বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আজমিরী খানমের ভিন্নধর্মী উদ্যোগ

সোহেল রানা
  ০১ মার্চ ২০২১, ০০:০০

করোনার মধ্যে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় যখন বন্ধ তখন তিনি সময়কে কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলেছেন ভিন্নধর্মী পণ্যের কারখানা। আজমিরী খানম নামের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের টু্যরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যাজমেন্টের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আজমিরী পরিত্যক্ত নারিকেলের খোল দিয়ে তৈরি করছেন ডাউলওড়ং, চায়েরকাপ, ফুলের টব, বাটি, চামচ, ল্যাম্প, শোপিচ, পাখির বাসা, গলার মালা, হাতের আংটি, পয়সা জমানোর ব্যাংকসহ নানা ইউনিক পণ্য। যা দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও পরিবেশবান্ধব। ফলে দিন দিন চাহিদা বেড়ে চলেছে তার উৎপাদিত পণ্যের। এই নারিকেলের খোল বাংলাদেশের একেক এলাকায় একেক নামে পরিচিত। নারিকেলের মালোই, মালা, নারিকেলের আচা, নারিকেলের আইচাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক নাম রয়েছে মালোইর। ফেলে দেওয়া এই খোলকে শিল্পে রূপ দিয়েছেন আজমিরী। তৈরি করেছেন নানা ডিজাইন। রূপ দিয়েছেন বাস্তবে। নারিকেলের খোল দিয়ে তৈরি হয়েছে নানা রকম মনোহারী পণ্য। তার তৈরি করা নারিকেলের খোলের শোপিচ শোভাবর্ধন করছে বিত্তবানদের রুমে। আর নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন মধ্যবিত্তসহ সবশ্রেণির মানুষ। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আজমিরী খানমের ছোট দুটি ভাই রয়েছে। তিনিই তার পরিবারের বড় সন্তান।

আজমিরী খানম কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি এবং কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ২০১৬ এইচএসসি পাস করেন। ২০১৭-১৮ সেশনে ইসলামী বিশ্ব্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। নিজের করা টিউশনির টাকা দিয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু করেন নারিকেলের খোল দিয়ে উৎপাদন করা পণ্যের ব্যবসা। অনলাইনে অদ্যন্তিকা নামের একটি পেজ খুলে পোস্ট করতে থাকেন বিভিন্ন পণ্যের ছবি। বিক্রি শুরু হয়ে যায় ভালোভাবেই। করোনার মধ্যে গোটা বছরে তিনি বিক্রি করেছেন প্রায় ৩ লাখ টাকার পণ্য। উৎপাদিত পণ্যগুলো ভিন্নধর্মী হওয়ায় অনেক সাড়া পান। সারাদেশেই কুরিয়ারের মাধ্যমে সরবরাহ করছেন এসব পণ্য। আজমিরী খানম জানান, কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার প্রাচীন বাসিন্দা তার পরিবার। বাবা আতিয়ার রহমান একজন সফল ব্যবসায়ী। লগডাউনের মধ্যে তার মায়ের মানসিক সহযোগিতায় আজমিরী গড়ে তোলেন নারিকেলের খোল দিয়ে তৈরি করা বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা। এখন তার ব্যবসাটি শিল্পে রূপ নিয়েছেন। তার কারখানায় এখন কর্মীর সংখ্যা ৫ জন। তিনি জানান, ভবিষ্যতে শতাধিক নারীর কর্মসংস্থানের স্বপ্ন থেকে তিনি কারখানাটি শুরু করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে