নববর্ষ ও নারীর মর্যাদা

প্রকাশ | ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

তাসলিমা আক্তার লিমু
বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ ১৪৩১। প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস বৈশাখের প্রথম দিনটি বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ হিসেবে পালন করা হয়। এ দিনটি ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে পালন করে বাঙালি জাতি। নতুন পোশাক, খাওয়া দাওয়া, আড্ডা, বাংলা গান, বিভিন্ন সাহিত্য উৎসবের মাধ্যমে এ দিনটিতে আনন্দে মেতে উঠে সারাদেশব্যাপী বাঙালি জাতি। বাঙালির এ দিনটি যে কেবল আনন্দের তা নয়, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে বাঙালি যে পরস্পর প্রাণের জাতি একথাও স্মরণ করিয়ে দেয়। সেইসঙ্গে এ দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের যেন তুলে ধরে পহেলা বৈশাখ। 'মুছে যাক গস্নানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।' বছরের প্রথম দিনে কবিগুরুর এমন আকুতি যেন আমাদের বাঙালি সত্তাকে প্রতি বছর নিয়ে যায় ঐতিহ্যের দিকে। এদিন যেন বাঙালিকে পেছনে ফেলে আসা শোক, দুঃখ, হতাশা সবকিছু ভুলে এক কাতারে দাঁড়িয়ে প্রত্যাশা করে আসন্ন বছর যেন হয় সুখের, সবকিছু যেন হয় কল্যাণময়। বর্তমান সামাজিক অবকাঠামোর পরিবর্তন, প্রযুক্তির অতিমাত্রায় অপব্যবহার, পশ্চিমা সংস্কৃতির মিশ্রণ বিভিন্ন কারণে আজ হুমকির মুখে আমাদের সংস্কৃতি। বাংলা সংস্কৃতি, ঐতিহ্য চর্চা থেকে দূরে সরে যেন না যায় আমাদের তরুণ প্রজন্ম। নববর্ষের প্রথম দিনের মতো সারাবছর তরুণ প্রজন্ম যেন তুলে ধরে তাদের প্রাণের সংস্কৃতি। তরুণ প্রজন্ম যেন বাংলায় ভালো করে কথা বলে, বাংলা উচ্চারণ ভালো জানে, বাংলা গান শোনে, তাদের পোশাকে যেন দেশের সংস্কৃতি ছোঁয়া দেখা যায়, পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত না হয়ে তরুণদের দেশি সংস্কৃতিতে বন্দনা বাঙালিয়ানা উৎসবে পরিণত হোক, এটাই যেন হয় প্রাণের নববর্ষের শিক্ষা, কেবল একদিনের জন্যই যেন আমরা সবাই মনে প্রাণে বাঙালি না হই। পহেলা বৈশাখকে বুকে ধারণ করে, এ দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে এ দেশের সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা থেকে তরুণ প্রজন্ম ও সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে বাংলা ভাষায় বিকাশ, বাংলার সংস্কৃতি বিকাশে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপশি নারীর মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে নারী স্বাধীনতা। বাংলা সংস্কৃতিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে বারবার তুলে ধরতে হবে। বাংলাকে সাজাতে হবে আর এখান থেকেই বীজবপন করতে হবে বাংলার সংস্কৃতিকে ভালোবাসার। তবেই প্রকৃত প্রাণের স্পন্দন মেলানো যাবে প্রাণের মেলায়। এবারে বৈশাখ হোক নিরাপত্তার, হোক কল্যাণময়। নতুন বছর থেকে নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক, বন্ধ হোক নারী নির্যাতন ও অবমাননা।