বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নারীরাই হয়ে উঠছেন কৃষির প্রাণ

ডক্টর নাজনীন আহমেদ
  ১৭ মে ২০২১, ০০:০০
আপডেট  : ১৭ মে ২০২১, ১৪:১৭

কৃষিতে নারীর ভূমিকা মৌলিক। শ্রম জরিপ ২০১৬-১৭ অনুযায়ী নারীদের কর্মসংস্থানের ৬০ ভাগই ঘটে কৃষিতে। বাংলাদেশের অনেক স্থানে কৃষিকাজে নারীদের প্রধান পেশা বিভিন্ন রকম। নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী যেমন- সাঁওতাল, চাকমা, গারো নারীদের বেশির ভাগেরই প্রধান পেশা কৃষি। কেবল শস্য কৃষি নয়, বরং মৎস্য চাষ, হাঁস-মুরগি পালন, পশুপালন ইত্যাদি কৃষির নানাদিকে এ নারীদের বিচরণ দৃশ্যমান। গৃহভিত্তিক শাক-সবজি কৃষি উৎপাদন কাজেও নারীরা দিনের একটি উলেস্নখযোগ্য সময় ব্যয় করে থাকে। কিন্তু কৃষিতে নারীর এ অবদান খুব একটা স্বীকার করা হয় না। এমনকি কৃষক বলতে যাদের কথা আমাদের চোখে ভেসে ওঠে, সেখানে নারীর অবস্থান তেমন উলেস্নখযোগ্য নয়। এর একটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো, কৃষি উপকরণের জন্য কিংবা উৎপাদিত ফসল বিক্রির ক্ষেত্রেও নারীদের অংশগ্রহণ সীমিত। কৃষি উৎপাদনের মূল কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলেও বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে সীমিত সংযোগের কারণে কৃষক হিসেবে নারীর স্বীকৃতি যেমন নেই, তেমনি কৃষিপণ্য উৎপাদনে সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে নারী যে ভূমিকা পালন করে থাকে সেটিও স্বীকৃতির বাইরেই থেকে যায়। তাই কৃষিকাজের নানা পর্যায়ে বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে নারীর সংযোগ ঘটাতে পারলে কৃষিকাজে তাদের অবদানের স্বীকৃতি যেমন হবে, পাশাপাশি কৃষিতে নিয়োজিত নারীর দক্ষতা, কৃষি উৎপাদনে তার ভূমিকা বৃদ্ধি পাবে, আবার নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদান রাখবে। বর্তমান প্রবন্ধটিতে কৃষিতে নিয়োজিত নারীকে কী করে বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত করা যায়, তার কতিপয় উপায় অনুসন্ধান করা হয়েছে। সেই উপায় অনুসন্ধান করতে গিয়ে কৃষির সরবরাহ চেইনের বিভিন্ন পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণের অবস্থাও তুলে ধরা হয়েছে। প্রবন্ধটি গত বছর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় একটি গবেষণার কাজে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে গিয়ে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা হয়েছে। যেসব জেলায় যাওয়া হয়েছিল, সেগুলো হলো ঝিনাইদহ, বাগেরহাট, খুলনা, নড়াইল, যশোর ও বরিশাল। বর্তমান প্রবন্ধে মূলত নানা রকম শস্য কৃষির ওপর পর্যালোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন শস্যের ক্ষেত্রে কৃষি উপকরণ সংগ্রহ এবং চূড়ান্ত পণ্য বিক্রয়ে বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে সংযোগ ভিন্ন ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। বিভিন্ন রকম ফসল উৎপাদনে নারীদের ভূমিকাও বিভিন্ন রকম হয়। যেমন ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে নারীরা মূলত যে কাজ করে, সেগুলো হলো রোপণের জন্য বীজ প্রস্তুত করা, তবে কোনো কোনো এলাকায় বীজ বপনেও তারা অংশ নেয়। পরবর্তী সময়ে ধান তোলা এবং ধানের প্রক্রিয়াজাতকরণে নারীরা বড় ভূমিকা পালন করে। আবার নড়াইল জেলায় দেখেছি জমিতে সার দেওয়ার কাজে নারীরা অংশ নিয়ে থাকে। ভুট্টা উৎপাদনে নারীদের বড় অংশগ্রহণ থাকে আগাছা পরিষ্কার করায়। তাছাড়া ফসল তোলা এবং ফসল তোলার পরবর্তী কাজে যেমন ভুট্টার বীজ আলাদা করা, সেগুলো মজুত করা ইত্যাদি কাজে নারীদের অংশগ্রহণ লক্ষণীয়। জমির মাটি প্রস্তুত করা, সেচ দেওয়া সার দেওয়া ইত্যাদি কাজ পুরুষরা করে। ভুট্টার ক্ষেত্রে মেয়েরা যে কাজগুলো করে থাকে সেগুলোতে অনেক সময় ব্যয় করতে হয় এবং অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে কাজটি করতে হয়। কিন্তু দেখা যায় চূড়ান্ত ফসল বিক্রিতে মেয়েরা অংশ নেয় না। তারা এক্ষেত্রে নির্ভর করে পরিবারের পুরুষ সদস্যের ওপর। যেসব পরিবারের সদস্য নেই, সেই পরিবারের নারীরা প্রতিবেশীদের ওপর নির্ভর করে থাকে। এসব কৃষক সাধারণত খুব ক্ষুদ্র কৃষক। তাদের উৎপাদন সামান্য, ফলে সেগুলো সংগ্রহে ফড়িয়াদের আগমন ঘটে না, এগুলো বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয়। দক্ষিণাঞ্চলের বেশকিছু এলাকায় সূর্যমুখীর চাষ হয় এবং এই চাষে অনেক নারী অংশগ্রহণ করে থাকে। তারা চাষের জমিতে সার দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার করা, ফসল তোলা ও ফসল তোলার পর সূর্যমুখীর বীজ সংগ্রহের পুরো প্রক্রিয়ায় বড় ভূমিকা রাখে। সূর্যমুখীর ক্ষেত্রে ফসল ওঠানোর পর তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যেই শুকনো ফুল থেকে বীজ ছাড়ানোর কাজটি করতে হয় এবং দ্রম্নততার সঙ্গে এ কাজ শেষ করতে হয়। ফলে এ সময়টিতে নারীদের ব্যস্ততা অনেক বেশি বেড়ে যায়। এখানে বলে রাখা ভালো, কৃষিকাজের ক্ষেত্রে মাঠে গিয়ে কৃষিকাজে অংশগ্রহণ করে তুলনামূলকভাবে দরিদ্র কৃষক পরিবারের নারীরা। যে নারীরা কৃষিকাজে সরাসরি সম্পৃক্ত, তারা যদি কৃষির বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে পারত তাহলে তাদের আয় বৃদ্ধি পেত। এক্ষেত্রে কৃষিতে নিয়োজিত বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের সরবরাহ চেইনে অধিক সংখ্যক নারীকে সম্পৃক্ত করতে পারে। যেসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নানা ধরনের কৃষি উপকরণ, বীজ-সার-কীটনাশক-ওষুধ ও কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদির ব্যবসায় নিয়োজিত, তারা তাদের লোকাল ডিলার হিসেবে কিংবা পণ্যের চূড়ান্ত ক্রেতা হিসেবে পুরুষদের সঙ্গে ব্যবসা করে থাকে। কিন্তু দেখা গেছে, নারীদের এসব কাজে সম্পৃক্ত করতে পারলে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোও অনেক লাভ করতে পারবে, তাছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন হবে। কৃষি থেকে অর্জিত আয় তারা সরাসরি নিজে নিতে পারবে। কারণ সাধারণত কোনো একটি কোম্পানির কৃষি উপকরণ পণ্যে আস্থা তৈরি হলে নারী কৃষকরা তা থেকে সহজে সরে যায় না। বরং ওই ব্র্যান্ডের পণ্য ব্যবহার করতে থাকে। কৃষি উৎপাদন বহুল এলাকায় নানা ধরনের কৃষি উপকরণ তৈরি ও বাজারজাত করে এমন বহু কোম্পানি কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করতে কৃষকদের নানা গ্রম্নপে বিভক্ত করে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়। যাতে কৃষিপণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে নারীরা তাদের মতামত দিতে পারে এবং অংশ নিতে পারে। তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে বিভিন্ন মোবাইলভিত্তিক অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে নারীদের কৃষিপণ্যের বাজারের সঙ্গে সহজেই সম্পৃক্ত করা সম্ভব। এসব অ্যাপের মাধ্যমে কৃষকদের নানা কৃষি উপকরণ ও চূড়ান্ত ফসলের মূল্য সরবরাহের অবস্থা ইত্যাদি তথ্য দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রেই কৃষিতে আকস্মিক কোনো সমস্যা দেখা দিলে অনলাইন সাহায্য পাওয়া