বঙ্গবন্ধুর চেতনায় উদ্বুদ্ধ নতুন প্রজন্ম

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ গঠনের সঙ্গে সঙ্গে নারীর ক্ষমতায়নে জোর দেন। নারীর ক্ষমতায়নে বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং দেশের প্রতি ভালোবাসায় ও বঙ্গবন্ধুর চেতনায় কেমন উদ্বুদ্ধ এখনকার নতুন প্রজন্ম, এ বিষয়ে জানাচ্ছেন- এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

প্রকাশ | ১৪ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তার মানে বাংলাদেশের সক্রিয় নাগরিকদের একটি প্রধান অংশ হলেন নারী। এখন সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ স্পষ্ট। এগুলো ঘটেছে বঙ্গবন্ধু বাস্তবায়িত উদার ও নারীবান্ধব নীতিমালার কারণে। বঙ্গবন্ধু নারীদের ক্ষমতায়ন, নিরাপদ মাতৃত্ব, উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে নারীর সার্বিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা পরিলক্ষিত হয়। ১৯৭২ সালে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের কল্যাণে 'মহিলা পুনর্বাসন বোর্ড' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মূলত এই উদ্যোগ থেকেই, বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে মহিলাদের জন্য উন্নয়ন শুরু হয়েছিল। কামরুন নাহার ঐশী শিক্ষার্থী, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার মধ্যে উলেস্নখযোগ্য ছিল নিরক্ষর ও অনগ্রসর নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের জীবনমানের উন্নয়ন চিন্তা। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনের সঙ্গে সঙ্গে নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের চিন্তা ও পরিকল্পনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালি নারীদের ক্ষমতায়নের পথিকৃৎ। ১৯৭২ সালে তিনি প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং সংবিধান জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য ৬৫নং ধারার মাধ্যমে সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেন। নারী শিক্ষা বিস্তারে বঙ্গবন্ধু দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নেন, যেখানে মাত্র ৬ শতাংশ নারীর অক্ষরজ্ঞান ছিল, সেখানে ১৯৭২ সালে ৫১ কোটি টাকা ব্যয় করে ক্ষতিগ্রস্ত ৬০ ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের ঘোষণা দেন এবং একই সফঙ্গ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নারীদের বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দেন, যা নারী শিক্ষা অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নারীদের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম নারী সংগঠন মহিলা সংস্থার ভিত্তি ও রচনা করেন বঙ্গবন্ধু। বর্তমানে দেশের সরকার প্রধান, সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় প্রধান এবং সংসদ স্পিকার সবাই নারী। আমাদের দেশের নারীদের খেলাধুলায়ও রয়েছে অভূতপূর্ব সাফল্য। প্রথম নারী উপাচার্য, প্রথম নারী পর্বতারোহী, প্রথম বিজিএমইএ নারী সভাপতি, প্রথম সংখ্যালঘু নারী মেজর, প্রথম নারী স্পিকার, প্রথম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিগত এক দশকেই সৃষ্টি হয়েছে। আর নারীদের এই অভূতপূর্ব ক্ষমতায়নে অংশগ্রহণের সুযোগ ও অনুপ্রেরণা যে জোগায়, তিনি বঙ্গবন্ধুরই কন্যা। আজ বাংলাদেশ নারী উন্নয়নে সারা বিশ্বে একটি রোল মডেল তৈরি করেছে এবং বর্তমান নারীসমাজে উন্নয়নের যে জোয়ার বইছে, তার ভিত্তি রচনা করে গেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আফসানা রাত্রি মিশু শিক্ষার্থী, ক্লদিং অ্যান্ড টেক্সটাইল, বাংলাদেশ হোম ইকনোমিকস কলেজ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শত বছরের নির্যাতন-নিপীড়নের হাত থেকে তিনি বাঙালিদের মুক্ত করেছিলেন এবং উপহার দিয়েছিলেন স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। নারীদের ক্ষমতায়নে বঙ্গবন্ধুর উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। এই যুদ্ধে নারীরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছে। বঙ্গবন্ধু প্রথম থেকেই নারীর ক্ষমতায়নের দিকে নজর দিয়েছিলেন। যে কারণে প্রথম জাতীয় সংসদেই নারীর জন্য সংরক্ষিত আসন রাখা হয়। সেই সময় নারীদের আন্দোলন শক্তিশালী ছিল না। একমাত্র বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই তা সম্ভব হয়েছিল। নারীদের সার্বিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা দেখা যায়। ধারা- ২৮৩, ২৮৪-তে নারীদের সমান অধিকারের কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু। বাংলার নারীদের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম নারী সংগঠন মহিলা সংস্থার ভিত্তি রচনা করেন। আজ সরকারপ্রধান, সংসদের নেতা-উপনেতা, বিরোধী দলীয় নেতা এবং সংসদের স্পিকার সবাই নারী। নারীরা এখন সব ক্ষেত্রে, সমাজের সব স্তরেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নাদিয়া হোসেন ইমা শিক্ষার্থী, ফিন্যান্স বিভাগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। আজকে ২০২০। আজ থেকে একশ বছর আগে জন্ম নেয়া একজন মানুষকে বই পড়ে, গল্প শুনে ভিডিও ক্লিপ দেখে যতটুকু চিনেছি, জেনেছি এটা বুঝতে পেরেছি তিনি একজন আপাদমস্তক মানুষ ছিলেন। তিনি কোনো সাম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন না, কোনো বর্ণের ছিলেন না, ছিলেন না কোনো গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী। তিনি ছিলেন মানুষের। তার কাছে নারী-পুরুষ বলতে আলাদা কিছু ছিল না। তিনি সবসময় নারীদের পুরুষের পাশাপাশি এগিয়ে নিতে চেয়েছেন। যার দরুন আমরা দেখতে পাই, আমাদের সংবিধানে। দেখতে পাই যুদ্ধপরবর্তী সময়ে বিরাঙ্গনা নারীদের পুনর্বাসন এবং মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের জন্য বাংলাদেশে মহিলা পুনর্বাসন বোর্ড গঠন করার মাধ্যমে। এমনকি নারীদের এগিয়ে আনার জন্য তিনি সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা চালু করেন। নারীরা যে সব ক্ষেত্রে সকল পেশার জন্য যোগ্য সেটা তিনি বিশ্বাস করতেন এবং সে অনুযায়ী কার্যক্রম চালিয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশে প্রথম মহিলা নিয়োগ হয় ১৯৭৪ সালে এটা ও বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলে। বঙ্গবন্ধুর এই বৈষম্যহীনতার কারণে আজকে আমি এখানে কথা বলতে পারছি। আমাদের নারীসমাজের এই অবস্থান। নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে অন্যতম একটি নাম বাংলাদেশ। আফরোজা মীম শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ \হকুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়।