সংবাদ সংক্ষেপ

প্রকাশ | ২২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বানভাসি নারী ও শিশু নন্দিনী ডেস্ক দেশের প্রায় অধিকাংশ জেলা এখন বন্যাকবলিত। লাখ লাখ মানুষ আজ পানিবন্দি মানবেতর জীবনযাপন করছে। সীমান্তের ওপার থেকে ক্রমাগত নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পাশাপাশি চলমান পুরো দেশব্যাপী বর্ষার টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় আক্রান্ত উত্তরের জেলাসমূহের দুর্গত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও গবাদি পশু ও পোষা-প্রাণী নিয়ে মানুষ বসবাস করছে একসঙ্গে। কারো কারো ঘরবাড়ি ও গবাদিপশু বানের জলে ভেসে গেছে, তলিয়ে গেছে মাঠের পর মাঠের ফসল। সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব মানুষ এক দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মাসহ বিভিন্ন শাখা নদীতে পানি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় বন্যাপরিস্থিতির দিন দিন আরও মারাত্মক অবনতির দিকে যাচ্ছে। ফলশ্রম্নতিতে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা ভেসে যাচ্ছে, পস্নাবিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে জনদুর্ভোগ ও ভোগান্তি। বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ তাদের পরিবার-পরিজন, গবাদি পশু ও সংসারের মালপত্র নিয়ে অসহনীয় মানবেতর জীবনযাপন করছে। কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছে বড় বাঁধ কিংবা উঁচু রাস্তার ধারে কিংবা কেউ ঘরের মধ্যে মাচা বেঁধে অসহায়ভাবে অবস্থান করছে। অথচ এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি মারাত্মক ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে গর্ভবতী মা ও শিশুরা। তাছাড়া এক দুর্বিষহ জীবন প্রতিনিয়ত ওই সব পানিবন্দি মানুষগুলোকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে তারা কোথাও বের হতে পারছে না। চাল নেই, চুলো নেই। কাজ-কর্ম কিছু নেই। মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই। সবকিছু হারিয়ে তারা উদ্বাস্তু ও উদ্ভ্রান্ত। যেসব পরিবারে গর্ভবতী মা ও শিশু আছে, তাদের অবস্থা তো আরও করুণ। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা দূরে থাক, ঠিকমতো দু'মুটো খেতে পায় না। মানুষের মৌলিক পাঁচটি (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা) জিনিসেরই চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিশেষত দরকারের সময় পাচ্ছে না কোনো প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা। সরকারের পক্ষ থেকে যেটুকু ত্রাণ বা চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়, সেটা যথেষ্ট নয়। অধিকাংশ সময় সবখানে পৌঁছে না। বেসরকারিভাবেও কেউ প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে এগিয়ে আসেনি। পানিবন্দি মানুষগুলোর সমস্যার কোনো অন্ত নেই। সদা-সর্বদা মানবিক বিপর্যয়ে জর্জরিত মানুষগুলো পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। মাত্র কয়েক হাত জায়গায় জড়োসড় হয়ে থাকা পরিবারের নারী-পুরুষদের পয়ঃনিষ্কাশনের মতো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়টি কতটা অমানবিক ও লজ্জার কেবলমাত্র ভুক্তভোগীরাই বলতে পারবে। বিশুদ্ধ পানীয়জলের অভাব প্রতি পদে পদে। অথচ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে বিশুদ্ধ পানীয়জলের গুরুত্ব অপরিসীম। যেখানে গ্রামের পর গ্রাম বন্যায় তলিয়ে গেছে, সেখানে এই অতীব প্রয়োজনীয় বস্তুটির অভাবে রোগ-বালাইয়ের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। মুহূর্তে ডায়রিয়া-কলেরা ও আমাশয়ের মতো মহামারি ছড়িয়ে পড়ছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের প্রকোপ তো রয়েছেই। দূষিত পানি শুধু গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য নয়, বরং সবার জন্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিকারক। রোগে আক্রান্ত কোনো নারী শিশুকে যথোপযুক্ত চিকিৎসাসেবাও দেয়া যাচ্ছে না। বর্জ্য থেকে শিল্প নন্দিনী ডেস্ক অবসরে বাড়তি আয়ের জন্য বা পুরোদমে উপার্জনের জন্য ফেলে দেয়া পুরনো কাগজ দিয়ে তৈরি করতে পারেন আসবাবপত্র। এছাড়া নিজের প্রয়োজন বা শৌখিন সামগ্রী তৈরি করা সম্ভব এই পুরনো কাগজ দিয়ে। এ ক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছাশক্তিটাই বড় কথা এভাবেই কথাগুলো বললেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার মজুমদারকান্দি গ্রামের মনির খানের স্ত্রী। অন্য এক গৃহবধূ বলেন, আমরা নিজেরাই নিজের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র কাগজ দিয়ে তৈরি করি। যদি এ আসবাবপত্র বাজারে বিক্রি করা যায় তবে ঘরে বসেই পুরুষসহ নারীরা বাড়তি আয়ের উৎস খুঁজে পাবেন। বর্তমানে এখানকার অনেক পরিবার তাদের তৈরি পণ্য বিক্রি করে টাকা আয় করছেন। আর এটা হতে পারে বাংলাদেশের জন্য একটি উদাহরণ। মজুমদারকান্দি গ্রামে প্রায় ৫০টি পরিবারের নারীরা ফেলে দেয়া পুরনো কাগজ দিয়ে তৈরি করছেন বসার জন্য জলচৌকি, মোড়া, পিঁড়া, ধামা, টুপি, ফুলদানি, ব্যাগ, বিভিন্ন ধরনের ফুলসহ গ্রামীণ আসবাবপত্র ও শৌখিন সামগ্রী। প্রথমে শখের বসে এ কাজ করলেও এখন অনেকেই মনে করেন একটু সময় ব্যয় করলে কিছু বাড়তি টাকা উপার্জন সম্ভব। দিন দিন কাগজের তৈরি এসব আসবাবপত্র রাজৈর উপজেলায় বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যে কারণে কোনো কোনো পরিবারের ৩-৪ জনও ব্যস্ত থাকেন আসবাবপত্র ও শৌখিন সামগ্রী তৈরির কাজে। গৃহবধূ, তরুণী-কিশোরী এমনকি শিশুরাও গল্পে গল্পে কাজে হাত লাগায়। এক শিল্পী বলেন, প্রথম প্রথম শখ করেই এসব আসবাবপত্র তৈরি করেছি। তবে এগুলো সংসারে অনেক কাজে লাগে। নিজে তৈরি করছি বলে প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে না। তাতে অন্তত আমাদের টাকা বেঁচে যাচ্ছে। তবে এসব জিনিস বাজারজাত করতে পারলে অনেক ভালো হতো। আসবাবপত্র তৈরি করতে করতে মফিজা, নুরজাহান, কামিনীসহ একাধিক নারী জানান, একজন নারী ঘরে বসেই এ আসবাবপত্র তৈরি করতে পারবে। আর তা হতে পারে উপার্জনের মাধ্যম।