গ্রন্থালোচনা

বাণী প্রবচন উদ্ধৃতি

প্রকাশ | ১০ মে ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
'চিত্রকথা' প্রকাশিত কবি সমরেশ দেবনাথের- 'বাণী প্রবচন উদ্ধৃতি' সংবলিত গ্রন্থটি (২০১৯) বিষয় বৈচিত্র্যে এক ও অভিন্ন, যদিও ষরঃবৎধৎু :বৎসং অনুযায়ী এদের প্রতিটি পৃথক অবস্থান চিহ্নিত করে যেহেতু বাণী (এখানে ধঢ়যড়ৎরংসং), প্রবাদ প্রবচন (ঢ়ৎড়াবৎনং) এবং উদ্ধৃতি (য়ঁধঃধনষব য়ঁড়ঃবং)- এই তিনটি শুধু পৃথকই নয়, ফরংঃরহপঃষু ফরভভবৎবহঃ, আর এদের ঐক্য (ইউনিটি) জীবন/মহাজীবনের নিরিখে, যরমযষু বপষবপঃরপ। গ্রন্থটি চারটি ভাগে বিভক্ত, যথাক্রমে : মুখবন্ধ/বাণী/প্রবচন/ উদ্ধৃতি, যেখানে মুখবন্ধে কবি জানাচ্ছেন, 'লেখকের বড় লড়াই হলো নিজের লেখার মাধ্যমে নিজেকে দাঁড় করানোর লড়াই। একই সাথে তার কাজ ও চিন্তাগুলোকে বৃহত্তর পাঠক সমাজের হাতে পৌঁছে দেয়া... সারাজীবনের চিন্তাগুলো বাণী, প্রবচন ও উদ্ধৃতির মাধ্যমে এই গ্রন্থে সংযোজিত হলো। ২৪০টির ঊর্ধ্বে বাণীর কতটাই বা পাঠক-পাঠিকার সামনে মেলে ধরা যেতে পারে, যেগুলো সাম্প্রতিককালে যথোপযুক্ত এবং সময়োপযোগীই নয়, প্রত্যেকটিই জাগতিক। মহাজাগতিক সত্যের সাথে অঙ্গাঙ্গী জড়িয়ে আছে কোনো না কোনো ভাবে, উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে সেই গ্রন্থকারের ভাষায়ই 'সত্যের ধরনটাই এমন, সত্য দ্বন্দ্ব তৈরি করে, তারপর একটা মীমাংসায় আসে' যেমন 'রবীন্দ্রনাথ বাস করেন ভারত মহাসাগরের গভীরে আর চাণক্য বাস করেন হিমালয় চূড়ায়'। 'চেতনা গভীর ও স্বচ্ছ না হলে বিশ্ব প্রপঞ্চকে উপলব্ধি করা যায় না।' 'জীবনের শেষ ধর্ম হচ্ছে পরিপক্ব হওয়া এবং পূর্ণতা লাভ করা' .... ইত্যাদি। গ্রন্থের দ্বিতীয় ভাগে যে প্রবচনাগুলো আছে, সংখ্যায় চলিস্নশোর্ধ্ব; অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবচনগুলোর কয়েকটি উলেস্নখ করা যেতেই পারে : 'অনেক ঋণই শোধ করা যায়, মায়ের ঋণ আর মাটির ঋণ শোধ করা যায় না;' মস্তিষ্ক বুদ্ধি দেয়, হাত শ্রম দেয়,/ আর ভাষা দেয় মানবসভ্যতা; 'সময়ের ব্যবধানে মহাজীবন রূপকথা বা মিথ হয়ে যায়' ... সময়োপযোগী আরও অনেক বাণী প্রবচন উলেস্নখ করা গেল না, যেহেতু ৎবারব,ি সেহেতু পরিসর সীমিত। তৃতীয় ভাগে কবি তার কবিতা থেকে সরাসরি উদ্ধৃতি দিয়েছেন, এ গ্রন্থে সংযোজিত করা একপ্রকার বাধ্যতামূলক মনে করেছেন; 'ঢাকা আমার নয়নের মণি,/কলকাতা আমার হৃদয়'; 'যে কবিতা পার্থিব ঠোঁটে গিয়ে সঙ্গীত হয়,/ সেই কবিতা কাগজে ধরতে চাই', 'মাটিকে ভালোবেসে জীবন হলো পাথর/ সেই পাথর মাথায় নিয়ে অবিরাম চলছে পা'; মধ্যরাতে কাক ও কবি/এক হয়ে যায়; 'যত চিৎকার মানুষের/শূন্যতার কোনো চিৎকার নেই;' 'রাস্তার কি দোষ/আমরাই হাঁটতে শিখিনি;' বাণী প্রচন উদ্ধৃতিগুলোর অনেকই যিরহংরপধষ মনে হলেও পাঠককে অনুরোধ করিব চিন্তনের গভীরতায় যাওয়ায়-সেই মেধা-মননশীলতায় আপনাকে নিয়ে যাওয়ায় যেখানে মীমাংসা সহজেই হয়, কবি জীবনের গভীরতার উপলব্ধি সজ্ঞাত যা: 'একশো অকবিতা লেখার চেয়ে ১০টি উৎকৃষ্ট কবিতা লিখতে পারলেই অমরত্ব পাওয়া যায়।/অবশ্য ঐ দশটির জন্য কিছু দুর্বল কবিতাও লিখতে হয়।' রাণা গুপ্ত