নন্দনতত্ত্ব ও সাহিত্য

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

ড. ফজলুল হক সৈকত
সাহিত্যের সঙ্গে নন্দনতত্ত্বের নিবিড় সম্পর্ক আছে। তবে এই ধারণাটা স্বাভাবিক বিবেচনার মধ্যেই প্রায় সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। বিশেষ মনোযোগটা ঠিক যেন পেয়ে ওঠেনি নন্দনভাবনার ব্যাপারাদি। সাহিত্যে নন্দনতত্ত্বের স্থান, তার পরিবেশনশৈলী, সামর্থ্য কিংবা অন্যান্য প্রসঙ্গ মাঝেমধ্যে চিন্তাবিদমহলে আলোচনার টেবিলে স্থান পায় বটে। কিন্তু সাহিত্যের সাধারণ ভোক্তারা আজও ঠিক অতটা বুঝে উঠতে পারেননি নন্দনতত্ত্ব জিনিসটা সাহিত্যে কীভাবে প্রবেশ করে এবং কতট জায়গাজুড়ে, কী পরিমাণ সময় ধরে অবস্থান করতে পারে? আর সাহিত্যে নন্দনতত্ত্বই-বা প্রকৃতঅর্থে কী? চারপাশে আমরা সাহিত্যের যে চলাচল ও অভিযাত্রা দেখি, তার দিকে গভীরভাবে দৃষ্টি রাখলে অনুভব করা যায়- জাগতিক লাভ-লোকসানের দিকে সাহিত্যস্রষ্টার মনোযোগ থাকে না; তার আকর্ষণ নিবন্ধ থাকে সৌন্দর্য সৃষ্টির অভিমুখে। মানুষের মনে ও চিন্তায় নন্দন-বাগান তৈরি করে দেয়াই যেন সাহিত্যের মূল ডেসটিনেশন। ধরা যাক কবি লিখছেন- 'তোমার অবাধ্য চুল আমার ঘামে-ভেজা/ রুমাল দিয়ে বাঁধতে গিয়ে নাকের রন্ধ্রে/ ঢুকে গেল কিছু সৌদি পারফিউমের সুবাস/ আর সঙ্গে প্রবেশ করল সামান্য হতাশা/ পায়েলের শোভা সেদিন স্পর্শ করেনি তোমাকে/ মেহেদির পুরনো কিছু রং ছিল বটে; কিন্তু নেশা/ ছিল না/ আমরা বাদামের খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে যখন/ পাড়ি দিচ্ছিলাম অপার সমুদ্র, তখন পাইলট অথবা/ বাল্যবন্ধু কোনো কাজিন কীভাবে যে সব স্বপ্ন/ লোপাট করছিল, তা টেরই পাচ্ছিলাম না আমরা/ সময় গড়ালে অবশ্য সব কিছু পরিষ্কার হয়ে গেল/ 'শৌখিন' তোমার শরীর বহন করে ছুটে চলছিল/ দূর-দিগন্তে, কখনো কখনো তীব্র গাড়িজট আর/ বিরক্তিময় গরম ঘামের গন্ধ অতিক্রম করে/ আমাদের মরচে-পড়া কল্পনাগুলোকে নিয়ে গেছে/ 'চানপুরের জঙ্ঘা'য় কিংবা চাঁনখারপুলের মাংসের/ নতুন কোনো দোকানে/ তোমার অবাধ্য চুল, তাকে তো আর/ আমার ক্ষুদ্র রুমালে বেঁধে রাখা যায় না/ অথচ একথা তুমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাও না/ রাজ্যের বিস্ময় তোমার চোখে/ আর আমার হাতে ঠান্ডা পানির বোতল।'- তো এখানে কী পাওয়া গেল- গল্প না নন্দনতত্ত্ব। কথার সৌন্দর্য কিংবা বর্ণনার সৌন্দর্য যদি ধরি, তাহলে বলতে হয়, হঁ্যা রয়েছে খানিকটা। কল্পনার ওপর ভর করে অথবা অভিজ্ঞতা থেকে উপাদান সংগ্রহ করে কবি যখন তার কথারাজি সাজিয়ে তোলেন রঙিন ক্যানভাসে, তখন সবকিছুতে অতিক্রম করে বোধকরি সৌন্দর্যটা সামনে চলে আসে। কেননা, কবির প্রধান বিবেচ্য বিষয় হলো নন্দনতত্ত্বের অপার রহস্য। এই যে, কথায় কথায় সৌন্দর্যের সঙ্গে আবার 'রহস্য' শব্দটা যুক্ত হয়ে গেল। তাহলে সৌন্দর্য কী রহস্যঘেরা? আর সাহিত্য কি সত্যিকার অর্থে 'সৌন্দর্য-রহস্য' সৃষ্টি করে? সাহিত্যে যে সবসময় ধনের (ঐশ্বর্য) চেয়ে ধাতু (বীর্য) প্রাধান্য পেয়েছে, ক্ষুধা নিবারণের চেয়ে গুরুত্ব লাভ করেছে যৌনতা, তার পেছনেও মনে হয় কাজ করেছে রহস্য-সৌন্দর্য-বুননের প্রবণতা। মানুষের সৃজনশীলতা, কল্পনা এবং পরিকল্পনার বেশির ভাগ জায়গা দখল করে আছে নারীর শরীর কিংবা পুরুষের দেহভঙ্গির চমৎকারিত্ব। শিল্পীর তুলির ছোঁয়া কিংবা কথাকারিগরদের কালির দাগ যত বেশি যৌনতাকে ঘিরে, তার এক শতাংশও পেটকে আশ্রয় করে হয়নি। কেননা, পেটের বেড়ে ওঠায় আদতে কোনো নন্দনতত্ত্ব নেই। মেদবহুল পেট দেখে আমরা কখনো পুলকিত হই না। সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ প্রগতিশীল। এবং এই প্রগতিশীলতাই সব সম্ভাবনা- যার বাহন হলো ভাষা, সাহিত্য ও শিল্প। আর যেহেতু সাহিত্যকে কল্পনার ওপর নির্ভর করে ভাষার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কর্ম সম্পাদন করতে হয়, তাই নন্দনতত্ত্ব সৃষ্টির দিকে তার ঝোঁক থাকে। শিল্পীরা জানেন, ভাতের নন্দনতত্ত্ব আর কবিতা কিংবা চিত্রকর্মের নন্দনতত্ত্ব এক কথা নয়। ডাল-ভাত-মাছের সৌন্দর্য নিয়ে আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়ি না; সময়ও থাকে না- ভাতের সঙ্গে ক্ষুধা দূর করার প্রসঙ্গ থাকায় তা দ্রম্নত গলাধঃকরণ আমাদের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। খাদ্যটা সবার জন্য। শিল্প সবার জন্য নয়- কারও কারও। আর যেহেতু সাহিত্য বা শিল্প সবার জন্য নয়- উপলব্ধি ও প্রেরণাসমৃদ্ধ মানুষের জন্য, তাই সৌন্দর্যের ভাবনা এখানে ঢুকে পড়েছে সৃষ্টির আদ্যিকাল থেকে। সাহিত্য দিন বদলে, সমাজ পরিবর্তনে বিশ্বাসী। সাহিত্যের সৃজনশীল গতিধারা দেখিয়ে দেয় প্রজন্মের বিশুদ্ধ পথ। ভাষা কিংবা ভূখন্ডের দূরত্ব অথবা সীমা-পরিসীমাকে সাহিত্য একেবারেই পাত্তা দেয় না। কাজেই যুগে যুগে এক ভাষার সাহিত্যকর্ম অন্য ভাষায় রূপান্তরিত হয়েছে; এবং পাঠককে প্রেরণা ও আনন্দ জুগিয়েছে। যেন সারা দুনিয়ার মানুষ সাহিত্যের ভুবনে জীবন-যাপন, প্রেম-বিরহ কিংবা মিলনের মোহনায়; চেতনা প্রকাশে ও অনুভবে নিমিষে এক হয়ে ওঠে। রাজনীতি বা বাণিজ্যের মার-প্যাঁচে যেমনটা হয় না। কেবল শিল্প-সাহিত্যই পারে মানুষকে বিভেদের কাতার থেকে সরিয়ে অভিন্নতার দরোজায় হাজির করতে। সাহিত্য সর্বদা স্বাধীনতাকে পছন্দ করেছে; প্রশ্রয় দিয়েছে। মতামত প্রকাশ করতে কুণ্ঠাবোধ করে না বলে এই মাধ্যমটি হয়ে ওঠে বিবেকের পস্নাটফরম। অতিকথন, পান্ডিত্যের বাহাদুরি কিংবা তত্ত্ববিতরণ যে থাকে না, সে কথা বলছি না। সেও রয়েছে। মাঝেমধ্যে লেখক বনাম লেখক, সম্পাদক বনাম সম্পাদক কিংবা লেখক বনাম প্রকাশকের দ্বন্দ্ব বা কলমযুদ্ধও আমাদের চোখে পড়ে। এসব বাহাস-বিকর্তকে আমরা বরং ভাবতে পারি, 'কালের বারান্দায় শব্দের প্রতিচিহ্ন' বলে। এবং মূলত শব্দের ধ্বনি-প্রতিধ্বনিগুলো বেজে ওঠে নন্দনতত্ত্বের অপার রহস্য আর ব্যক্তির প্রকাশ-প্রচেষ্টার হাত ধরে। নন্দন-বিবরণের ভেতর দিয়ে শিল্পী