দায়ভার কি একার?

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

রুমানা নাওয়ার
দিন বদলেছে। নারীর জয়গান এখন দিকে দিকে উচ্চারিত। তবুও বলতে শোনা যায়, আমাদের সমাজটা কেমন যেন পুরুষতান্ত্রিক। ব্যাপারটা এমন- দৃশপট বদলেছে, দৃশ্য বদলায়নি। এখানে সব কৃতিত্ব সব সাফল্যই বুঝি পুরুষদের! এক অলৌকিক শক্তি বলে পুরুষ দিনের পর দিন একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে এখানটায়। একটা কথা প্রচলিত আছে আমাদের সমাজে- যত কাদাই লাগুক পুরুষের গায়ে কোনো দোষে দূষিত হয় না তাদের চরিত্র। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে এর উল্টো চিত্র। সামান্য একটু দোষে পাহাড়সম দোষে দূষিত হয় এরা। পরিবার, সমাজ সব জায়গায় আরোপিত দোষটার নিন্দায় জর্জরিত হয় হরহামেশা। নারী স্বাধীনতার এ বিশ্বায়নের যুগে এসেও কি তার পরিবর্তন হচ্ছে। কখনো না। আমি মনে করি আরও বেশি পরিমাণে বেড়েই চলেছে। ভিতরে ভিতরে ক্ষয় হয়ে যাওয়া এসব মেয়ে, নারীরা আত্মহননের পথ বেছে নেয়। কতটা মানসিক নিপীড়ন সহ্য করতে হয় এদের তা কেবল ভুক্তভোগীই জানে। ঘটে যাওয়া এমন অনেক ঘটনার একটি বর্ণনা করা যাক এভাবে- দীর্ঘদিন প্রেম করে কাজল সহপাঠী মুনিয়ার সঙ্গে। মুনিয়ার বিয়ের প্রস্তাব আসলে সে কাজলকে তাগাদা দেয় বিয়ে করার জন্য। না হয় তার অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাবে এ ভয়ে। কাজল নির্বিকার। কারণ তার আরও অনেক সময় পাড়ি দিতে হবে বিয়ের জায়গায় পৌঁছতে। এদিকে মুনিয়ার বিয়ে হয়ে যায় বাবা-মায়ের পছন্দের পাত্রের সঙ্গে। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরই কাজল বন্ধুমহলে বলে বেড়াতে লাগল- মুনিয়া আমাকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে ছিল। আমিই করিনি। এর কিছুদিন পর অন্য মেয়ের সঙ্গে কাজলের আবার প্রেম হয়। এবং অতঃপর বিয়ে। এটাতেও কাজলের একই যুক্তি মেয়েটার জন্য এখন বিয়েতে বসতে হলো। একপ্রকার জোর করে তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসানো হলো। এটাই বলতে লাগল জনে জনে। না হয় বিয়ে করার মতো মন ছিল না কাজলের। এই একটা ঘটনায় বুঝতে পারা যায় মেয়েদের ঘাড়ে সব দোষ চাপায় কাজলরা। তারা সব ধোয়া তুলসী পাতা। ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে জানে না যেন। এসব মন-মানসিকতার পরিবর্তন হোক। দুজনেই এগিয়ে আসুক ভালোবাসায় কিংবা দায়ভারে। মেয়েটির সঙ্গের পুরুষটিও প্রেমে, ভালোবাসায় বিয়েতে কিংবা পরিবারে সঙ্গিনীর দায়ভারটা কাঁধে তুলে নিক। গলা উঁচিয়ে বলুক- ওর একার দায় কেন হবে সবটায় আমারও দায় আছে এতে। তবেই হাসবে আশপাশ ঝলমল করবে আমাদের বসুধা। সুন্দরে মিলেমিশে আমরা অনেকদূর যেতে পারি।