বেড়ানো

পুরীর সোনালি সৈকতে...

পুরীর চারপাশে অনেক দশর্নীয় ও পবিত্র স্থান। পুরীতে অবস্থান করে দিনে দিনে চাদিপুর সৈকত, চিলকা হ্রদ, সূযর্ মন্দিরের শহর কোনাকর্ (বিশ্বঐতিহ্যে স্থান পাওয়া মন্দির) এবং নিরিবিলি গোপালপুর সৈকত দেখতে পারবেন...

প্রকাশ | ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

আবু আফজাল মোহা. সালেহ
কোনাকের্র সূযর্ মন্দির
বাঙালির চিরকালীন নস্টালজিয়া রয়েছে পুরীকে ঘিরে। ইতিহাসেও বহু প্রাচীনকাল থেকেই পুরী বা পুরুষোত্তম ক্ষেত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। ওড়িশার এই একান্ত বাঙালিপ্রবণ শহরটির মূল আকষর্ণ দীঘর্ সমুদ্রতট আর জগন্নাথ দেবের মন্দির। পুরীর বিচগুলোর মধ্যে স্বগর্দ্বারের প্রশান্তিই সবচেয়ে বেশি। পুরীর সমুদ্র স্নœান করার ব্যাপক চল থাকলেও সমুদ্র অনেক সময়ই বেশ বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, তাই সাবধানতা নেয়া উচিত। বেড়ানোর সেরা সময় অক্টোবর থেকে ফেব্রæয়ারি। তবে সারাবছরই ভিড় লেগে থাকে। ভারতের হিন্দুদের চারধাম অথার্ৎ বদরীনাথ, দ্বারকা, রামেশ্বরম এবং পুরী। পুরাণের কথায়, শ্রীজগন্নাথ বদরীতে স্নান করে দ্বারকায় অঙ্গসজ্জা করেন। তারপর পুরীতে অন্নভোগ সেরে রামেশ্বরমে শয়ান বা বিশ্রাম নেন। বাংলা-উড়িশ্যা-বিহার। শেষ নবাব ছিলেন সিরাজউদ্দৌলা। বলার কারণ হচ্ছে পশ্চিমবাংলার প্রতিবেশী হচ্ছে উড়িশ্যা রাজ্য। স্বপ্নের সমুদ্র সৈকত ‘পুরী’ এখানেই অবস্থিত। সমুদ্র সৈকত তো নয় যেন সোনা বিছানো। অন্যান্য সমুদ্র সৈকত আর পুরীর পাথর্ক্য এখানেই। পুরীর উত্তাল সোনালি সৈকত যে কাউকেই মুগ্ধ করবেই। এই পুরী বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দিরের জন্য। এটি হিন্দুদের জন্য তীথের্ক্ষত্র। শ্রী জগন্নাথ মন্দির। সারা ভারতবষের্র লোক প্রায় প্রতিদিনই আসে এই মন্দির দশের্ন। ফাও হিসেবে পায় দশর্নীয় গোল্ডেন ‘সি বিচ’- পুরী। পুণ্যস্নান করে অনেক ধমর্প্রাণ হিন্দু। বলে রাখা ভালো উড়িশ্যা রাজ্যকে বলা হয় মন্দিরের রাজ্য। অলি-গলি, রাস্তায় নয়রাভিরাম মন্দির। কলকাতা/হাওড়া দিয়ে যখন ভুবনেশ্বর, গোপালপুর দিয়ে যাবেন একথাটির সত্যতা পাবেন। ট্রেনে হাওড়া থেকে পুরী যাত্রা আরামদায়ক। কলকাতার ধমর্তলা থেকে বিভিন্ন রাজ্যের বাস পাওয়া যায়। ট্রেনের মতো ¯িøপিং (ঘুমানোর ব্যবস্থা) সিটের ব্যবস্থা আছে। নিচে সিটের যাত্রী আর মাথার ওপর ঘুমানোর ব্যবস্থা। দারুণ অভিজ্ঞতা! এসি-নন-এসি সব বাসই পাবেন। ভারতের অনেক রেল-স্টেশনই দেখতে সুন্দর। পুরী যেতে ভারতের সবচেয়ে দীঘর্তম প্লাটফরম দেখতে পারবেন! পরিচ্ছন্ন খড়গপুর স্টেশন। কেরালা, গোয়া, উড়িশ্যা যেতে হলে এ স্টেশন দিয়েই যেতে হবে। পুরী রেল-স্টেশনটিও অনেক সুন্দর। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছেÑ পুরীর চারপাশে অনেক দশর্নীয় ও পবিত্র স্থান। পুরীতে অবস্থান করে দিনে দিনে চাদিপুর সৈকত, চিলকা হ্রদ, সূযর্ মন্দিরের শহর কোনাকর্ (বিশ্বঐতিহ্যে স্থান পাওয়া মন্দির) এবং নিরিবিলি গোপালপুর সৈকত দেখতে পারবেন। আষাঢ় মাসের শেষের দিকে ‘রথযাত্রা হয়’। সৌভাগ্য আমার কয়েকবছর আগে আমি যখন পুরীতে গিয়েছিলাম তখন রথযাত্রার সময় ছিল। তিল ধারণেই ঠঁাই থাকে না তখন রাস্তা-ঘাট, স্টেশন কিংবা হোটেলে। কীভাবে যাবেন: হাওড়া, শিয়ালদহ এবং সঁাতরাগাছি থেকে ট্রেন রয়েছে পুরী যাওয়ার। হাওড়া থেকে বেশ কিছু। রাতের ট্রেনে গেলে থাকার ঝামেলা একদিন কমে যাবে কিন্তু আরামদায়ক হবে। টিকিট আগেই কাটতে হবে। একটু বেশি ভাড়া দিয়ে দুদিন আগে আসন পাওয়া সাপেক্ষে ততকাল টিকিট পাওয়া যাবে। আর কলকাতার ফেয়ারলি থেকে বিদেশিদের জন্য সংরক্ষতি টিকিট পাওয়া যায়। টিকিট পাওয়া না গেলে পাসপোটর্ দেখানো সাপেক্ষে টিকিট পাওয়া যায়। ¯িøপার, এসি, নরমাল, চেয়ার প্রভৃতি শ্রেণিভেদে ভাড়া বিভিন্ন রকম। উচ্চ শ্রেণির টিকিটের সঙ্গে নাশতা ও খাবারের চাজর্ও ধরা হয়ে থাকে। পুরীর হোটেল বুক কলকাতা থেকেই এজেন্টের মাধ্যমে করে নিলেই ভালো হয়। টিকিটের ব্যবস্থাও এরা করে দেয়। স্টেশনের আশপাশেই ট্যুরিস্ট এজেন্ট পাবেন। যে হোটেল বুক করেছেন, তাদের পিকআপের ব্যবস্থা রয়েছে কিনা জেনে নেবেন। কোথায় থাকবেন: সৈকত ঘিরে ও আশপাশে অনেক হোটেলই পাবেন। যদি আগেই বুকিং না করে থাকেন তাহলে পছন্দমতো হোটেল থাকা-খাওয়ার জন্য বেছে নিতে পারবেন। সৈকতের সাত সতেরো: এখন নানা ধরনের ওয়াটার ¯েপাটের্সর ব্যবস্থা রয়েছে। নিজের মতো করে চঁাদোয়া খাটিয়ে নিন। কেউ ভিড় করবে না। বিচে সময় কাটিয়ে, পরের দিন রাখুন সাইট দেখার জন্য। মোটামুটি দরদাম করলে যে কোনো চিল্কা, কোনাকর্ ঘুরিয়ে আনবে হাজার দুয়েক টাকার (রুপি) মধ্যেই।