আমরা তোমাদের ভুলব না

প্রকাশ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

নন্দিনী ডেস্ক
মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামী পথে হেঁটেছিলেন অনেক নারীÑ ছাত্রী, গৃহিণী ও কমীর্ যেমন পেশারই হোক না কেন । যাদের সম্ভাবনা ছিল তারা সাংস্কৃতিক বা সাংগঠনিক সংগঠনের সঙ্গে কাজে নেমে পড়েছিল কিন্তু যে নারীরা বাড়িতে অসুস্থ বা প্রবীণ থাকার কারণে কিংবা দুগ্ধপোষ্য শিশু থাকার কারণে অথবা সংকোচ বা গৃহস্থালি কাজের চাপের কারণে গৃহ ছেড়ে যেতে পারেননি, তারাও সতকর্ হয়ে ওঠেন সংগ্রামের হাতছানিতে। তারা অসীম সাহসে নিজের গৃহকেই বানিয়েছিলেন দুগর্। আশ্রয় দিয়েছিলেন অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে। সেবা করেছেন। খাদ্য দিয়েছেন। নিজেদের গয়না বিক্রি করে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র কেনার টাকা দিয়েছেন। নিজের ভেতরে অসীম সাহসিক উত্থান ঘটেছিল বলেই লাখ লাখ মা তাদের মাতৃস্নেহকে বিসজর্ন দিয়ে সন্তানের হাতে তুলে দিয়েছিলেন অস্ত্র। পাঠিয়েছিলেন দেশের জন্য লড়তে। অনেক বাড়িতেই মেয়েরা বঁটি, দা, কুড়াল, চাকু এসব অস্ত্র মজুদ রাখত আত্মরক্ষার জন্য। সংগ্রামের শুরুর দিকে যখন নারী সংগঠনগুলো নানা মিছিল মিটিংয়ের আহŸান করত তখন অনেক মায়েরা হাতের কাছে পাওয়া ঝাড়–টা ও লাঠিটা নিয়ে নেমে যেতেন রাজপথে। আগ্নেয়াস্ত্রভিত্তিক সশস্ত্র যুদ্ধ মোকাবেলায় যদিও এগুলো প্রতীকী ছাড়া কিছুই ছিল না; কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের মনের ভেতর তৈরি হতে লাগল অকুতোভয় হওয়ার আরও বীরত্ব দেখানোর প্রস্তুতি। শহরের শিক্ষিত মা-বোনেরা না হয় সোচ্চার ছিলেন মাতৃভ‚মির অধিকার নিয়ে কিন্তু গ্রামের অশিক্ষিত অন্তঃপুরবাসী মহিলারা? তারা কী অসহায়ত্বের বলি হয়ে নীরবে সব সহ্য করেছিলেন? না। ইতিহাস বলছেÑ ওই অশিক্ষিত ভীতু বাঙালি নারীরাই শেষ পযর্ন্ত তাদের সক্ষমতার চেয়েও বেশি জড়িয়েছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে।