নারীর পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যায়ন

প্রকাশ | ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

তাসনিম মুনতাহা
আমাদের সমাজ বৈষম্যমূলক। এ সমাজে মেয়েরা দফায় দফায় বৈষম্যের শিকার হয়। প্রথম বৈষম্য শ্রেণিগত, দ্বিতীয় বৈষম্য নারী-পুরুষের। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র ঘরের মেয়েদের তো কথাই নেই। বিত্তবান পরিবারেও মেয়েদের প্রতি আচরণ বৈষম্যমূলক। তাই মেয়েদের সঙ্গে শত্রæতা করে গোটা সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা। সমাজে যখন সামন্তবাদী ব্যবস্থা ছিল, তখনো নারী ওই ব্যবস্থার দ্বারা নিযাির্তত হতো। এখন যখন পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় আমরা পেঁৗছে গেছি, তখনো নারী নিযাির্তত হচ্ছে। শাশুড়ি ও গৃহবধূ উভয়ই এ ব্যবস্থার শিকার। কিন্তু বিক্ষোভ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে না নিয়ে চলে যাচ্ছে পরস্পরের বিরুদ্ধে। নাটকের সংলাপ ও কথোপকথনে আমরা উল্লেখ পাই, নারীর শত্রæ নারী নিজে। এ ধারণার সামাজিক ভিত্তি আছে। তা হলো, মেয়েদের নিজেদের মধ্যে ঝগড়া দেখা যায়। শাশুড়ি ঘরের বউয়ের প্রতি বিরূপ আচরণ করে। ঘরের বউও শাশুড়িকে পছন্দ করে না। কমের্ক্ষত্রে মেয়েরা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে কথা বলে। বোনে-বোনে ঝগড়া হয়। কিন্তু এই যে ধারণা, তা অবশ্যই ভ্রমাত্মক। ভ্রান্তÑ এর কারণ এবং আরও যা আপত্তিকর তা হলো আসল শত্রæকে আড়ালে রাখা। নিমর্ম সত্য হলো, পরিসংখ্যান বলে, শতকরা ৮০ জন মেয়ে নিযাির্তত হচ্ছে। এ নিযার্তন গৃহে, কমের্ক্ষত্রে, পথে-ঘাটেÑসবর্ত্রই ঘটে। যেখানে সরাসরি নিযার্তন নেই, সেখানেও বৈষম্য আছে। মেয়েরা এখন বিপুলসংখ্যায় কমের্ক্ষত্রে নিয়োজিত। তাদের উপস্থিতি সবর্ত্রই লক্ষ্য করার মতো। কিন্তু বেতন ও মজুরির ব্যাপারে নারী-পুরুষের পাথর্ক্য বেশ স্পষ্ট। তার পরও একজন কমির্নযুক্ত মেয়েকে পারিবারিক কাজ করতে হয়। পুরুষের তুলনায় এ কাজের পরিমাণ অধিক। কিন্তু এ গৃহকমের্ক যতই আদশাির্য়ত করা হোক না কেন, এটা ভয়ানকভাবে একঘেয়ে ও ক্লান্তিকর। কিন্তু এই যে প্রতিদিনের কাজ, এর কোনো মূল্যায়ন করা হয় না। অধিক মূল্যায়নের তো প্রশ্নই ওঠে না; পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যায়নও নেই।