নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রা

প্রকাশ | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

নন্দিনী ডেস্ক
পূর্ববঙ্গে নারী শিক্ষার ভিত্তিমূল রচনায় অন্যতম ভূমিকা পালন করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, অক্ষয়কুমার দত্ত, সৈয়দ আমীর আলী, নবাব আবদুল লতিফ প্রমুখ। ঊনিশ শতকের খ্যাতনামা সংস্কারবাদী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নারী শিক্ষার পক্ষে প্রচুর লেখালেখি করেন। ১৮৫৭-১৮৫৮- এই এক-দেড় বছরের মধ্যে তিনি প্রায় ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন হুগলি, বর্ধমান, নদীয়া ও মেদিনীপুর অঞ্চলে। অনুদান ও স্থানীয় উদ্যোগের অভাবে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে গেলেও এর মাধ্যমে নারী শিক্ষার একটি শক্তিশালী ধারা প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল। যখন নারী শিক্ষার বিভিন্ন প্রচেষ্টা বিক্ষিপ্তভাবে চলছে তখন একজন নারী কুমিলস্নায় পর্দানশিন মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপনের দুঃসাহসিক পরিকল্পনা নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। বাংলার নারীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার এই পথিকৃৎ নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী। যখন মুসলমানরা পশ্চিমা শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, ঠিক সেই সময়ে নবাব ফয়জুন্নেসা মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়া নারীর কোনো ভবিষ্যৎ নেই। সে সময় নারী শিক্ষাকে যতটা গভীরভাবে নবাব ফয়জুন্নেসা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন, সেভাবে স্যার সৈয়দ আহমদ খান কিংবা বাংলার আবদুল লতিফের মতো স্বনামধন্য চিন্তকরাও পারেননি। বাংলায় নারী শিক্ষা বিস্তারে আরেকজন শিক্ষাবিদ বেগম রোকেয়ার অবদান অনস্বীকার্য। দ্বারে দ্বারে ঘুরে অভিভাবকদের অনুরোধ করেছেন যাতে তারা মেয়েদের স্কুলে পাঠান। এমনকি মেয়েদের নিরাপত্তা ও পর্দার নিশ্চয়তা দিতে বেগম রোকেয়া ফিটন গাড়ি (ঘোড়ার গাড়ি), মোটর ও বাসের ব্যবস্থা করেছিলেন। বেগম রোকেয়ার কাজ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন অনুজপ্রতিম শিক্ষক, সমাজকর্মী এবং সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার মাহমুদ। কঠোর পর্দা ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে একজন হিন্দু শিক্ষকের কাছে তিনি পড়তেন। মাত্র নয় বছর বয়সে পর্দার প্রশ্নে খাস্তগীর বালিকা বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। সে সময় খাস্তগীর স্কুলে বিপস্নবী কল্পনা দত্তের বড় বোন, দেশপ্রিয় জিতেন্দ্র মোহনের বোনসহ অনেক বিখ্যাত পরিবারের মেয়ে লেখাপড়া করতেন।