সংবাদ সংক্ষপে

প্রকাশ | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নিউইয়র্কে প্রথম শহিদ মিনার য় নন্দিনী ডেস্ক যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো নির্মিত হতে যাচ্ছে স্থায়ী শহিদ মিনার। মহান একুশের ভাষা শহিদদের স্মরণে সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের লাগোর্ডিয়া কমিউনিটি কলেজে এ শহিদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন ছিল স্থায়ী শহিদ মিনারের। কিন্তু নানান জটিলতায় সে স্বপ্নপূরণ হয়নি। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান নিউ ইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির আওতাধীন লাগোর্ডিয়া কমিউনিটি কলেজে দীর্ঘদিন চেষ্টার পর সেখানে স্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণে সফল হতে চলেছেন। ইউনেস্কো কর্তৃক ভাষা শহিদদের অবদানের স্বীকৃতির জন্য ২১ ফেব্রম্নয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে তারা একটি প্রোফাইল তৈরি করেন। যদিও লাগোর্ডিয়া স্টুডেন্ট গভর্নমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে প্রথমে ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু আশা ছাড়েননি। পরে রায়হান মাহমুদ লাগোর্ডিয়া কলেজ স্টুডেন্ট গভর্নমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের গভর্নর নির্বাচিত হলে তার কাছে শহিদ মিনার নির্মাণের গুরুত্ব সংবলিত সেই প্রোফাইল এবং শহিদ মিনারের নকশা তুলে ধরেন। রায়হান মাহমুদ স্টুডেন্ট গভর্নমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাছে বিলটি নতুন করে প্রস্তাব করেন। এরই মধ্যে শহিদ মিনার স্থাপনের জন্য খরচবাবদ আট হাজার ডলার স্টুডেন্ট গভর্নমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন থেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। লাগোর্ডিয়া কমিউনিটি কলেজের 'ই' বিল্ডিং এবং 'এম' বিল্ডিংয়ের মধ্যে খোলা চত্বরে ১০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থের স্থায়ী শহিদ মিনারটি তৈরি হবে বলে জানা গেছে। নানা দেশে নির্মিত শহিদ মিনার য় নন্দিনী ডেস্ক শহিদ মিনার এখন বাঙালির আত্মপরিচয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে। বিশ্বের যেখানেই বাংলা ভাষাভাষীরা আছেন সেখানেই মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে গৌরবের শহিদ মিনার। লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটে আর ওল্ডহ্যাম থেকে শুরু করে নানা স্থানে তৈরি হচ্ছে শহিদ মিনার। ইতালির রোমের ইৎজাক রাবিন পার্কে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় শহিদ মিনারের আদলে একটি শহিদ মিনার। ২০০৫ সালে জাপানের রাজধানী টোকিওতে শহিদ মিনার স্থাপিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কেও দাঁড়িয়ে আছে একটি শহিদ মিনার। আমেরিকাতেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একাধিক শহিদ মিনার। বিশ্বের আর কোনো সাংস্কৃতিক প্রতীকের এত ব্যাপ্তি আর মর্যাদা রয়েছে বলে মনে হয় না। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, ঝাড়খন্ড ও ছত্রিশগড়ের বিভিন্ন জনপদে সগৌরবে মাথা তুলে রয়েছে শহিদ মিনার। বাংলাদেশের বাইরে প্রথম শহিদ মিনার গড়ে ওঠে ব্রিটেনের ওল্ডহ্যাম শহরে। এটি ১৯৯৭ সালের কথা। স্থানীয় বাঙালি কাউন্সিলরদের দাবির মুখে ওল্ডহ্যাম কাউন্সিলের জমি এবং নগদ অর্থ বরাদ্দের সুবাদে স্থানীয় বাঙালিদের কয়েকটি সংগঠনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় ওই শহিদ মিনারটি গড়ে ওঠে। এটি নির্মিত হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের আদলে। এটি নির্মাণের ঠিক তিন বছর পর আরেকটি শহিদ মিনার প্রতিষ্ঠিত হয় ইংল্যান্ডের সর্ববৃহৎ বাঙালি অধু্যষিত এলাকা পূর্ব লন্ডনে। বাঙালিদের উদ্যোগেই তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহাসিক আলতাব আলী পার্কে। এরপর শহিদ মিনার নির্মিত হয়েছে লুটন শহরে। জাপানের রাজধানী টোকিওর প্রাণকেন্দ্র তোসিমা সিটিতে ন্যাশনাল থিয়েটার হলের পাশে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের আদলেই ২০০৫ সালে নির্মিত হয়েছে একটি মিনার। জাপান সরকারের বরাদ্দ দেয়া জমিতে এই মিনারটি নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে। ১৯৯৩ সালের ২১ ফেব্রম্নয়ারি কলকাতার ধর্মতলার কার্জন পার্কে শহিদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৯৮ সালের ২৬ মে স্মারক স্তম্ভটি উদ্বোধন করেন কথাসাহিত্যিক অন্নদাশঙ্কর রায়। বাংলা ভাষার শহিদদের স্মরণে ওপার বাংলায় দ্বিতীয় শহিদ মিনার স্থাপিত হয় ২০১১ সালে দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে। ২৫০ বর্গফুট জায়গাজুড়ে ১১ ফুট উচ্চতায় গড়া হয়েছে এই শহিদ মিনার। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে আরও দুটি ভাষা শহিদ মিনার রয়েছে। এর একটি হলদিয়ায়, অন্যটি চন্দননগরে। আসামের শিলচরে আরেকটি শহিদ মিনার নির্মিত হয়েছে ১৯৬১ সালে, সেখানে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনে শহিদদের স্মরণে। ভারতের বাইরে বাকি বিশ্বেও সগৌরবে মাথা উঁচু করছে বাংলা ভাষার শহিদ মিনার। এ সংখ্যা ইতোমধ্যে ১০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে।