বসন্তভরা ভালোবাসার দিনে

ফাল্গুনের দিনে এবং ঘরের বাইরে সবখানেই উৎসবের আমেজ। আর তাই তো সাজটাও হওয়া চাই হালকা ও পরিপাটি। ফাগুনের উৎসবের আমেজে ভালোবাসার মানুষটির পাশেও থাকা চাইÑ এর জন্য নিজের সাজটিও হতে হবে আকষর্ণীয়। আপনার সাজের আগে অবশ্যই তৈলাক্ত ত্বকটি ভালো করে ফেসওয়াশ করে সানস্ক্রিন বুলিয়ে নিন। মেকআপে বেইজ তৈরি করা সবচেয়ে জরুরি। গায়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে অয়েল বা ওয়াটার বেইজড ফাউন্ডেশন লাগান...

প্রকাশ | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

তানিয়া তন্বী
পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস দুটি দিনই আমাদের অনেক কাক্সিক্ষত উৎসবে রূপ নিয়েছে। আর দুটি দিনই আসে প্রায় একই সঙ্গে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি পর পর দুদিনই আমাদের জন্য বিশেষ। বিশেষ করে যারা সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি, আর নানা রঙে সাজার উপলক্ষ খুঁজি। বিশেষ এই দিনে আমরা সবাই চাই নিজেকে সবচেয়ে সুন্দর আর আকষর্ণীয়ভাবে প্রিয়জনের সামনে উপস্থাপন করতে। আসছে ভালোবাসা দিবস। ১৪ ফেব্রæয়ারি। দিনটা একটু বেশিই রঙিন। ফাল্গুনের রঙে, ভালোবাসার আবিরে সবার চেয়ে আলাদা করে সেজে ওঠার সময় তো এখনই। আর কদিন পরে ভালোবাসার উৎসবে মাতলেও প্রস্তুতি শুরু হয়ে এরই মধ্যে। আসুন জেনে নিই এমনই কিছু ভালোবাসার আয়োজনে। পোশাকে, অনুষঙ্গে ভালোবাসার অনুভব ফুটিয়ে তোলাই হোক আপনার ভালোবাসা দিবসের স্টাইল। ভালোবাসার রং হতে পারে লাল, তাই বলে সবকিছু লাল পরলে ভালো লাগবে না। শাড়ি, ব্যাগ কিংবা জুতা যে কোনো দু-একটি অনুষঙ্গ রাখতে পারেন লাল রঙের। সে ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ হতে পারে ছোট হাতলের রঙিন বড় ব্যাগ। শাড়ি পরার ধরনে বাঙালিয়ানা আনতে পারেন। চাইলে তাজা ফুল জড়াতে পারেন চুলে বা হাতে। জিন্স, ফতুয়া, টপস, সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে কপারের বড় বালা সুন্দর লাগবে। আবার পোশাকটা লাল হলে অনুষঙ্গ একদম বাদও দিতে পারেন। ফাল্গুনের দিনে এবং ঘরের বাইরে সবখানেই উৎসবের আমেজ। আর তাই তো সাজটাও হওয়া চাই হালকা ও পরিপাটি। ফাগুনের উৎসবের আমেজে ভালোবাসার মানুষটির পাশেও থাকা চাইÑ এর জন্য নিজের সাজটিও হতে হবে আকষর্ণীয়। আপনার সাজের আগে অবশ্যই তৈলাক্ত ত্বকটি ভালো করে ফেসওয়াশ করে সানস্ক্রিন বুলিয়ে নিন। মেকআপে বেইজ তৈরি করা সবচেয়ে জরুরি। গায়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে অয়েল বা ওয়াটার বেইজড ফাউন্ডেশন লাগান। মুখে, গলায় ও ঘাড়ে সমানভাবে বেøন্ড করুন। এরপর কমপ্যাক্ট পাউডারের প্রলেপ দিন। বসন্তের সময় হালকা আইশ্যাডো মানানসই। চোখের নিচের পাতায় কাজলের হালকা রেখা আর ওপরের পাতায় আইলাইনার টানতে পারেন। কমপক্ষে দুবার মাশকারা লাগান। দিনের সাজে হালকা করে বøাশন নিয়ে নিন, হাসলে গালের যে অংশ ফুলে ওঠে সেখানেও বøাশন ব্যবহার করুন। এরপর লিপস্টিক দিন। ফাগুনের সাজে ঠেঁাট একটু কালারফুল হলেই ভালো দেখাবে। সঙ্গে টিপ লাগাতে ভুলবেন না, কারণ বাসন্তি সাজে টিপ দারুণ মানায়। এখনো শীতের আমেজ রয়েছে তাই যে কোনো পোশাকের সঙ্গে বেøা-ডাই বা আয়রন করে চুল ছেড়ে রাখতে পারেন। চুলে গুজে দিন তাজা বসন্তের ফুল। চুলে খেঁাপা করলে তাজা ফুলের