পঁাচ ধরনের ত্বকের কথা

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

তানিয়া তন্বী
মেকআপ করার আগে ত্বক প্রস্তুত করে নিতে হয় বিশেষভাবে। সাজের আগে বেইস তৈরির ব্যাপারে যতœ নিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় যে বেইস মেকআপ শুষ্ক ধরনের হলে অনেকের ত্বকের মরা চামড়া জেগে ওঠে, আবার বেইস মেকআপ যদি তৈলাক্ত ধরনের হয় তবে সে ক্ষেত্রে কিছুক্ষণ পরে গরমে মেকআপ যেন গলতে শুরু করে। তাই বেইস মেকআপ করার আগে ত্বকের ধরনটা বোঝা জরুরি। আর বেইস মেকআপের প্রথম শতর্ হলো ত্বককে পরিষ্কার করে সাজের জন্য প্রস্তুত করা। স্বাভাবিক ত্বক যাদের ত্বক শুষ্ক নয় আবার তৈলাক্তও নয় তাদের ক্ষেত্রে প্রথমে মসুর ডাল বাটা দিয়ে মুখটা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর তৈলাক্ত ধরনের ময়েশ্চারাইজার দিয়ে পঁাচ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এভাবে ত্বক মেকআপের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলে স্টিক ফাউন্ডেশন মুখে, গলায় লাগিয়ে একটা ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ভালোভাবে বেøন্ড করে দিতে হবে। এর ফলে মেকআপটা সহজে ত্বকের সঙ্গে বসে যাবে। এরপর একটা ব্রাশের সাহায্যে কমপ্যাক্ট পাউডার লাগাতে হবে। শুষ্ক ত্বক শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে দুধ, মধু, ময়দা অথবা বেসন দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তবে যাদের অ্যালাজির্র সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে দুধ বাদ দেয়া যেতে পারে। বাকি উপকরণগুলো দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে তেলযুক্ত ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে পঁাচ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। পঁাচ মিনিট পর ক্রিম বেইসড ফাউন্ডেশন মুখ ও গলায় ভালোভাবে লাগাতে হবে। এরপর একটা ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে মেকআপটা বেøন্ড করে বসিয়ে দিতে হবে। অতঃপর ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার দিয়ে বেইস মেকআপ শেষ করতে হবে। তৈলাক্ত ত্বক তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে তেঁতুল এবং মধু দিয়ে মুখটা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর পানিনিভর্র ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে মুখটা মেকআপের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। এরপর অ্যাস্ট্রিনজেন্ট লোশন লাগাতে পারেন। তাতে ত্বক টানটান দেখাবে। আর কোনো ধরনের ফাউন্ডেশন না লাগানোই ভালো। একটা ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে মুখটা হালকাভাবে ভিজিয়ে নিয়ে তারপর কমপ্যাক্ট পাউডার অথবা ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ভালোভাবে মুখ ও গলায় লাগিয়ে বেইস মেকআপ করতে হবে। স্পশর্কাতর ত্বক এসব ত্বকের বাইরে থেকে ত্বকের শিরাগুলো দেখা যায়। এ ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে বেইস মেকআপে বিশেষ যতœ নেয়া জরুরি। প্রথমে দুধ ও মধু দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। যাদের দুধে অ্যালাজির্ আছে তারা দুধের বদলে ময়দা বা বেসন ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া মধুর সঙ্গে লেবুর রস অথবা ডিমের সাদা অংশ নিতে পারেন। এসব দিয়ে মুখটা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। তারপর ক্রিম ফাউন্ডেশন মুখে ও গলায় লাগিয়ে একটা ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর কমপ্যাক্ট পাউডার লাগাতে হবে। মিশ্র ত্বক যাদের মুখের দুই পাশ শুষ্ক কিন্তু নাক, কপাল তৈলাক্ত তাদের ক্ষেত্রে দুধ, মধু, বেসন বা ময়দার মিশ্রণ অথবা লেবুর রস ও মধু দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। পঁাচ মিনিট পর ক্রিম ফাউন্ডেশন মুখে ও গলায় লাগিয়ে একটা ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর কমপ্যাক্ট পাউডার লাগিয়ে বেইস মেকআপ শেষ করতে হবে। মেকআপের জন্য দিনের বেলায় মেকআপের ক্ষেত্রে কমপ্যাক্ট পাউডার হালকাভাবে লাগানোই ভালো, কিন্তু রাতের মেকআপের জন্য নাক, কপাল, থুতনি, দুই চোয়ালে একটু বেশি করে কমপ্যাক্ট পাউডার লাগাতে হবে। বেইস মেকআপ শেষ হলে আইব্রো পেনসিল দিয়ে হালকভাবে ভ্রæটা অঁাকিয়ে নিয়ে চোখের ধরন অনুযায়ী মোটা বা চিকন করে কাজল লাগিয়ে নিন। আঙুলের মাথা দিয়ে কাজল ঘষে দিলে স্বাভাবিক রূপটা ফুটে উঠবে। হালকাভাবে বøাশ লাগানো যেতে পারে। আর বাকি থাকল ঠেঁাট। দিনের বেলা হলে একটু ম্যাট আর রাতের বেলা লিপ গøস লাগিয়ে নিজেকে একবার আয়নায় দেখুন যেন স্নিগ্ধতার আভা ফুটে উঠেছে। জেনে নিন ত্বকের মরা চামড়া দূর করতে সব ধরনের ত্বকের জন্য সপ্তাহে এক দিন স্ক্রাব করাটা জরুরি। এ ক্ষেত্রে চালের গুঁড়া, দুধ, মধু ও গাজরের রস দিয়ে একটা প্যাক তৈরি করে তা দিয়ে মুখে স্ক্রাব করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই মেকআপ ভালোভাবে তুলতে হবে। হালকা তেল ও পানি মিশিয়ে তুলার সাহায্যে মুখে লাগাতে হবে এবং শেষ বিন্দু পযর্ন্ত মেকআপ তুলে মুখটা পরিষ্কার করে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। বেইস মেকআপ করার সময় মুখ পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে পঁাচ মিনিট অপেক্ষা করে মেকআপ শুরু করতে হবে। ফাউন্ডেশন লাগিয়ে ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে মুখের সঙ্গে ভালোভাবে বেøন্ড করে দিতে হবে। ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন এবং কমপ্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করতে হবে। মেকআপ করার জন্য ত্বককে প্রস্তুত করতে হবে বিশেষভাবে। তাই ত্বক সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে এবং পাশাপাশি তৈলাক্ত খাবার কমিয়ে দিয়ে প্রচুর পানি, শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে। তবেই ত্বকের সতেজতা বজায় থাকবে।