বাঁচতে চায়, বেড়ে ওঠার স্বপ্ন দেখে। ২০১২ সালে সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী বৃহৎ-জনগোষ্ঠীর দেশ গণপ্রজাতন্ত্রী চীনদেশের প্রথাবিরোধী এবং নিন্দিত-নন্দিত লেখক মো. ইয়ান, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন: 'খুব ছোটবেলায় বই পড়া শুরু করেছি। অনেক বই পড়ার কারণে সাহিত্যের প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে যায়। তখনই মনে হয়েছে আমার অনেক কথা বলার আছে। মনে হয়েছে আমার মনের কথা ব্যক্ত করার সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সবচেয়ে স্বাধীন মাধ্যম হচ্ছে সাহিত্য। সুতরাং লেখা শুরু করলাম। অবশ্য নিজের ক্ষমতার প্রমাণ দেয়ার বাসনাও ছিল আমার; নিজের নিয়তিকে বদলে দেয়ার ইচ্ছেও ছিল।' আমিত্বের অহংকার এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমিত্বের জয়-জয়কার মো. ইয়ানের সাহিত্যযাত্রাকে প্রসারিত করেছে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় সাহিত্যসভায়। তিনি চীনের মহাপ্রাচীর পেরিয়ে প্রবেশ করলেন পৃথিবীর বিরাট ক্যানভাসে। চীনের প্রায় ১৫০ কোটি মানুষের ভাষ্যকার থেকে হয়ে উঠলেন বিশ্বের প্রায় ৬০০ কোটি মানুষের কথাকার। এবং আমরা মনে করি, তার এই অভিযাত্রায় গল্প বা ইতিহাস সৃষ্টির চেয়ে নন্দন-ভাবনার দিকে অভিনিবেশ ছিল বেশি। আর সেই নন্দনতত্ত্বের ডানা বেয়ে সাহিত্যস্রষ্টা পৌঁছে গেছেন অনুভবের বিপুল বারান্দায়। চিলির কবি পাবলো নেরুদা একবার বলেছিলেন- 'তুমি রোজ খেলা করো ব্রহ্মান্ডের আলো নিয়ে।/ লাজুক দর্শনার্থী তুমি এসেছ কুসুম ও জলের রাজ্যে।/ ওই শুভ্রধবল মাতা যা শক্ত করে ধরে রেখেছি। যেন পুস্পস্তবক,/ প্রত্যেক দিন। আমার দু'হাতে, তুমি তার চেয়েও বেশি।'- তার পাঠকরা তখন অনুধাবন করেছেন, কীভাবে তিনি সৌন্দর্যকে চিন্তার সাথী করেছেন। সৌন্দর্যে অবগাহন ছিল নেরুদার ভাবনা-প্রকাশ আর চিন্তা-বিকাশের বিচরণভূমি। আবার মির্জা গালিবের কবিতা যখন পাঠ করি- 'আমি কাঁদব না যদি তোমাকে আরও নিবিড় করে হৃদয়ে ধারণ করি,/ স্বর্গ ঐশ্বরিক সুন্দর কৌমার্যের মধ্যে তোমাকে কেবলি আমি চেয়েছি।', তখনও আমাদের মনের বারান্দায় ভিড় করে নন্দনবাড়ির বিপুল আনাগোনা। গত শতকে ইরানের সর্বাধিক আলোচিত ও প্রভাবশালী নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা, প্রথাবিরোধী চিন্তাবিদ ও কবি ফোরুখ ফারুখজাদের কবিতায়ও আমরা সৌন্দর্যের অপার রহস্যের সন্ধান পাই। তিনি জানাচ্ছেন- 'শুক্রবার,/ রুগ্‌ন ও অলস চিন্তার শীতল একটি দিন;/ সীমাহীন ও নিষ্ঠুর বিরক্তির সঁ্যাতসেঁতে একটি দিন।