সংবাদ সংক্ষেপ

প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শ্রমঘণ্টা বনাম নারীর অর্জন নন্দিনী ডেস্ক নারীদের অধস্তন করে রাখার পাশাপাশি সর্বত্রই নারীকে ঠকানোর এক প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। কর্মক্ষেত্রে তার জ্বলন্ত উদাহরণ রয়েছে। নির্মাণকাজ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, কর্মঘণ্টা একই থাকলেও নারীর প্রতি বেতনের বৈষম্য রয়েছে। পুরুষ শ্রমিকরা বসে বিশ্রাম করে, বিড়ি বা পান খায়, গল্প-গুজব করে। এভাবে পুরুষ শ্রমিকরা দিনের মোট কর্মঘণ্টা থেকে এক থেকে দেড় ঘণ্টা কাজ কম করে। অথচ নারী শ্রমিকরা শুধু ২০-২৫ মিনিট খাওয়ার সময়টুকু বাদে কোনো বিশ্রাম গ্রহণ করে না। এভাবে হিসাব করে দেখা যায়, পুরুষ শ্রমিক থেকে নারী শ্রমিক দেড় ঘণ্টা কাজ বেশি করছে। অথচ নারীকে মজুরি দেয়ার সময় বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। নির্মাণকাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিককে পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় কম পারিশ্রমিক দেয়া হয়। যদিও প্রায়ই নারী শ্রমিককে নির্ধারিত সময়ের বাইরে আরও অধিক সময় ধরে কাজ করতে হয়। কিন্তু কোনো অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দেয়া হয় না। শ্রম আইন এখানে অসহায়। জাতীয় উন্নয়নে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও এসব নারী শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আইন ঘোচাবে নারী বৈষম্য নন্দিনী ডেস্ক একজন নারী যদি পুরুষের মতো কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং সমমজুরি পান তাহলে কি নারীর সমাজে অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়ে গেল? তা ছাড়া একজন নারী মুক্তভাবে চলাফেরা করাটা কি তার সামাজিকভাবে সমঅধিকারপ্রাপ্তির সূচক হিসেবে পরিগণিত করা হবে? এভাবে নারীর সমঅধিকারপ্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত হয় না। নারী ও পুরুষের বৈষম্য সৃষ্টির মূল কারণ হলো উত্তরাধিকার হিসেবে সম্পত্তি পাওয়ার বিষয়টি। নারী ও পুরুষের বৈষম্য সৃষ্টির মূল দেয়াল হলো উত্তরাধিকার হিসেবে সম্পদ বণ্টন প্রথা। এ দেয়ালটি ভাঙার কোনো চেষ্টা বা কার্যক্রম দৃশ্যত নেই। সমাজ ও সংস্কৃতিভেদে নারীর বৈষম্যের চিত্রটির ভিন্নতা রয়েছে উত্তরাধিকার হিসেবে সম্পত্তি পাওয়ার বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে। একই রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত সার্বভৌম ভূখন্ডে বসবাসরত নারীর মধ্যে উত্তরাধিকার হিসেবে সম্পত্তি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন আইন। এ ভিন্ন ভিন্ন আইন অনুসারে উত্তরাধিকার হিসেবে সম্পত্তি পাওয়ার বিষয়টি নারীকে মানুষ থেকে একটু ভিন্ন করে ফেলে। মূল্য বৈষম্য তৈরির সূতিকাগার হলো উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টন প্রথা। নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ অবস্থা নন্দিনী ডেস্ক সন্তানের বেড়ে উঠা, ামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে পরিবারে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি তাদের সেভাবে গড়ে তোলা না হয় এবং সমাজের সব স্তরের বৈষম্য দূর করে নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ অবস্থা যদি তৈরি করা না যায় তাহলে অধস্তন পর্যায়ে যদি নারী থাকে সবসময়ই অপরাধ সমাজে চলতেই থাকবে। সে ক্ষেত্রে আমাদের সবার দায়িত্ব ছেলেমেয়েকে যৌন হয়রানির যে ক্ষতিকারক দিক আছে এ বিষয়ে তাদের সচেতন করা এবং তাদের মনস্তত্ত্ব পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও যে মূল্যবোধ তৈরির উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। নিজেদের সুরক্ষাসহ আত্মপ্রত্যয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে মনোবল তৈরি করা, কেউ উত্ত্যক্ত করলেও যাতে প্রতিরোধ করতে পারে এবং উত্ত্যক্তের কারণে আত্মহত্যা না করা ও কাউকে উত্ত্যক্ত না করার মানসিকতা তৈরি। মেয়েদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং উত্ত্যক্ত না করার সংস্কৃতি গড়ে তোলা। কেউ উত্ত্যক্ত করলে প্রতিহত করা এবং আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে নিজেকে রক্ষা করে চলার যোগ্য করে তুলতে হবে।