সংবাদ সংক্ষেপ

প্রকাশ | ১৩ মে ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আইনে সমআশ্রয় লাভ নন্দিনী ডেস্ক আমাদের দেশের সংবিধানে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হলেও নারীরা আজও শোষণ-বঞ্চনা, অবহেলা-অনুন্নয়নের শিকার। সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও আইনগত ক্ষেত্রে বৈষম্য ও শোষণের শিকার হয়েই দেশের নারীরা সমাজে জায়গা করে নিচ্ছে। অথচ সব পুরুষ নারীর সমস্যা নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে সহযোগিতা করার সময় এখনই। সরকার নারী উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও প্রকৃতপক্ষে অধিকাংশ নারী এখনো রয়ে গেছে পর্দার অন্তরালে। সংবিধানের ২৭ নাম্বার অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে রাষ্ট্রের সব নাগরিক অধিকার। সংবিধানের ২৮ নাম্বার অনুচ্ছেদে আছে, রাষ্ট্র ও জনজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার লাভ করবেন। সংবিধানের ২৯ নাম্বার অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে নাগরিকের জন্য সমতা থাকবে; কিন্তু সংবিধানের উলিস্নখিত উক্তিটিকে উপেক্ষা করেই যেন নারীদের অবদমিতভাবে সমাজে জায়গা করে দেয়া হচ্ছে। যেন অনেকটা সুযোগ আর কী। আমাদের দেশের গার্মেন্টশিল্পে নারী শ্রমিকদের ওপর শোষণের মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। এখনো এ দেশে কর্মক্ষেত্রে নারীদের বেতন বৈষম্য ও নিরাপত্তাহীনতা দেখা যায়। কর্মজীবী মায়ের শিশু নন্দিনী ডেস্ক দেশের সংবিধানে সর্বক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমান অধিকারের কথা উলেস্নখ থাকলেও আর্থ-সামাজিক নানাবিধ কারণে নারী ও মেয়ে শিশুরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এই বৈষম্যমূলক আচরণের মূলে রয়েছে তার অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতার অভাব। আর এ অবস্থা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নারীর সমঅংশগ্রহণ। কিন্তু আমাদের বর্তমান সমাজব্যবস্থায় একজন মা তার ছোট শিশুকে কোনো নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার নিশ্চয়তা না পেলে সন্তানকে রেখে কাজের জন্য ঘরের বাইরে যেতে পারেন না। তাই অনেকের চাকরি করার ইচ্ছা থাকলেও সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন না। এটা কেবল নিম্নবিত্ত কর্মজীবী মহিলাদের ক্ষেত্রে নয়। এ চিত্র সারাদেশের। এমনকি অনেক মহিলাও আছেন, যারা শুরুতে চাকরি করলেও সন্তান পালনের নিশ্চয়তা না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। নিজের অবর্তমানে কে দেখাশোনা করবে তার আদরের সন্তানটিকে? কোথায় থাকবে সে? ঠিকমতো খাবার খাবে তো? মায়ের মতো আদর-যত্ন পাবে তো? এমন হাজারও প্রশ্ন চাকরিতে থাকা নব্য মায়েদের। নারীদের অর্থনীতিতে সমঅধিকার নিশ্চিত করতে কর্মজীবী মায়ের সন্তানদের দিবাকালীন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এতে মহিলারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে নিশ্চিন্তে কাজ করার আস্থা পাবে। সরকারের রাজস্ব বাজেটের আওতায় ঢাকা শহরে সাতটি এবং ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহর রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল ও খুলনাসহ মোট ১২টি ডে-কেয়ার সেন্টার নিম্নবিত্ত শ্রেণির কর্মজীবী-শ্রমজীবী মহিলাদের শিশুদের জন্য পরিচালিত হচ্ছে। ঢাকার সাতটি কেন্দ্রের অবস্থান হচ্ছে কল্যাণপুর, মোহাম্মদপুর, আজিমপুর, মগবাজার, রামপুরা, খিলগাঁও ও ফরিদাবাদ। এসব কেন্দ্রে প্রতিটি শিশুর জন্য মাসিক চাঁদা ৩০ টাকা করে গ্রহণ করে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়। ঢাকা শহরে প্রতিটি সেন্টারে ৮০ জন এবং ঢাকার বাইরে পাঁচটি পুরনো বিভাগীয় শহরে ৬০ শিশুকে সেবা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। নারীর সামাজিক অধিকার নন্দিনী ডেস্ক দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা, ধর্মীয় কুসংস্কার প্রভৃতি বিষয়কে দায়ী মনে করা হলেও নারী নির্যাতনের মূল কারণ নারী-পুরুষের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্যমূলক সম্পর্ক। নারীর অবস্থান অধস্তন। প্রবল পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক মূল্যবোধ, বাজারমুখী রাষ্ট্রীয় দর্শন, দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাবের কারণে এ দেশের নারীর নিম্ন মর্যাদাই নারী নির্যাতনের পেছনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। আমাদের সমাজব্যবস্থায় সব ধরনের আইন-কানুন প্রণয়ন-প্রয়োগ- সবকিছুই বেশির ভাগ সময়ই পুরুষ লোক দ্বারা সম্পন্ন হয় এবং পুরুষতান্ত্রিক মনস্তত্ত্ব দ্বারা নির্মিত হয়। কাজেই সবকিছু প্রকারান্তরে পুরুষতন্ত্রেরই সাফাই গাইবে। যদিও আমাদের দেশসহ এ অঞ্চলের অনেক দেশই নারী রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান দ্বারা পরিচালিত, তবুও এ অবস্থার কোনো মৌলিক পরিবর্তন হয়নি। এর দ্বারা প্রমাণিত হয়, রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডার পক্ষে সে কাজ করছে।