হুমায়ূন আহমেদের রসনা বিলাস

প্রকাশ | ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

রঙ বেরঙ ডেস্ক
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক, চলচ্চিত্র ও নাট্য পরিচালক হুমায়ূন আহমেদ। তার সৃষ্টিতে যাপিতজীবনের উত্থান-পতন যেমন উঠে এসেছে তেমনি বাঙালির সাধারণ অথচ জিভে জল আনা রসনাও। ‘হেমন্তের নতুন ধান খেয়ে হঁাসের গায়ে চবির্ হয়, সেই হঁাস নতুন আলু দিয়ে ভুনা করে শীতের সকালে চালের রুটি দিয়ে খাওয়ায় যে কি স্বাদ’ অথবা ‘চাকচাক করে কাটা আলু ঘিয়ে ভেজে তার সঙ্গে ভাজা শুকনা মরিচ মাখিয়ে ভাতের সঙ্গে খাওয়া’Ñ হুমায়ূন আহমেদের এরকম অসাধারণ বণর্নায় মুগ্ধ হয়েছেন অসংখ্য পাঠক। বলাই বাহুল্য, আগ্রহের আধিক্যে অনেকে বাসাতেও তৈরি করেছেন হুমায়ূন আহমেদের রেসিপি। কালিজিরা চালের প্রতি সম্ভবত তার বিশেষ দুবর্লতা ছিল, বেশ কয়েকটি লেখায় এসেছে এর উল্লেখ। ‘মাতাল হাওয়া’ উপন্যাসে কালিজিরা চালের ভাতের সঙ্গে ছিল মুরগির মাংস আর ‘মধ্যাহ্ন ২’ উপন্যাসে কালিজিরা চালের ভাতের সঙ্গে বেড়ে দেয়া হয়েছে বাটিভরা খাসির মাংস আর পেঁয়াজ। একইভাবে ‘ইলিশ মাছের ডিমের তরকারি’র কিংবা ‘কঁাঠালের বিচি দিয়ে ঝাল মুরগির সালুন’-এর কথাও এসেছে বেশ কয়েকটি উপন্যাসে। হুমায়ূন আহমেদ কিন্তু শুধু বিলাসী খাবারের কথাই বলেননি, অনেক সাধারণ খাবারের অসাধারণ বণর্না দিয়েছেন। ‘জোছনা ও জননীর গল্প’-এ আছেÑ ‘মরিয়ম বসে আছে তাদের বাসার সিঁড়ির সামনে। আজ সারাদিন সে কিছু খায়নি। যদিও ঘরে অনেক কিছু রান্না হয়েছে। এর মধ্যে অনেক তুচ্ছ রান্নাও আছে। একটা হলো খুবই চিকন করে কাটা আলুর ভাজি। আরেকটা হলো কঁাচা টমেটো পুড়িয়ে ভতার্। এই দুটি আইটেম নাইমুলের পছন্দ। মরিয়ম নিজে রেঁধেছে নতুন আলু দিয়ে মুরগির মাংসের ঝোল।’ মূলত বাঙালি রসনার বৈচিত্র্য, স্বাভাবিক অথচ রুচিকর রান্না পদ্ধতিগুলো বারবার আকৃষ্ট করেছে হুমায়ূন আহমেদের অগণিত পাঠকদের।