নারীদের চাই কর্মোদ্যোগ

প্রকাশ | ০১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

নন্দিনী ডেস্ক
লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, সমাজদেহের প্রতিটি অঙ্গে নারী-পুরুষের সমঅধিকার ও অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণই হলো আধুনিক প্রগতিশীল সমাজ ব্যবস্থার মূলমন্ত্র। রাজা রামমোহন রায়ের সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত আইন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বিধবাবিবাহ আইন থেকে শুরু করে পুরুষশাসিত সমাজব্যবস্থায় নারীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বেষ্টনী মজবুত করতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে অনেক আইন প্রণীত হয়েছে। নারী অধিকার রক্ষা এবং নির্যাতন রোধে গৃহীত হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি, কাজ করছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর, গঠিত হয়েছে কমিটি, গড়ে উঠেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। কিন্তু শত কর্মপ্রচেষ্টা সত্ত্বেও আমাদের সমাজে এখনো নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিত করা যায়নি। বন্ধ করা যায়নি নারী নির্যাতন। এই নির্যাতন যেমন নিরক্ষর দিনমজুরের ভাঙা ডেরায় ঘটছে, তেমনি ঘটছে শিক্ষিত সমাজের উঁচু দেয়ালেঘেরা অন্দরমহলেও। আর এই অবস্থার জন্য আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা যেমন দায়ী, তেমনি দায়ী দরিদ্রতা এবং নারীদের আয়মূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণহীনতা, নিরক্ষরতা ও অজ্ঞতা, ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার, যৌতুক, বাল্যবিবাহ, নারীদের নিজেদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা লালন, নারীদের বন্ধ্যত্ব। আমাদের দেশে এখনো অনেক সমাজ আছে, যেখানে স্ত্রীরা স্বামীদের দেবতা মনে করে এবং স্বামীদের সন্তুষ্টির ওপর তাদের স্বর্গ-নরক নির্ভর করে বলে মনে করে। তারা বিশ্বাস করে, সৃষ্টিকর্তা তাদের জন্মই দিয়েছে স্বামীর সেবা এবং সন্তান জন্মদানের জন্য। ফলে স্বামীর সব নির্যাতনও তারা মুখ বুজে সহ্য করে নেয়। তাই কেবল নতুন নতুন কর্মসূচি তৈরি করে গেলেই হবে না, প্রশাসনের উচিত নতুন কর্মোদ্যোগ নারীদের জন্য পরিচালিত করা। এক জরিপে দেখা গেছে, স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা ৯২ শতাংশ নারী তাদের ওপর নির্যাতন সম্পর্কে ডাক্তারের কাছে পর্যন্ত কিছু বলতে চায় না। আইসিডিডিআরবি এবং নারীপক্ষের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে শহরে ৩৭.৪ শতাংশ এবং গ্রামে ৪৯.৭ শতাংশ নারী জীবনের কোনো না কোনো সময় তার অতি পরিচিত লোক দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। কিন্তু তারা রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থার কারণে মুখ খোলার সাহস পায় না।