যায়। এসিআই কোম্পানির 'ফসলি' অ্যাপ কিংবা কৃষিপণ্যের অনলাইন বাজার শপারু এ রকম বিভিন্ন উদ্যোগ সামাজিক নানা বাধা কাটিয়ে কৃষি উপকরণ ও পণ্য বাজারজাতে নারীর অংশগ্রহণকে সহজ করার উপায় দেখাচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় আই সোশ্যাল নামক প্রতিষ্ঠানের 'কৃষি কল্যাণী' নামক উদ্যোগে কৃষিপণ্যের সাপস্নাই চেইনে নারীরা অংশ নেয় এবং নানা কৃষি উপকরণ নারী কৃষকদের ঘরেই তারা বহন করে নিয়ে যায় কিংবা নারী কৃষককে বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে সংযোগ ঘটিয়ে দিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তারা কাজ করে। কল্যাণীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী কৃষকদের সঙ্গে ফসলের নানা বিষয়ে কথা বলে, কোনো রকম সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নারী কৃষকদের সংযোগ ঘটিয়ে দেয়, ফলে এ বিষয়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করে নারী কৃষকরা নিজেরাই তাদের কৃষিপণ্যের ব্যাপারে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে পারে অথবা মতামত দিতে পারে। আমরা যখনই বলছি, নারীকে বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে, সেখানে অনিবার্যভাবেই কৃষিপণ্যের যে কোনো ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে তারা কী করবেন, সেই ব্যবস্থার কথা ভাবতে হবে, অর্থাৎ আরও বেশি সংখ্যক নারীকে কৃষিকাজের বিভিন্ন দিকে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে অবধারিতভাবে দরকার সহজ শর্তের কৃষি বীমা। খুব সীমিত আকারে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় কিছু বেসরকারি কোম্পানি শস্য বীমা পাইলটিং করছে। কিন্তু এর ব্যাপক প্রসার দরকার। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় নারীরা ব্যাপকভাবে সরাসরি কৃষিকাজে সম্পৃক্ত রয়েছে। কিন্তু তারা তাদের কৃষিপণ্যের আয়ের ওপর নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারছে না, কৃষক হিসেবে স্বীকৃতি মিলছে না, পুরুষ কৃষকরাই কৃষিকাজের মূল স্বীকৃতি পেয়ে যাচ্ছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা, স্থানীয় এনজিওদের তৎপরতায় নারী কৃষকরা সংগঠিত হচ্ছেন, পুরো সরবরাহ চেইনে নিজেদের সরাসরি সম্পৃক্ত করার প্রয়াস চালাচ্ছেন। এর সব উদ্যোগ সফল হচ্ছে তা নয়, কিন্তু একটা পরিবর্তনের চিত্র সুস্পষ্ট। এর সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানি যদি তাদের পণ্যের সরবরাহ চেইনে নারী কৃষকদের সম্পৃক্ত করে এবং কৃষিপণ্যের বিপণন, ডিলারশিপ ইত্যাদিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ায়, তাহলে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় একটা বড় ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় দেখেছি, তৎপরতাগুলো চলমান রয়েছে এবং এতে বিপুল সংখ্যক কৃষিতে নিয়োজিত নারী বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছে। কিন্তু এসব এলাকার পুরুষ কৃষকরা এখনো মনে করেন, কৃষির কায়িক পরিশ্রমসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো তারাই করে থাকেন এবং এই কাজে নারীদের অত সম্পৃক্ত হওয়ার দরকার নেই। তবে তাদের মতামত হলো, নারীদের দক্ষতা যদি বৃদ্ধি করা যায় এবং মোবাইল অ্যাপভিত্তিক অনলাইন কৃষিপণ্যের উপকরণের বাজারসহ বিভিন্ন পণ্যের গুণগতমানের ব্যাপারে দক্ষ করে তোলা হয়, তাহলে তারা কৃষিকাজে উৎপাদন বাড়াতে ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে। তাই তারা মনে করেন, সরাসরি বাজারে