সংবাদ সংক্ষেপ

প্রকাশ | ২৬ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নারী আসুক অর্থনীতির মূলধারায় নন্দিনী ডেস্ক গৃহস্থালির কাজে বেশি সময় দেয়ার কারণে অনেক নারী চাকরি করতে পারেন না। আবার শিশুসন্তান লালন-পালনের জন্যও অনেকে চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন কিংবা চাকরি করতে পারেন না। এসব ক্ষেত্রে পুরুষদের তেমন কোনো সমস্যা হয় না। এ ছাড়া রান্নাবান্নাসহ বাসার আনুষঙ্গিক কাজ করতে হয় বলে নারীদের পক্ষে নিয়মিতভাবে কোনো কাজ বা ব্যবসা-বাণিজ্য করা সম্ভব হয় না। কিন্তু গৃহস্থালির কাজের জন্য নারীরা কোনো মজুরি পান না। সামাজিক কারণে মজুরি দেয়ার প্রচলনও তৈরি হয়নি। পুরুষদের তুলনায় সাড়ে তিন গুণ বেশি মজুরিবিহীন কাজ করেন এ দেশের নারীরা। একজন নারী এক সপ্তাহে গড়ে ২৪ ঘণ্টা গৃহস্থালির কাজ করেন, কিন্তু কোনো মজুরি পান না। সেই হিসাবে দিনে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা মজুরিবিহীন কাজ করেন তিনি। এসব কাজের মধ্যে আছে রান্নাবান্না, কাপড় ধোয়া, বাজার-সদাই করা, বাচ্চাদের আদর-যত্ন, স্কুলে আনা- নেয়া ইত্যাদি। অন্যদিকে একজন পুরুষ সপ্তাহে এমন কাজ করেন মাত্র সাত ঘণ্টা। দিনে করেন গড়ে এক ঘণ্টা। নারী-পুরুষদের নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর (বিবিএস) তৈরি পরিসংখ্যান-বিষয়ক এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। জাতীয় হিসাবে এই ধরনের মজুরিবিহীন কাজের হিসাব করার সুযোগ আছে। উন্নত দেশে এই ধরনের হিসাব রাখা হয়, যদিও মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) সেটা আসে না। তবে জাতীয় হিসাবে তা আলাদা করে রাখা হয়। এটি নারীর মজুরিবিহীন কাজের স্বীকৃতি। চা বাগানের নারী শ্রমিক নন্দিনী ডেস্ক চা বাগানের শ্রমিকদের জীবন নিয়ে বরাবরই কৌতূহল অন্য শ্রেণি-পেশার মানুষের। চা বাগানের জীবনও যেন এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো। বহু বাগানের শ্রমিকরা মূলত বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর। বংশ পরম্পরায় মূলত এদের পরিবারগুলো থেকেই নতুন নতুন বাগান শ্রমিক উঠে আসে। চা বাগানের শ্রমিকদের নিয়ে এমন অনেক গান, কবিতা, চলচ্চিত্র, নাটক, গল্প-উপন্যাস আছে বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে। কিন্তু শ্রমিকদের ভাগ্য ও জীবনমান বরাবরই সমাজের একেবারেই পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষদের মতো। পরিবারগুলোতে শিক্ষার আলো পৌঁছায় না বললেই চলে, থাকেন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে, চিকিৎসার নেই সুব্যবস্থা। দেশের চা বাগানগুলোতে প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক কাজ করেন, যাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগের পর চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি ও জীবন মান উন্নয়নে তেমন কোনো কার্যকরী উদ্যোগ দেখেননি এই শিল্পের শ্রমিকরা। তারা জানান, বর্তমান মজুরি জীবন ও সংসার পরিচালনার জন্য খুবই সামান্য। তবে, বাগান মালিকরা শ্রমিকদের মজুরি ও জীবন মান উন্নয়নে নিজেদের ভূমিকার কথা বেশ গৌরবের সঙ্গে দাবি করেন। সব বঞ্চনা, ঝুঁকি-অনিশ্চয়তা মেনে নিয়েই বাগান আঁকড়ে জীবন কাটান শ্রমিকরা। নারী মুক্তিতে চাই নারী শক্তি নন্দিনী ডেস্ক যে মুহূর্ত থেকে নারী-পুরুষের বৈষম্য নিয়ে নারীরা চিন্তা করতে শুরু করেছিল, তখন থেকেই শুরু হয়েছিল মুক্তির চিন্তা। মূলত নারীমুক্তি আন্দোলনে দুটি ধারা। একটি হচ্ছে বুর্জোয়া ফেমিনিজম, আরেকটি বিশ্বে পুঁজিবাদের উত্থান। শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে যে আন্দোলনের বীজবপন করেছিল, তার মধ্যে দিয়েই গড়ে উঠেছিল অসংখ্য সাধারণ নারী- যারা কল-কারখানায়, খেতে-খামারে কাজ করে। যারা নিম্নবিত্তের প্রান্তিক মানবী, যারা আজও পায়নি জীবনধারণের নূ্যনতম সুযোগ। নানা পারিবারিক-সামাজিক নির্যাতনের শিকার নারীদের সংঘবদ্ধ করার আন্দোলন, তাদের দুর্বিষহ জীবনের গস্নানি থেকে মুক্তির আন্দোলন এখনো চলছে। বর্তমানেও নারীর অবস্থান সর্বত্র এক নয়। শ্রেণিবৈষম্য নারীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা চিহ্নি করে। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যারা উঁচুতে বিশেষ করে মহানগর, নগরে আছেন তারা কিছু সুবিধা পান। যেমন-রান্নার আধুনিক উপকরণ, পানির সুব্যবস্থা, সর্বক্ষণের কাজের লোক, আবার শহর নগরে যারা বস্তি অঞ্চলে থাকে, তাদের জীবনসংগ্রাম কিন্তু ভিন্ন। তেমনি গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র নারীদের জীবনসংগ্রাম নতুন এক বোধের জন্ম দেয়। আমাদের দেশের নারীরা পরিবারের জন্য প্রতিদিন চৌদ্দ থেকে পনেরো ঘণ্টা শ্রম দেয়। ভাত রাঁধা, জ্বালানি কাঠ জোগাড় করা, পানীয় জলের ব্যবস্থা করতেই সাত ঘণ্টা খরচ হয়ে যায়। মানব জীবনের মর্যাদাবোধকে প্রতিষ্ঠিত করার মধ্য দিয়েই নারীমুক্তি আসবে। মানসিক দাসত্ব বড় কঠিন। এই দাসত্বের শৃঙ্খল ভাঙতে হবে। নারীদের নিজস্ব সদগুণরাশি ও মূল্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। জ্ঞান অর্জন, আত্মসংযম, শ্রমনিষ্ঠা, আদর্শের প্রতি নিষ্ঠা, সেবা, ক্ষমতায়ন তার সঙ্গে থাকবে দৃঢ়তা, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ।