সংবাদ সংক্ষপে

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সচেতন কিশোরী য় নন্দিনী ডেস্ক আমতলীর আরপাংগাশিয়া ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া। সে আরপাংগাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। বাবা তাজুল ইসলাম, মা রুনা বেগম। তাদের দুই সন্তানের মধ্যে তানিয়া ছোট। মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে বাবা-মা প্রায়ই দুশ্চিন্তায় থাকত। তানিয়ার কোনো ভাই না থাকায় বাবা নিজেদের অসহায় মনে করত। তাদের ধারণা সংসারে ছেলে না থাকলে সমাজ বা পরিবারে কোনো গুরুত্ব থাকে না। তানিয়ার উদ্যোগ বাবা-মায়ের সে ধারণাকে পাল্টে দেয়। তানিয়া এনএসএসের রিকল প্রকল্পের বৈশাখী গণসংগঠনের কিশোর-কিশোরী দলের সদস্য হওয়ার পর বিভিন্ন সভায় অংশ নেয়। সে ধীরে ধীরে অধিকার সচেতন হয় এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শেখে। স্কুলে যাওয়ার পথে প্রায়ই লক্ষ্য করত এলাকার কিছু বখাটে ছেলে তাদের পিছু নেয়। নানা অসৌজন্যমূলক কথা বলে। এতে সে এবং তার বান্ধবীরা অস্বস্তি বোধ করত। তার মনে জেগে ওঠে প্রতিবাদের ভাষা। সে উদ্যোগ নেয় অন্যান্য কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য। সে ছেলেমেয়েদের সংগঠিত করে বখাটে ছেলেদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে। এভাবে একদিন দুষ্ট ছেলেদের সামনে গিয়ে তাদের বারণ করলে তারা তাদের ভুল বুঝতে পারে। সেই ছেলেরা এখন তাকে বোনের দৃষ্টিতে দেখে। পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করে। বাল্যবিয়ে বন্ধ হোক য় নন্দিনী ডেস্ক জীবনে সুখের পেয়ালায় চুমুক দেয়ার সুযোগ খুব কম নারীরই হয়। সময়ের পরিবর্তনে আসে জীবনযাপন পদ্ধতির পরিবর্তন; কিন্তু সমাজের চিরাচরিত ব্যাধিগুলো যেন আগের চেয়েও অধিক মাত্রায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। প্রয়োজনের তাগিদে সংসদে বিভিন্ন আইন পাস হলেও সে সব আইন নারীর ভাগ্য তেমন একটা পরিবর্তন করতে পারেনি। বাল্যবিয়ে, বহুবিবাহের মতো সামাজিক ব্যাধিগুলো সমাজের অলি-গলিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। শহরের জীবনযাপন পদ্ধতি, সুযোগ-সুবিধা, আইনের প্রয়োগ গ্রামের তুলনায় ভালো। গ্রামের কথা আমরা অধিকাংশ মানুষই মনে রাখি না, কি ক্ষমতাবান বা ক্ষমতাহীন। দেশের পুরো রূপটাকে বদলাতে হলে শেকড় থেকে পরিবর্তন শুরু করতে হবে। বাংলাদেশে এখনো শহর কিংবা গ্রাম উভয় স্থানেই বাল্যবিয়ে অহরহ হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আইন রক্ষাকারীদের হাতেই আইন ভঙ্গ হয়। কিছু স্বার্থ, অর্থলোভী ব্যক্তিদের দ্বারা কাগজের মারপঁ্যাচে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের এক মুহূর্তে প্রাপ্ত বয়স্ক করে দেয়া হচ্ছে। আমাদের সমাজের অসচেতন অভিভাবকরা মেয়েদের বিয়ে দিলেই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে; কিন্তু বিবাহ-পরবর্তী সময়ে তাদের সন্তানের জীবন কেমন হবে, এ বিষয়টি কোনো অভিভাবকই ভেবে দেখেন না। ফলে মেয়েসন্তানকে বাবা-মায়ের ভুল সিদ্ধান্তের ফল ভোগ করতে হয় আজীবন। অনেক সময় তাদের মূল্যবান জীবনও বিসর্জন দিতে হয়। অধিকাংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েশিশুরা অল্প বয়সে বাচ্চা প্রসব করতে গিয়ে মারা যায়। অনেক ক্ষেত্রে পুষ্টির অভাবে বাচ্চা শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ে। ফলে একটি ভুল সিদ্ধান্তের ফল যে কেবল কন্যাশিশুকে ভোগ করতে হয় তা কিন্তু নয়, বরং তার পরবর্তী প্রজন্মকেও ভোগ করতে হয়। হয়রানির শিকার য় নন্দিনী ডেস্ক \হ পুরুষতান্ত্রিক এ সমাজে এখনো বাবা-মা পুত্রসন্তান চান, কন্যা নয়। বরং কন্যাসন্তান জন্মদানের অপরাধে মেয়েদেরই শাস্তি দেয়া হয় বা পুত্রসন্তানের জন্য দ্বিতীয় বিয়ে করেন বাবা। যৌতুকের জন্য প্রতিদিন গৃহবধূ খুন হচ্ছেন বা আত্মহত্যা করছেন। এমনকি নারীশ্রমিকরা আজও পাননি কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ, তাদের জন্য নেই টয়লেটব্যবস্থা, নেই আবাসিক হোস্টেল। এখনো তারা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত এবং কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার। এ ছাড়া বিবাহবিচ্ছেদ, অভিভাবকত্ব, সম্পত্তির উত্তরাধিকারসহ সব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে রয়েছে বৈষম্য। আইন করে বিবাহ ও বিচ্ছেদের যতটুকু অধিকার ও মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। পারিবারিক আদালত মেয়েদের জন্য একটি অনুকূল পদক্ষেপ কিন্তু আদালতের সুযোগ থেকেও নারী বঞ্চিত। গ্রাম-গঞ্জে হচ্ছে নারী নির্যাতন, অনুরূপভাবে ছিনতাই, রাহাজানি, সন্ত্রাস, ইভ টিজিং ও হত্যার মতো সব কর্মকান্ড, যা নারীকে ঠেলে দিচ্ছে দুর্বিষহ পরিবেশে।