না গিয়েও নারীদের কৃষিপণ্যের বাজার কার্যক্রমে সংযুক্ত করতে নানা ধরনের অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগকে উৎসাহিত করা উচিত। এ ক্ষেত্রেও শিক্ষিত নারী কিংবা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারে এমন নারী কৃষক দরকার। এমন নেতৃত্ব তৈরি করা দরকার, যাতে একজন প্রশিক্ষিত নারী কৃষক আরও অনেক কৃষকের সঙ্গে কাজ করে তাদের বাজার ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত করতে পারে। বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানি যদি নারীদের কৃষি সরবরাহ চেইনের বিভিন্ন পর্যায়ে বেশি বেশি কাজে লাগায় তাহলে তার মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক দক্ষ কৃষি পণ্য সরবরাহকারী তৈরি করা যাবে, অন্যদিকে কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য অধিক পরিমাণে বিক্রি করতে পারবে। আবার কৃষি উপকরণ সংগ্রহ ও পণ্যের বাজারজাতকরণে নারীকে অংশ নিতে হলে তার আর্থিক সক্ষমতা থাকতে হয় এবং এ কারণে স্থানীয় পর্যায়ের এনজিও এবং বিভিন্ন ব্যাংকে নারী কৃষকের ঋণপ্রাপ্তিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সূর্যমুখী, ভুট্টা ইত্যাদি ফসল উৎপাদনের চাষ করা, সার দেওয়া, সেচ দেওয়া কীটনাশক দেওয়া প্রভৃতি কাজে নারীদের অংশগ্রহণ ব্যাপক। তাই বিভিন্ন কোম্পানি তাদের এ সংক্রান্ত কৃষি উপকরণে নারী কৃষককে তাদের টার্গেট গ্রম্নপ হিসেবে ধরে নিয়ে সেই লক্ষ্যে কাজ করতে পারে। এমনকি ঝিনাইদহ নারী পরিচালিত কৃষিপণ্যের দোকান দেখেছি, যেখানে নারী-পুরুষ উভয় প্রকার কৃষক এসে কৃষি উপাদান ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্যের চূড়ান্ত ভোক্তা হিসেবে কোম্পানিগুলো নারী কৃষককে সম্পৃক্ত করার বিষয়টিও ভাবতে পারেন, এমনকি সরবরাহ চেইনের নানা পর্যায়ে যেমন কৃষি ক্ষেত্র থেকে নানা তথ্য সংগ্রহ, তাদের পণ্যের প্রচারণা, এমনকি বাজারে খুচরা বিক্রয়ের ক্ষেত্রেও নারীদের সম্পৃক্ত করা যায়। খুচরা বিক্রেতা হিসেবে নানা কৃষিপণ্য নারী কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিপুল সংখ্যক নারী কাজ করতে পারে। তবে এরূপ বিক্রেতা হিসেবে কাজ করার মতো নারী খুঁজে পাওয়া খুব সহজ নয়। কারণ এখনো গ্রামগঞ্জে নারীদের বাইরে চলাফেরার পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা বলা যাবে না। তাই নারীদের সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে কিছুটা লেখাপড়া জানা কাজে আগ্রহী নারীকে এরূপ সরবরাহ চেইনে সম্পৃক্ত করা যায়। যেসব নারী বিভিন্ন কৃষিপণ্যের কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি কেনাকাটা করে থাকে কিংবা তাদের কাজে যুক্ত থাকে সেসব নারীর চলাফেরা অনেক সহজ, তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বেশি। পরিবারের নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণে এবং চলাফেরায় নারীরা বেশি স্বাধীনতা ভোগ করে। নানা ধরনের নতুন ফসলের সঙ্গে সঙ্গে কৃষিতে নারীর ভূমিকায় নানা পরিবর্তন আসছে। দরিদ্র পরিবারের কৃষক নারী এখন তাদের পণ্যের গুণগত মান, বাজারমূল্য প্রাপ্তি ইত্যাদির ব্যাপারে সচেতন এবং সরাসরি অংশ নিতে আগ্রহী। নারীরা যদি এভাবে বাজার ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত হন, তাতে কেবল নারীর ক্ষমতায়নই হবে না, উৎপাদনশীলতা বেড়ে কৃষি উৎপাদন নতুন মাত্রা পাবে। ড. নাজনীন আহমেদ : সিনিয়র রিসার্চ ফেলো বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস)

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে