মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সীতাকুন্ডে অনলাইন ব্যবসায় সফল মুনমুনসহ ৫০ নারী উদ্যোক্তা

সবুজ শর্মা শাকিল
  ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

মুনমুন ভূঁইয়া একজন গৃহিণী। করোনাকালের শুরুতে স্বামীর অনুপ্রেরণায় মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। খুলেছেন মুন কালেকশন নামে একটি ফেসবুক পেজ। পেজে প্রতিদিন কোনো না কোনো সময়ে লাইভে নিয়ে আসতেন তার নিত্য-নতুন পণ্য (ত্রি-পিস, শাড়ি, বেডশিট ও প্রসাধনীসহ নানা পণ্য)। আট মাসের কম সময়ে তার মূলধন এখন ৯০ হাজার টাকায় পৌঁছেছে। আর তার এ নতুন ব্যবসায় সহযোগিতা করেছিলেন শ্বশুর-শাশুড়ি, স্বামী ও ননদরা।

সীতাকুন্ডের মাদামবিরিহাট জাহানাবাদ গ্রামের মিজানুর রহমানের স্ত্রী মুনমুন তার এ সাফল্যের কথা তুলে ধরেছেন শনিবার সীতাকুন্ড উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনলাইন উদ্যোক্তদের এক মিলনমেলায়।

অনলাইনের এরকম ৪০ নারীসহ ৫০ জন উদ্যোক্তা এ মিলনমেলায় অংশ নিয়েছেন। তারা অনলাইনে গ্রাহকদের চাহিদার বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন। জানিয়েছেন কীভাবে অনলাইনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। সৃষ্টি করা যায় নতুন নতুন উদ্যোক্তা।

আরেক নারী উদ্যোক্তা সাজেদা সাজি মাত্র ৫ হাজার টাকা পুঁজিতে শুরু করেন অনলাইনে ঘরে বানানো কেক পিটা, মধুভাতসহ নানা খাদ্যসামগ্রীর ব্যবসা। ফেসবুকে 'ফাইজান্স কেক শপ' নামে একটি পেজ খোলেন তিনি। এছাড়া তার নিজের সাজেদা সাজু নামেও একটি ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্ট রয়েছে। তিনি বলেন, অনলাইনে ফেসবুক ও পেজে অর্ডার করলেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার স্বামী আমজাদ হোসেন চাহিদামতো খাদ্যপণ্য ডেলিভারি দিয়ে আসতেন। মাত্র কয়েক মাসে তিনি এ খাদ্যপণ্য বিক্রি করে এখন তার পুঁজি ৫০ হাজার টাকা দাঁড়িয়েছে।

সফল নারী উদ্যোক্তা মুনমুন ভূঁইয়া ও সাজেদা সাজি জানান, পরিবার ও স্বামীর ইচ্ছাতে নিজের বাসায় বসে ফেসবুকে ব্যবসার নতুন এ উদ্যোগ চালু করি। এতে প্রথম থেকেই বেশ সাড়া পাওয়া যায়। ক্রেতারাও ঘরে বসে পণ্য পছন্দ করে কল করে অথবা খুদে বার্তা পাঠিয়ে পছন্দের পণ্যটি হাতে পান। এখন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি বলেই মনে হয়। তাদের মতে, ক্রেতার চাহিদাকে গুরুত্ব দিতে হবে। ঢাকা বা ঢাকার বাইরের ক্রেতার সন্তুষ্টি ও বিশ্বাস অর্জন করতে না পারলে এ ব্যবসায় ভালো করা যায় না।

সীতাকুন্ড উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ মিলনমেলায় প্রধান অতিথি উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, ফেসবুককে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে স্বল্প পুঁজিতেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠছেন সীতাকুন্ডের নারীরা। নারী উদ্যোক্তাদের কেউ পোশাক, কেউ গয়না, কেউ হাতে তৈরি জিনিস, কেউ তৈরি খাবারসহ নানা পণ্য বিক্রি করছেন। অনেকে দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরার কাজ করছেন। কেউ শৌখিন পণ্য নিয়ে ব্যবসায় নেমেছেন। এই নারীরা শিক্ষিত। সংসারের চাপসহ নানা সমস্যায় অনেকের পক্ষে চাকরি করা সম্ভব হয়নি। অনেকে নিজে কিছু করবেন বলে বদ্ধপরিকর। ফলে সংসার সামলানোর পাশাপাশি স্বাধীন এ ব্যবসায় আগ্রহ বাড়ছে নারীদের। তিনি আরও বলেন, সরকার যুবকদের উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও সহজশর্তে ঋণসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এরকম অনলাইন উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও ঋণের ব্যবস্থা করার আশ্বাসও দেন তিনি।

এনজিও ইপসার প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে। তাদের সার্বিক সহযোগিতায় ইপসা কাজ করছে। প্রয়োজনে তাদের আর্থিক ঋণের সহায়তাও দেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে