ফ্যাশনের উঁচু হিল

প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

লামিয়া লাবন্য
লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, বাদামি... আরও কত রঙের বাহার। বলছি উঁচু হিলের জুতার কথা। সাধারণ হিল নয়, যেন হিলের চেয়েও উঁচু হিল বা স্টিলেটো। স্টিলেটোয় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে পাথর, পুঁতি ও মুক্তার ব্যবহারে। যে কোনো অনুষ্ঠানে হাল ফ্যাশনের উঁচু হিলের স্টিলেটো স্যান্ডেল কিংবা কোটর্ জুতা পরলে সবার নজর কাড়বেই। নিত্যদিনে স্টিলেটো স্যান্ডেল ততটা ব্যবহার না হলেও, বিশেষ কোনো দিনকে বিশেষ মাত্রা দিতে এর জুড়ি নেই। একসময় কালো রঙের স্টিলেটোর চল ছিল। এখন কালোর পাশাপাশি কমলা, গাঢ় বেগুনি, সোনালি, বাদামি, নীলের নানা শেডসহ একই জুতায় বহু রঙের মিশেল চলছে। স্যান্ডেলটি আরও আকষর্ণীয় করে তুলতে সাটিনসহ নানা ধরনের কাপড়ও ব্যবহার করা হয়। সাটিনের ব্যবহারে উজ্জ্বলতা বাড়ে। রংও হয় দীঘর্স্থায়ী। অ্যাপেক্স অ্যাডেলকি ফুটওয়্যার লিমিটেডের বিপণন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক খন্দকার স্বনন শাহরিয়ার বলেন, আগে শুধু চামড়ার জুতা তৈরি হতো। এখন চামড়ার পাশাপাশি সিনথেটিক উপাদানও ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব উঁচু হিলের স্যান্ডেল বা জুতার সামনের অংশে পাথর, পুঁতি বা বিডস এবং মুক্তা দিয়ে নকশা করা হয়েছে। ভিন্ন মাত্রা আনতে নিচের হিলজুড়েও রয়েছে পাথর ও পঁুতির ব্যবহার। এতে একঘেয়েমি কাটবে ক্রেতার। এখনকার তরুণীরা চার থেকে ছয় ইঞ্চির স্টিলেটো বেশি ব্যবহার করছেন। তবে কেউ কেউ আরও উঁচু স্টিলেটোও পছন্দ করেন। পাশ্চাত্য ঢঙের পোশাকের সঙ্গে স্টিলেটো বেশি মানানসই। যেমন স্কাটর্, ফরমাল শাটর্-প্যান্টের সঙ্গে এ জুতা মানায় ভালো। তবে দেশি সাজপোশাকেও দারুণ গø্যামার যোগ করতে পারে এ ধরনের জুতা। গ্যালারি অ্যাপেক্সে এ বছর জুতার নকশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার শাহরুখ আমিন। স্টিলেটো জুতার সঙ্গে কোন ধরনের সাজ-পোশাক মানানসই, সেই পরামশর্ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, শিফন, জজের্ট কিংবা সিল্কÑ এজাতীয় শাড়ির সঙ্গে উঁচু হিলের স্যান্ডেল বা জুতা পরতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে গহনা ও সাজের দিকে। চোখে স্মোকি বা বণির্ল আইশ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন। হালকা বেইস দিয়ে শুধু লাল লিপস্টিক ঠেঁাটে দিলে সাজ পূণর্তা পাবে। স্টিলেটো জুতার সঙ্গে জাঙ্ক ধঁাচের গহনা সহজেই মানিয়ে যায়। জুতার দিকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করতে চাইলে পোশাকটি হালকা রঙের হলেই ভালো। সালোয়ার-কামিজের সঙ্গেও উঁচু হিলের জুতা হরদম পরছেন তরুণীরা। তবে সাধারণ সালোয়ারের পরিবতের্ ডিভাইডার, প্যান্ট-সালোয়ার বা চুড়িদারের সঙ্গে এ জুতা মানানসই। আর লেগিংস তো পরতে পারেনই। ফ্যাশন ডিজাইনারদের মতে, যাদের শারীরিক গড়ন খাটো বা মোটা, তাদের চেয়ে লম্বা ও ছিপছিপে গড়নের মেয়েরা এ ধরনের জুতা পরলে ভালো দেখাবে। দিনের বেলায় খুব চড়া রঙের স্টিলেটো না পরে বাদামি, সাদা-কালো চেকের জুতা বা সোনালি-রুপালির মিশেল দেয়া জুতা পরতে পারেন। মডেল ও অভিনয়শিল্পী ইশানা প্রায়ই স্টিলেটো জুতা পরেন। কালো ও রুপালি রঙের স্টিলেটো বেশি পরা হয় বলে জানালেন তিনি। ‘অনুষ্ঠান মানেই স্টিলেটো। এ সময়ের ট্রেন্ডি পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায় এ জুতা। আবার শাড়ির সঙ্গেও পরা হয়। কালো রঙের কোনো শাড়ি পরলে এর সঙ্গে বৈপরীত্য এনে ম্যাজেন্টা কিংবা লাল রঙের স্টিলেটো পরলে অন্যরকম দেখায়। হাতে নিতে পারেন জুতার সঙ্গে মিলিয়ে ক্লাচ।’ বলেন ইশানা। সবসময়ের জন্য স্টিলেটো ব্যবহার না করার পরামশর্ দেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা। বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান, যেখানে দীঘর্ সময় কাটানো হবে না, এমন জায়গায় স্টিলেটো পরলে ভালো। আরামদায়ক না হলে যতই ফ্যাশনেবল হোক না কেন, জুতা ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে শেষ কথা হলো, ব্যক্তিত্ব ও পরিবেশের সঙ্গে মানানসই জুতা পরা উচিত।