনতা,/ধন্য সেই পুরুষ, যার নামের ওপর ঝরে/মুক্তিযোদ্ধাদের জয়ধ্বনি।' এক একটি দ্রোহের কবিতা ছিল বঙ্গবন্ধুর সব ভাষণ। তখন থেকে বর্তমান প্রজন্ম পর্যন্ত দ্রোহের কবিতায় বঙ্গবন্ধু সবার মন জয় করেছেন তার আপসহীন নেতৃত্বের গুণাবলি দিয়ে। অধিকারহারা মানুষের জন্য লেখা দ্রোহের কবিতা। প্রসঙ্গত, দ্রোহের কবিতা লেখেননি এমন কবি সাহিত্যজগতে বিরল। দ্রোহের কবিতায় দেশ, জাতি, সমাজ, বিশ্বের বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরা হয়। ফলে এ ধরনের কবিতা লিখতে সাহসের প্রয়োজন বটে। আর বিভিন্ন প্রভাবক এই সাহস যোগায়। 'বঙ্গবন্ধু সর্বকালের সাহসী নেতা' প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায় ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি তার এই উক্তির প্রেক্ষিতে বলা যায়, বঙ্গবন্ধু দ্রোহের কবিতার ক্ষেত্রে উত্তম প্রভাবক, যিনি মাথা নত না করার শিক্ষাটি বাঙালি জাতিকে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু সব সময় সাধারণ মানুষের বিজয় চেয়েছেন। মুক্তিকামী বাঙালি জাতিকে মুক্তির বাণী শুনিয়েছিলেন। তিনি বাঙালির ম্যাগনাকার্টা বলে পরিচিত যে ছয় দফা কর্মসূচি দিয়েছেন, সেখানেও রয়েছে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির কথা। সাধারণ মানুষের কল্যাণ সাধনই ছিল তার ধ্যান। তার সুরেই 'টুঙ্গিপাড়া গ্রাম থেকে' কবিতায় কামাল চৌধুরী বলেছেন, 'টুঙ্গিপাড়া গ্রাম থেকে আমাদের গ্রামগুলো তোমার সাহস নেবে। নেবে ফের বিপস্নবের দুরন্ত প্রেরণা।' শোকের কবিতা সাহিত্যের একটি বড় অংশ। আমাদের বাংলা সাহিত্যে বহু শোকের কবিতা আছে। ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সবচেয়ে মার্মান্তিক শোক কাব্যের জন্ম হয়েছে এদেশে। কলংকিত সময়ের বিষাদ কবিতা ১৯৭৫-র ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল দেশদ্রোহীরা। সেই থেকে বছর ঘুরে আগস্ট মাস এলেই বাংলাদেশের মানব হৃদয়ে শোকের বোবাকান্নার অশ্রম্নধারা বেগবান হয়। মহাদেব সাহার ভাষায়, 'চারজন দেবদূত এসে ঘিরে আছে একটি কফিন একজন বলল দেখ ভিতরে নবীন হাতের আঙুলগুলি আরক্ত করবী রক্তমাখা বুক জুড়ে স্বদেশের ছবি।' (কফিনকাহিনী) এ শোকে মূহ্যমান হয়ে অগ্রজ, অনুজ অথবা প্রবীণ, নবীন সব কবিই কবিতা বা গান রচনা করেছেন। 'নিত্যই দেখি এখানে - সেখানে মৃতদেহ আছে পড়ে; তোমার শোণিতে রাঙানো এ মাটি কাঁদিতেছে নিরবধি তাই তো তোমারে ডাকে বাংলার কানন, গিরি ও নদী।' (ডাকিছে তোমারে- সুফিয়া কামাল) পনের আগস্ট কবিতায় সৈয়দ শামসুল হকের অভব্যক্তি, 'তোমার শোকে আজও কাঁদছে সারা বাঙালি অদ্যাবধি দেশের মানুষ তোমার কাঙালি। হে মহানায়ক তোমাকে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি অঙ্গ জুড়ে মাখি তোমার অমূল্য পদধূলি।' সাধারণ মানুষের অধিকার, মানবাধিকার, শ্রমিক অধিকারসহ আমজনতার বিভিন্ন অধিকার নিয়ে বঙ্গবন্ধু সব সময় সক্রিয় ছিলেন। এজন্য তাকে জেলে যেতে হয়েছে বারবার। এসব ঘটনা কতো কবিতার জন্মদাত্রী! তিনি তাই বলেছিলেন, 'আমি সব ত্যাগ করতে পারি, তোমাদের ভালোবাসা আমি ত্যাগ করতে পারি না।' এই পৃথিবী সাজানোর জন্যই, জগতে হয়েছে পঙক্তিমালার অভু্যদয়, শুরু ভালোবাসার বারতা! 