কবির দাবি

প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

শুকদেব মজুমদার
আমি যদি পশুত্বের- পচনের কথা ভাবী তাহলে হয়তো আর আমি কবিতা লিখতে পারবো না- উৎসাহ হারিয়ে ফেলবো- চারদিকে কেন এত অবিরল অনমনীয় আনাগোনা এদের অনাহত? হায়! কবিতা লিখতে কি কিছুটা পলায়নপর হতে হয়? সব শুভবাদিতা কেন গল্পে খুঁজতে হয়, কিংবা গোলকধামে? কিংবা খুঁজে পেলেও মর্তধামে তা ফুটপাথের পুঁথির একটি ছেঁড়াপাতা হয়? তাই জ্বলে উঠতে হয়, কিন্তু জীবন্ত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ হয়ে কতদিন আর থাকা যায়? একটি ফুল যখন পিষ্ট হয় হৃষ্ট কোনো শিশুর মুখ যখন হায়নারা ছিনিয়ে নিয়ে যায় সত্যেরা কেবলি মিথ্যের থাবা খেয়ে যায় মন্দদের দারোয়ান হয়ে ভালোদের থাকতে হয় বা লোমশ কালোদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয় দ্বিধা-থতোমতো ভীত তাদের, অন্দরে অন্ধকার বাণিজ্য চলতে থাকে চিরকাল রমরমা- একটি মনোজ্ঞ মুখোশের অন্তরালে থেকেই যায় মানুষ সারমেয় বা শিম্পাঞ্জি হয়ে কমবেশি সভ্যতার পঞ্জি-পুঁথি মিলিয়ে তাহলে কী তুলনামূলক আলোচনা করবো তাদের অবস্থান- অগ্রগতির? চাঁদ-ফুল-পাখিদের দরবারের দূত হয়ে কিংবা কঠিন ক্যাকটাস বা কাঁকড়া-কচ্ছপ-কুমিরের আবছা-আবডাল কিছু জলছাপ বা ছাপচিত্র অংকন করে কতটা উপকার করতে পারল এ পর্যন্ত কবিরা? কবিরা কারা? এরাই কি কেবল কবি? এ পৃথিবীর তাবৎ মধুভুক- অমৃতভুক মানুষই তো কবি একজন শিল্প-অন্ত মৌন নীলের ইশারায় কাঁপা মানবিক- ন্যায়বান মানুষই তো কবি, তাদের দড় অবস্থানের সুব্যবস্থার দাবি- গানই তো কবির কবিতা, আর তার গায়কের নামই তো কবি। আমি এক কবি- পশুত্বের নয়- পচনের নয়, পাখিদের- ফুলেদের গান গাইতে দাও আমাদের।