নতুন বছরে নতুন প্রত্যাশা

দেখতে দেখতে চলেই গেল দুই হাজার আঠারো। দুই হাজার ঊনিশ কড়া নাড়ছে দরজায়। হাতছানি দিয়ে ডাকছে নতুন সকালের সোনালি সূযর্। আহŸান জানাচ্ছে নতুন করে দৃঢ় প্রত্যয়ে নব-উদ্যমে পথ চলার। বাংলাদেশ সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলছে প্রতিনিয়ত। আর সেই অগ্রযাত্রায় পুরুষের পাশাপাশি অবদান রাখছে নারীরাও...

প্রকাশ | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

মাহবুব এ রহমান
দেখতে দেখতে চলেই গেল দুই হাজার আঠারো। দুই হাজার ঊনিশ কড়া নাড়ছে দরজায়। হাতছানি দিয়ে ডাকছে নতুন সকালের সোনালি সূযর্। আহŸান জানাচ্ছে নতুন করে দৃঢ় প্রত্যয়ে নব-উদ্যমে পথ চলার। বাংলাদেশ সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলছে প্রতিনিয়ত। আর সেই অগ্রযাত্রায় পুরুষের পাশাপাশি অবদান রাখছে নারীরাও। বাড়ছে নারী ক্ষমতায়নের হার। কমছে লিঙ্গ বৈষম্যও। যা দেশের অগ্রগতির জন্য ইতিবাচক। ওয়াল্ডর্ ইকোনমিক ফোরাম প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক লিঙ্গ বিভাজন সূচক প্রতিবেদন-২০১৬’ অনুযায়ী ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭২তম। এই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পরবতীর্ অবস্থান ভারতের। তাদের অবস্থান ৮৭তম। এরপর রয়েছে শ্রীলঙ্কা (১০০), নেপাল (১১০), মালদ্বীপ (১১৫), ভুটান (১২১) ও পাকিস্তান (১৪৩)। প্রতিবেদনে বিভিন্ন সূচক ধরে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে। এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। এ ছাড়া ‘অথৈর্নতিক অন্তভুির্ক্ত এবং সুযোগ’ শীষর্ক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান হয় ১৩৫তম। নারী-পুরুষের শিক্ষার সুযোগের সূচকে বাংলাদেশ রয়েছে ১৪৪তম অবস্থানে। পযাের্লাচনা করলে দেখা যায়, ২০০৭ সাল থেকে টানা ৯ বছর লিঙ্গবৈষম্য কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে মোটামুটি ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করছে বাংলাদেশ। যেমন ২০০৭ সালে বিশ্বের ১২৮টি দেশের মধ্যে ১০০তম, ২০০৮ সালে ১৩০টি দেশের মধ্যে ৯০তম, ২০০৯ সালে ১৩৪টি দেশের মধ্যে ৯৩তম, ২০১০ সালে ১৩৪টি দেশের মধ্যে ৮২তম, ২০১১ সালে ১৩৫টি দেশের মধ্যে ৬৯তম, ২০১২ সালে ১৩৫টি দেশের মধ্যে ৮৬তম, ২০১৩ সালে ১৩৬টি দেশের মধ্যে ৭৫তম, ২০১৪ সালে ১৪২টি দেশের মধ্যে ৬৮তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। পাশাপাশি প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও শীষর্ পযাের্য় কাজ করে চলেছেন নারীরা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী, বতর্মানে প্রশাসনের শীষর্ পযাের্য় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী আছেন। তবে উপসচিব থেকে সচিব পযাের্য় নারীর সংখ্যা এক শতাংশ বা তারও কম। দেশে সরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১০ লাখ ৯৬ হাজার ৩৩৪টি। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ১৩৩ জন। ১৯৭৪ সালে কমের্ক্ষত্রে নারী ছিল ৪ শতাংশ, এখন তা ৩৩ শতাংশ হয়েছে। অথর্নীতির চাকা সচল রাখতেও অবদান রয়েছে নারীদের। বিবিএসের সবের্শষ ২০১৬ সালের জরিপে দেখা যায়, দেশে ৫ কোটি ৩১ লাখ কমর্জীবীর মধ্যে ১ কোটি ৬২ লাখ নারী। প্রবাসে বিভিন্ন পেশায় কমর্রত ৭৬ লাখ প্রবাসীর মধ্যে মাত্র ৮২ হাজার ৫৫৮ জন নারী। (তথ্য সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৮ মাচর্ ২০১৮) তারপরও নারীর অগ্রযাত্রায় কিছু প্রতিবন্ধকতা থেকেই যায়। উন্নতি আর অগ্রগতির ক্ষেত্রে নারীরদের পোহাতে হয় নানা কাঠ খড়। ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অধের্ক তার করিয়াছে নারী অধের্ক তার নর ।’ কবি নজরুল ইসলামের সেই কবিতার মমর্ বাণীকে উপলব্ধি করে এগিয়ে চলুক আমাদের সমাজ, জাতি এবং দেশ। নতুন বছর আসুক নিয়ে নতুন নতুন স্বপ্ন-আশা। পৃথিবীর সবর্ত্রই ছড়িয়ে দিক শুধুই ভালোবাসা আর প্রশান্তি। বছর শেষের ঝরা পাতা দূরে নিয়ে যাক নিকষ কালো। নতুন বছরের নতুন দিনের শুভ আগমনের সূচনালগ্নের সবার মন থেকে শত দুঃখ-কষ্ট, রাগ-অভিমান, হিংসা-বিদ্বেষ আর জরাজীণর্তা সব মুছে যাক। নতুন বছরের প্রতিটি দিনের উদীয়মান নতুন সূযর্ নিয়ে আসুক আনন্দের আগমনী বাতার্। প্রতিটি সকাল ভরে উঠুক সুন্দর ও আশাময়।