তারুণ্যের বিজয় ভাবনা

লাখো শহীদের বিনিময়ের নাম বাংলাদেশ। প্রকৃতপক্ষে নারীরা মুক্তিযুদ্ধে অনেক বড় সহায়ক শক্তি ছিল। সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে, কখনো বা যুদ্ধক্ষেত্রের আড়ালে। অনাহারী, অধার্হারী ক্ষুধাতর্ মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, কখনও মমতাময়ী মায়ের মতো, কখনো বা বোনের মতো। চরম দুঃসময়ে পাকিস্তানি হানাদারের হাত থেকে রক্ষা করতে নিজেদের ঘরে আশ্রয় দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাদের। পুরুষের পাশাপাশি নারীর বুদ্ধি-বিচক্ষণতা, আন্তরিকতা ও সাহসের ফল স্বাধীনতা। কিন্তু তাদের নীরব এই অবদানের কথা, ঘটনা কখনো কারও তেমন জানা হয়নি। ইতিহাসে নারীকে মূল ধারায় স্থাপন না করার ফলে নারীর প্রকৃত ইতিহাস যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। ফলে নারী-পুরুষের মধ্যকার বৈষম্য এখনো বিদ্যমান। বিশেষ করে অথৈর্নতিক সমতা, কমের্ক্ষত্রে নিরাপত্তা, যৌন হয়রানি, নারীর ক্ষমতায়ন, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের গেঁাড়ামি এসব প্রতিবন্ধকতা। স্বাধীনতার এত বছর পর প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির দিক থেকে কি ভাবছে, কি স্বপ্ন দেখছে দেশকে ঘিরে। এসব নিয়েই তরুণ প্রজন্মের ভাবনার কথা জানাচ্ছেনÑ রুমান হাফিজ

প্রকাশ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শান্তিপূণর্ ও সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ে উঠুক মোমেনা আক্তার ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে লাখো প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামের উৎপত্তি। ৪৭ বছর বয়সী বাংলাদেশ এখন নিজের পায়ে দঁাড়াতে শিখেছে, শুধু দঁাড়াতেই শেখেনি, সে এখন বিশ্বের দরবারে দঁাড়িয়ে বড় বড় জয় আনে। সেই বাংলাদেশ আজ খেলাধুলা, শিক্ষা, সংস্কৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বের খাতায় নাম লেখাচ্ছে। এসবের অবদানে বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি সে সব শহীদকে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের, যারা আজও সাক্ষী হয়ে আছেন এবং থাকবেন। এখন লক্ষ্য হচ্ছে, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। যেখানে নারী-পুরুষ সবাই কঁাধে কঁাধ মিলিয়ে সমানতালে এগিয়ে চলবে। কোনোরকম বঞ্চনা কিংবা ভেদাভেদ থাকবে না। নিজের যোগ্যতা আর কমর্ দিয়েই দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে নিয়ে আসবে সফলতা, সম্মান। তাই তো উঁচু-নিচু, জুলুম-শোষণ, দুনীির্ত-দুঃশাসন, দলীয় সংকীণর্তা প্রভৃতিকে দূরে রেখে শান্তিপূণর্ ও সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। বিজয়ের মাস জন্মের মাস, জন্মের মতোই নিষ্পাপ হয়ে উঠুক বাংলাদেশের প্রতিটি প্রাণ থেকে ধূলিকণা পযর্ন্ত। নিরাপদ হোক নারীর পথচলা নুসরাত জাহান বতর্মানে বাংলাদেশ অনেকাংশে এগিয়ে থাকলেও পিছিয়ে রয়েছে এ দেশের নারীসমাজ। বিজয়ের এত বছর পরও নারীরা পিছিয়ে থাকার কারণগুলো হলোÑ দৃষ্টিভঙ্গি, ধমীর্য় গেঁাড়ামি, অত্যন্ত রক্ষণশীলতা, নিরাপত্তার অভাব, সচেতনতার অভাবসহ আরও অনেক কারণ। দেশের অধের্ক জনগোষ্ঠী হলো নারী, আর এই নারীদের পেছনে রেখে দেশের উন্নতি অসম্ভব। রাজনীতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, খেলাধুলা সবর্ত্রই তারা নিজেদের প্রমাণ করে চলেছেন। ঘর সামলানো থেকে শুরু করে রাষ্ট্র, বিশ্বের নেতৃত্বেও পিছিয়ে নেই নারীরা। তাই বিজয় দিবসে প্রত্যাশা করি এমন একটি নারীসমাজ যে সমাজে থাকবে না কোনো বাধা, নারীরা থাকবে স্বাধীন, দেশ ও আন্তজাির্তক প্রতিটি ক্ষেত্রে থাকবে নারীর পদচিহ্ন, নিরাপদ থাকবে প্রতিটি নারী। .সমান অধিকার নিশ্চিত হোক ফারজানা টুম্পা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অজের্নর দীঘর্ ৪৭ বছর পূণর্ হতে চলছে। এই যে দীঘর্ পরিক্রমা, এখানে স্বাধীনতার স্বাদ নারী কতটা অজর্ন করেছে? এই প্রশ্নের উত্তরে বলব, নারী স্বাধীনতা যতটা না দেয়া হয়েছে এর চেয়ে তার স্বাধীনতাকে খবর্ করা হয়েছে অনেক বেশি। জন্মের পর থেকেই নারীকে একটা নিদির্ষ্ট গÐি বেঁধে দেয়া হয়, যা কিনা তার বিকাশকে করছে বাধাগ্রস্ত। পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া, পছন্দ-অপছন্দ সবকিছুতেই স্পষ্ট হয়ে আছে চরম বৈষম্য। স্বাধীনভাবে কিছু একটা করতে গেলেই শুনতে হয় ‘তুমি মেয়ে, এটা তোমার কম্ম নয়!’ স্বাধীনতার এত বছর পরে যেখানে নারী পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত হবে, কঁাধে কঁাধ মিলিয়ে সমস্বরে প্রতিধ্বনিত হবে তাদের কণ্ঠস্বর। সেখানে নজরে পড়ে বৈষম্যের বেড়াজাল। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা এবং ভেতরকার গেঁাড়ামি নারীকে তার যোগ্য আসনে আসীন করতে পারেনি। বাল্যবিয়ে এখনো গ্রামীণ সমাজে ভালোভাবেই সমাদৃত। একটি সৃষ্টিশীল সমাজ ও রাষ্ট্র বিনিমাের্ণ পুরুষের পাশাপাশি নারীর ভ‚মিকাও যে অনস্বীকাযর্ সেটা উপলব্ধি করার সময় এসেছে।