জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিচ্ছেন শাহিদা সুলতানা

বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রম্নতি পূরণে, জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নে, জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমিও অংশীদার হতে চাই। সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি সব ধরনের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই।

প্রকাশ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

এসএম নজরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা
বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রম্নতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা কর্মসূচির আওতায় ওয়ানস্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে সমন্বিত কৃষিসেবা ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়। গোপালগঞ্জ জেলা ও পাঁচ উপজেলা প্রশাসন একযোগে এ ক্যাম্পইনের আয়োজন করে। ১৩ জানুয়ারি সকাল ১০টায় মুকসুদপুর উপজেলার বনগ্রাম বাজার মাঠে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা এই ওয়ান স্টপ সমন্বিত কৃষিসেবা ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। এ ওয়ান স্টপ সা?র্ভিস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী একই সঙ্গে একই স্থানে মৎস্য, কৃষি ও প্রাণিসম্পদবিষয়ক যাবতীয় সেবা ও পরামর্শ নিতে পারছেন। তিনি জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরনের টাকা জমি মালিকদের বাড়ির কাছে গিয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর অধিগ্রহণকৃত জমির উপর দাঁড়িয়ে প্রদান করেছেন। দালালের কাছে না গিয়ে, হয়রানি না হয়ে, অযথা বারবার ডিসি অফিসে না ঘুরে কীভাবে জমির ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়া যায় সে ধারণা দিতেই তিনি ক্ষতিগ্রস্ত জমি মালিকদের খুব কাছে গিয়ে তাদের এ ব্যাপারে বিস্তারিত ধারণা দিয়েছেন। গোপালগঞ্জের কোনো লোক আর জেলা প্রশাসনের বা উপজেলা প্রশাসনের কোনো দপ্তরের কোনো কাজে দালালের কাছে যাবে না এমন প্রত্যাশা জেলা প্রশাসকের। গোপালগঞ্জে যোগদান করে তিনি দেখেছেন এখানে শিক্ষিত বেকার যুবক ও যুব-মহিলার সংখ্যা খুব বেশি। তাই তিনি ডিসি অফিসে ১৫ ডিসেম্বর একটি সিভি ব্যাংক স্থাপন করে জেলার শিক্ষিত বেকার যুবক ও যুব-মহিলার জীবন-বৃত্তান্ত জমা নিয়ে চাকরি প্রত্যাশী ১০ হাজার বেকারের তালিকা সংগ্রহ করে বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে কর্মরত গোপালগঞ্জের কৃতী সন্তানদের সঙ্গে কথা বলে চাকরিমেলা করে ১৮ ডিসেম্বর কয়েকশ বেকারের চাকরি দেওয়ার জন্য সহায়তা করেছেন। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচ উপজেলায় একদিনের জন্য বিআরটিএ অফিস নিয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলার সব কর্মকর্তাদের কাজে লাগিয়ে সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ অবহিতকরণ ও শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনপত্র বিতরণ ও গ্রহণ অনুষ্ঠান কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। এভাবে তিনি গত ২১ ডিসেম্বর পাঁচ উপজেলায় ১৫ হাজার শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করেছেন। তাদের স্ব স্ব উপজেলায়ই পরীক্ষা নিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে লাইসেন্স দেয়া হবে। গোপালগঞ্জের গ্রাম এলাকায় এবছর শীত খুব বেশি হওয়ায় জেলা প্রশাসক শীতের রাতে অসহায় গরিব মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম্বল দিয়ে শীত নিবারণ করেছেন। এ ছাড়া গোপালগঞ্জে প্রবীণ ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবা পেতে বিড়ম্বনা দেখে গোপালগঞ্জের গ্রাম এলাকার প্রবীণ নারী-পুরুষের ফ্রি স্বাস্থ্যসেবা দিতে ২৪ ডিসেম্বর প্রতিটি উপজেলায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করেছেন। পাঁচ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে মেডিকেল ক্যাম্প করে সেখানে আসা প্রবীণদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন। এভাবে তিনি পাঁচ উপজেলার ১০ হাজার প্রবীণ ব্যক্তিকে ফ্রি চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা লক্ষ্য করেছেন, গোপালগঞ্জে কোনো ব্যাংক উদ্যোক্তাদের এসএমই লোন দেয় না। বছর শেষে ব্যাংক বড় কোনো পরিচিত ব্যবসায়ীকে এসএমই লোনের সব টাকা লোন দেন। এ কারণে তিনি জেলার প্রশিক্ষিত ১০ জন উদ্যোক্তাকে ব্যাংকের সঙ্গে মিডিয়া করে দিয়ে এসএমই লোন পাইয়ে দিয়ে সফল উদ্যোক্তা তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রম্নতি পূরণে, জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমিও অংশীদার হতে চাই। সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি সব ধরনের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। এবং গোপালগঞ্জ জেলার উন্নয়নে কিছু কাজ করে স্মৃতি রেখে যেতে চাই। যাতে আমি চলে যাওয়ার পরও এই জেলার মানুষ সারাজীবন মনে রাখে।