'মানুষের জন্য মানুষের ভালোবাসার জাগরণ সৃষ্টি করা', এটি নিশ্চিত কবির দায়বদ্ধতা। এ দায়বদ্ধতা কবিদের মধ্যে প্রবাহিত করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। শোষণ নিপীড়ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 'বিশ্ব দুই শিবিরে বিভক্ত, শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।' মানবাধিকার, সাম্যবাদ, নায্যতা নিয়ে তরুণ কবিদের কবিতা লিখতেই হবে। বাংলাদেশের সংবিধান নিয়ে তিনি বলেছিলেন, লাখ শহীদের রক্তের অক্ষরে লেখা এই সংবিধান। সেই রক্তের ঋণ শোধ করতেও লিখতে হবে বাঙালির অধিকার আদায়ের কবিতা। 'হে বাঙালি যিশু' কবিতায় মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেছেন, 'শিশু তুমি যিশু তুমি, তুমি পিতা, বাঙালির জাতিপিতা, মানবধর্মের শিখা, আদিহীন অন্তহীন ভবিষ্য অবধি। বাঙালি তোমাকে চায়, তুমি চাও বাঙালির ভালো, বাঙালি মানুষ হয় বুকে যদি মুজিবের আলো। অর্থনীতি হালের একটি জনপ্রিয় শাখা কবিতার। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু তার নির্দেশনা দিয়েছেন এভাবে, 'এই স্বাধীনতা তখনি আমার কাছে প্রকৃত স্বাধীনতা হয়ে উঠবে, যেদিন বাংলার কৃষক-মজুর ও দুঃখী মানুষের সকল দুঃখের অবসান হবে', বঙ্গবন্ধুর এ উক্তিটি উত্তম কবিতার স্রষ্টা। 'পিতাকেই মনে পড়ে' এই কবিতায় আসলাম সানী বলেছেন, 'অন্যায়কারী পিতার কাছে/হার মেনেছে হার সারা জীবন শোষণের বিপক্ষে/জয় হয়েছে তার।' সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির কবিতায় বঙ্গবন্ধু তাই সব কবির প্রেরণার জায়গা কবিতায়। 'মাটির মানুষ শেখ মুজিবুর/কোথায় তুমি নেই তোমার ছবি টাঙানো আছে দেশজুড়ে সবখানেই।' (তোমার ছবি- রহীম শাহ) শক্তিমান লেখক আহমদ ছফার ভাষায় বলতে হয়, 'দিবসের উজ্জ্বল সূর্যালোকে যে বস্তু চিকচিক করে জ্বলে তা হলো মানুষটির সাহস। আর জ্যোৎস্নারাতে রূপোলি কিরণ ধারায় মায়ের স্নেহের মতো যে বস্তু আমাদের অন্তরে শান্তি ও নিশ্চয়তার বোধ জাগিয়ে তোলে তা হলো তার ভালোবাসা। জানো খোকা তার নাম? শেখ মুজিবুর রহমান।' বাংলা সাহিত্যে বঙ্গবন্ধু একটি মহাকাব্যের নাম। বাংলাদেশের অমর স্বাধীনতা মহাকাব্যের মহাকবি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তরুণ কবিদের কাছে আজীবন প্রেরণার জায়গা- চলার সঙ্গে চেতনার সঙ্গী অবিরাম। অন্নদা শংকর রায়ের ভাষায়, 'যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান। দিকে দিকে আজ অশ্রম্নমালা রক্তগঙ্গা বহমান তবু নাই ভয় হবে হবে জয়, জয় মুজিবুর রহমান।' ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ট্র্যাজিক মৃতু্যর পরে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণে' শিরোনামে কবিতা রচনা করেন অন্নদা শংকর রায়। তিনি বলেন, 'নরহত্যা মহাপাপ, তার চেয়ে পাপ আরো বড়ো করে যদি তার পুত্রসম বিশ্বাসভাজন জাতির জনক যিনি অতর্কিতে তারেই নিধন। নিধন সবংশে হলে সেই পাপ আরো গুরুতর।' কবি শামসুর রাহমান বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন অসংখ্য। ' তিনি এসেছেন ফিরে' কবিতায় বলেন, 'লতাগুল্ম বাঁশঝাড়, বাবুই পাখির বাসা আর মধুমতি নদীটির বুক থেকে বেদনা বিহ্বল ধ্বনি উঠে মেঘমালা ছুঁয়ে/ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ে সারা বাংলায়। এখন তো তিনি নেই, তবু সেই ধ্বনি আজ শুধু তারই কথা বলে।'