নূপুর পায়ে রিনিক-ঝিনিক

নিটোল পায়ে এক জোড়া নূপুর রমণীর পায়ে রিনঝিন সুরে মাতিয়ে তোলে। রমণীর পায়ের নূপুর কখনো সুর তোলে তার মনের আনন্দ কথার। আবার বিষাদের সময়ও নূপুর বেজে চলে বেদনার সুরে। রবীন্দ্রনাথের গল্প-উপন্যাস থেকে শুরু করে এ যুগের আধুনিক মেয়ে সবারই পদযুগল সাজায় নূপুর।

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

সোরিয়া রওনক
বতর্মানে নূপুরের জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে মডেল : সৈয়দা শাহরি; ছবি : এসডি প্রিন্স
নিটোল পায়ে এক জোড়া নূপুর রমণীর পায়ে রিনঝিন সুরে মাতিয়ে তোলে। রমণীর পায়ের নূপুর কখনো সুর তোলে তার মনের আনন্দ কথার। আবার বিষাদের সময়ও নূপুর বেজে চলে বেদনার সুরে। রবীন্দ্রনাথের গল্প-উপন্যাস থেকে শুরু করে এ যুগের আধুনিক মেয়ে সবারই পদযুগল সাজায় নূপুর। একটা সময় ছিল যখন নূপুরের জায়গা ছিল শুধু নৃত্যশালায়। ধীরে ধীরে নূপুর উঠে এসেছে বাঙালির ঘরে ঘরে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী সবার পায়ে এখন নূপুর সাজে। বতর্মানে নূপুরের জনপ্রিয়তা বুঝি অনেক বেড়ে গেছে। পরিধানের পোশাকে কিছুটা পরিবতর্নই এর কারণ। মেয়েদের সালোয়ার, প্যান্ট, জিন্স সবকিছুই এখন দৈঘের্্য কিছুটা সংকুচিত। ফ্যাশনের এ নতুন ধারায় গা ভাসিয়েছেন সবাই। জিন্সটাকে গুটিয়ে ওপরে তুলে রাখা, সালোয়ার একটু খাটো করে তৈরি করা, আর থ্রি-কোয়াটার্র প্যান্ট পরা এ সবকিছুই এখন ফ্যাশনের অংশ। আর যেখানে পায়ের অনেকটা অংশই উন্মুক্ত সেখানে খালি পা সাজাতে একচিলতে নূপুর না হলেই নয়। নূপুরের রকমফের একসময় নূপুর দুই পায়ে একই ডিজাইনে জোড়া বেঁধে পরার রেওয়াজ থাকলেও হাল ফ্যাশনে নূপুরের আচরণটা কিন্তু একটু ভিন্ন। এখন এক পায়ে পঁাচ-ছয়টা নূপুর ঝোলানোও স্টাইলের পযাের্য় পড়ে। নূপুরের এক পায়ে উঠে আসার স্টাইলটা ঢাকায় পুরনো। চিকন, সূ² কাজের এসব নূপুর অনেকেই দু-তিনটা পেঁচিয়ে পায়ে জড়ান। তৈরি উপকরণের হিসেবে নূপুর বিভিন্ন ধরনের হয়। স্বণের্র দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় সোনার নূপুর এখন অনেকটাই উপন্যাসের পাতায় ঠঁাই পেয়েছে। আর সেখানে জায়গা করে নিয়েছে রুপা, ইমিটেশনসহ আরও নানা উপকরণের নূপুর। ঢাকায় স্বণের্র নূপুরের তুলনায় ইমিটেশনের নূপুরই বেশি জনপ্রিয়। খুব জমকালো নূপুরের ডিজাইনের প্রচলন এখন আর নেই বললেই চলে। এখন নূপুরের স্টাইলটা খুব হালকা ধরনের। সঙ্গে থাকতে পারে পুঁতি, স্টোন, কৃত্রিম মুক্তা আর ইমিটেশনের নানান ইলাস্ট্রেশন। এ ছাড়া স্বণের্র নূপুরগুলোও ডিজাইনে অনেকটাই হালকা হয়ে এসেছে। কিছু পুঁতি আর মিনার কাজ করা নূপুর মানিয়ে যাবে যে কোনো পোশাকের সঙ্গে। কোথায় পাবেন নূপুর যদি স্বণর্ কিংবা রুপার নূপুর কিনতে হয় তাহলে যেতে হবে সোনারুর দোকানে। ঢাকার চঁাদনী চক, মৌচাক, তঁাতিবাজার, বায়তুল মোকাররম আর বড় সব শপিং মলেই আছে কম-বেশি স্বণের্র দোকান। যেখানে স্বণর্ বা রুপার নূপুর কিনতে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ক্যাটালগ দেখে কিংবা নিজের ডিজাইন অনুযায়ী অডার্র করেও তৈরি করতে পারেন নূপুর। সে জন্য যেতে পারেন বায়তুল মোকাররম কিংবা তঁাতিবাজার এলাকায়। যদি ইমিটেশনের নূপুর কিনতে হয় যেতে পারেন ঢাকার যে কোনো শপিং মলে। সব শপিং মলই কম-বেশি ইমিটেশনের গহনার দোকান থাকে। তবে যারা নূপুরে বিশেষ ধরনের স্টোন বা ডিজাইন ব্যবহার করতে চান তারা যেতে পারেন বসুন্ধরা সিটির নিচ তলায় ইরানি ইমপোরিয়ামে। এ ছাড়া ঢাকার অন্যতম প্রসিদ্ধ ইমিটেশন গহনার দোকান জেমস্ গ্যালারির প্রায় সব শাখায়ই পাওয়া যাবে নানান আকৃতি ও উপকরণের নূপুর। ইমিটেশন আর স্বণের্র মাঝামাঝিও এক ধরনের নূপুর বাজারে এখন জনপ্রিয়। এটি হচ্ছে রুপার নূপুরের ওপর স্বণের্র ইলেকট্রোপ্লেটিং পদ্ধতিতে প্রলেপ দেয়া। এ ধরনের গহনার খুব সহজে রং নষ্ট হয় না, পাশাপাশি দামও তুলনামূলকভাবে স্বণের্র গহনা থেকে অনেকাংশেই কম। সাবধানতা : নূপুর যেমনই কিনুন না কেন খেয়াল রাখবেন খুব বিরক্তিকর শব্দ তৈরি করে এমন নূপুর পায়ে না ঝোলানোই ভালো। পাশাপাশি কেনার সময় দেখে কিনুন আপনার পায়ে যেন নূপুরটি অঁাটসঁাট হয়ে অস্বস্তিকর ভাব তৈরি না করে।