/ আমার শুক্রবার, দুঃখে পরিপূর্ণ,/ আমার বিবর্ণ বিশ্বাস ও নিষ্ফল প্রত্যাশার/শোকে কাতর একটি দিন।' সাহিত্য, সাংবাদিকতা, রাজনীতি এবং যাপিতজীবনে সৃজন-স্বাতন্ত্র্য আর পরিশুদ্ধ গণতন্ত্রচর্চার আহ্বান নিয়ে বিশ্বপাঠকের কাছে নতুনভাবে হাজির থাকা পেরুর নোবেলবিজয়ী কথাসাহিত্যিক মারিও ভারগাস য়োসা মানুষের ভাবনার প্রাতিস্বিকতাকে সবসময় গুরুত্ব দিয়ে চলেছেন। এখানেও আরাধ্য থেকেছে নন্দনতত্ত্বের অসীম যাত্রা। মানব-সভ্যতা, প্রাকৃতিক ও সামাজিক শিক্ষা এবং সত্যিকারের কল্যাণ প্রতিষ্ঠার দিকে য়োসার প্রবল ঝোঁক লক্ষ্য করা যায়। প্রকাশিত সাহিত্যসম্ভারকে তিনি সভ্যতার অনন্য গতি ও সম্ভ্রম বাহকরূপে বিবেচনা করেছেন। মানুষের বাঁচার অন্যতম সার্বক্ষণিক সঙ্গী ও উপাদান হিসেবেও বইকে এবং 'পুস্তক-নিবদ্ধ নন্দনতত্ত্ব'কে তিনি স্থান দিয়েছেন সর্বাগ্রে। বাণিজ্যনির্ভর ও যন্ত্রসভ্যতার এই সময়প্রবাহে বস্তুগতভাবে সাহিত্য-সংশ্লিষ্ট-নন্দনতত্ত্বের প্রাসঙ্গিকতা বিষয়ে মারিও অত্যন্ত উচ্চকণ্ঠ ও সোচ্চার। তার মতে- 'মানব স্বাধীনতার অস্তিত্ব যখন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ে তখন মানুষের সৃষ্টিশীলতাও সংকুচিত হয়ে যায় এবং সাহিত্য-চিত্রকলাও খুব ঐশ্বর্যহীন হয়ে পড়ে।' অর্থাৎ সাহিত্য ও সৌন্দর্য-ভাবনার সঙ্গে মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক মুক্তির প্রসঙ্গ জড়িত। যেমন একজন ব্যক্তি তার সমাজ-পারিপার্শ্বের ভেতরে পরিভ্রমণ করে চিন্তা-প্রকাশের উঠানে প্রবেশ করতে পারে এভাবে- 'বাশিলার ঘাটে বাঁশঝাড়ের নিচে দাঁড়িয়ে স্থিরচোখে তাকিয়ে-থাকা/ ডলি খালা-/ কতদিন হলো?/ হয়তো প্রায় পঁচিশ বছর; কিংবা তার সামান্য কিছু কম/ একবার বাপন চক্রবর্তীর কবিতায় পড়েছিলাম- 'বনগাঁ লাইনে বেঁচে ওঠে/ চাঁপাবউদির শরীর';/ আচ্ছা, ডলি খালা, তোমার শরীর কি সেদিন মৃত ছিল? অথবা অচল?/ আমারও ঠিক মনে পড়ে না/ কিংবা, রেলস্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় তুমি গভীর চোখ আমার চোখে যখন/ মেলে ধরেছিলে/ তখন কি তোমার শরীর জেগে উঠেছিল গোপনে?/ সে সব কতদিন আগেকার কথা, মনে আছে, ডলি খালা?/ একদিন সন্ধ্যায় ইলেকট্রিসিটি অফ হলে তুমি ভয় পেয়েছিলে/ আঁকড়ে ধরেছিলে আমার শরীর/ আমার ভেতর তখন মরা বাঁশের বাঁশি ভেদ করে কালো মেঘের বৃষ্টি/ নেমেছিল- যতদূর মনে পড়ে;/ কেবল এইটুকু ভাবতে পারি।/ আজ এতকাল পর তোমাকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে-/ সত্যিই কি সেদিন ওই হঠাৎ নিঝুম অন্ধকারে ভয় পেয়েছিলে তুমি?' নন্দনতত্ত্ব ও সাহিত্য; সাহিত্য ও নন্দনতত্ত্ব- যেভাবেই বলি না কেন, মানুষের বাঁচার উপাদান হিসেবে এই দুটি শব্দ ও ভুবনকে আমরা বাদ দিতে পারি না কিছুতেই। ভেবে দেখুন তো, প্রকৃতির মতো অসামান্য শোভা থাকতে, এই সমুদ্র-নদী, পর্বত-আকাশ প্রভৃতির অপরূপ শোভা থাকতে মানব মনের নন্দন-ভাবনা ও তা প্রকাশের প্রয়োজনটা কেন পড়ল? সবই তো রয়েছে চারপাশে- অভাবটা তাহলে কিসের? পেটের? না মনের? আর হঁ্যা। নন্দনের সকল কারবার ও পদ্ধতি ওই মনের ভেতরবাড়ির অলিতে-গলিতে সীমাবদ্ধ ও প্রসারিত। মন যার কাছে প্রধান্য পায়নি, শরীরকে সে চিনতে পারেনি কখনো। আর মন ও শরীর যেখানে বিবেচনার বাইরে, সেখানে সাহিত্য এবং নন্দনতত্ত্ব দূরের বাতিঘর মাত্র!