মালা পরতে ভুলবেন না। পোশাক বাছার সময় মাথায় রাখুন আপনার প্ল্যান। যদি সারাদিনের জন্য বেরনোর পরিকল্পনা থাকে তাহলে অবশ্যই ক্যাজুয়াল পোশাকেই মনোনিবেশ করুন। যদি রাতে রোম্যান্টিক ডিনারে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে তাহলে শাড়ি পরতে পারেন। আর যদি নাইট আউটের কথা ভেবে রাখেন তাহলে সব থেকে উপযোগী শটর্ ড্রেস। তবে সবটাই বাছতে হবে নিজের চেহারা ও সেদিনের আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। ঝলমলে রোদ, হালকা শীত, বসন্তের আগমনী বাতার্ ও সবোর্পরি প্রেমকে মাথায় রেখে অনুজ্জ্বল রঙে দিন এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। সুন্দর রঙে নিজেকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলুন। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস ঘুরে দেখা গেছে, এ বছরও তারা ক্রেতাদের জন্য ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে রঙ-বেরঙের পোশাক সাজিয়ে রেখেছেন। সেগুলোর মধ্যে আবার ‘জুটি’ ড্রেসও রয়েছে। যেমনÑ শাড়ির সঙ্গে পাঞ্জাবি কিংবা পাঞ্জাবির সঙ্গে সালোয়ার-কামিজের কম্বিনেশন। ভালোবাসার রং যেহেতু লাল তাই পোশাকের ডিজাইনে লাল রঙের প্রাধান্যই বেশি। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে, ভালোবাসা দিবসের আগের দিন পহেলা ফাল্গুন হওয়ায় তারা ওই দিনের জন্যও পোশাক তৈরি করেছেন। তবে কোনো কোনো ফ্যাশন হাউস তাদের একটি পোশাকেই দুটোর সম্মিলন ঘটিয়েছে। মানে পোশাকটিতে ভালোবাসা ও ফাল্গুনÑ একসঙ্গে দুটোকেই পাবেন। ভালোবাসা দিবসের পোশাক নিয়ে কথা হয় কজন ফ্যাশন ডিজাইনারের সঙ্গে। কথায় কথায় তারা জানান, কালো, নীল, মেরুনÑ সব রঙের সমন্বয়ে লাল রং। ভালোবাসার সূ² সূ² অনুভ‚তি প্রকাশ করার একমাত্র রং হচ্ছে লাল। এজন্য লাল রংকেই ভালোবাসার রং হিসেবে মনে করা হয়। আর তাই তো সব পোশাকেই লাল রঙের একটা কম্বিনেশন রয়েছে। অনেক ফ্যাশন হাউস ঘুরে দেখা গেছে, শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে পাঞ্জাবির কম্বিনেশন। এগুলোকে ফ্যাশন হাউসগুলো ‘কাপল’ ড্রেস বলে উল্লেখ করেন। আড়ং, অঞ্জন’স, রঙ-বিশ্বরঙ, বাংলার মেলা, প্রবতর্না, নগরদোলা, নিপুণ, বিবিআনা, নিত্য উপহার, অন্যমেলা, এড্রয়েট, ফড়িং, ইন্ডিগো, এমপ্রেসসহ বেশকিছু হাউসের আউটলেটে আপনি পাবেন ভালোবাসা দিবসের চমৎকার সব পোশাক। এ ছাড়া আজিজ সুপার মাকেের্ট বেশকিছু দোকানেও পাবেন এই স্পেশাল দিনের নানা রঙের পোশাক। ফ্যাশন হাউসগুলোতে পোশাকের পাশাপাশি পাবেন নানা ধরনের গিফট বক্স। সাধারণত আপনি ১২০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে চাইলেই নিজের পছন্দমতো পোশাকটি বেছে নিতে পারবেন এসব হাউস থেকে। আর আজিজ সুপার মাকেের্ট গেলে আরও কমেও কিছু পোশাক পেয়ে যাবেন। আর কেউ কাপল পোশাক কিনলে বিভিন্ন ডিজাইনের ওপর দাম নিভর্র করবে। তারপরও ৩০০০ থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে আপনি ‘কাপল’ পোশাক কিনতে পারবেন। ভালোবাসা দিবসে ফুরফুরে মনের সঙ্গে পোশাকটাও তাই নান্দনিক হওয়া চাই। আর সাজের ক্ষেত্রে প্রিয় মানুষটি কি পছন্দ করে, সেটা কিন্তু বিবেচনায় রাখতেই হবে। আপনার ভালোবাসার মানুষটি আপনাকে কীভাবে দেখতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে, সবার শুরুতে সে বিবেচনাটি মাথায় রাখতে ভুলবেন না যেন।