পহেলা বৈশাখের সাজ

গ্রীষ্মের বাড়তি গরমে কেমন শাড়ি পরলে ভালো লাগবে বৈশাখের সাজে, তাও ভেবে নিতে হবে। গরমে সিনথেটিক কাপড় এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। যেহেতু দিনের অনেকটা সময় শাড়ি পরেই থাকতে হবে, সে ক্ষেত্রে সুতি কিংবা সিল্কের শাড়িতেই আরাম পাওয়া যাবে। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি বৈশাখের শাড়ি হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। তবে তাঁতে বোনা সুতি জামদানি শাড়ি কিংবা তাঁতে বোনা সুতি শাড়ির ওপর সুতার কাজ এবং বস্নক বাটিকে সুতির শাড়িগুলো বৈশাখের পোশাকে তুলে ধরে ভিন্ন রকম আমেজ...

প্রকাশ | ৩১ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

তামান্না হক
বৈশাখে সবাই নিজেকে বাঙালি সাজে সাজাতে চায়। বর্ষবরণে নিজেকে নতুনরূপে সাজাতে সবাই শাড়িটাকেই প্রাধান্য দেন। শাড়িই বৈশাখের সাজের অন্যতম অনুষঙ্গ। বর্ষবরণে বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে পুরোপুরি ফুটিয়ে তোলে শাড়ি। তবে গ্রীষ্মের বাড়তি গরমে কেমন শাড়ি পরলে ভালো লাগবে বৈশাখের সাজে, তাও ভেবে নিতে হবে। গরমে সিনথেটিক কাপড় এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। যেহেতু দিনের অনেকটা সময় শাড়ি পরেই থাকতে হবে, সে ক্ষেত্রে সুতি কিংবা সিল্কের শাড়িতেই আরাম পাওয়া যাবে। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি বৈশাখের শাড়ি হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। তবে তাঁতে বোনা সুতি জামদানি শাড়ি কিংবা তাঁতে বোনা সুতি শাড়ির ওপর সুতার কাজ এবং বস্নক বাটিকে সুতির শাড়িগুলো বৈশাখের পোশাকে তুলে ধরে ভিন্ন রকম আমেজ। এ ছাড়া সুতি কাপড়ের শাড়ির ওপর স্ক্রিন ও অ্যামব্র্রয়ডারির কাজের শাড়িগুলোও আপনি বেছে নিতে পারেন। বৈশাখের সাজ মানেই লাল পাড়ের সাদা রঙের শাড়ি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসেছে নতুনত্ব। এখন আর লাল-সাদায় সীমাবদ্ধ নেই বৈশাখ। ফ্যাশন সচেতনরা বেছে নিচ্ছেন পোশাকে বিভিন্ন রং। হালকা গোলাপি, কমলা, মেরুন কিংবা নীল রঙের সুতি শাড়ির মধ্য দিয়ে নিজেকে সাজিয়ে নিতে পারেন বৈশাখের সকালে। শাড়ি বাছাইয়ের পাশাপাশি পছন্দের বস্নাউজ তৈরিটাও সমান গুরুত্ব পায় বর্ষবরণে। শাড়িটা সাদামাটা হোক কিংবা জমকালো, এখন বস্নাউজটা হওয়া চাই ভিন্ন ধাঁচের। ফ্যাশন-সচেতন সব নারীই এখন মনোযোগ দিচ্ছেন বৈচিত্র্যময় ও সুন্দর বস্নাউজের দিকে। এখনকার ট্রেন্ডটা হলো শাড়ির সঙ্গে কন্ট্রাস্ট বস্নাউজ পরার। সুতি বা তাঁতের শাড়িগুলোর সঙ্গে কাঁথাস্টিচ, টাইডাই, প্যাচওয়ার্কের কাজ করা বস্নাউজ পরা যেতে পারে। গামছা কাপড়ের বস্নাউজও ভালো লাগবে। শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পাইপিং লাগানো যেতে পারে। রাতে দাওয়াত কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে অ্যান্ডি সিল্ক, ধুপিয়ান বা কাতান কাপড়ে লেইস বসানো অথবা নকশা করা বস্নাউজ পরা যেতে পারে। এই সময়ে হাই নেক, বোট নেক, পেছনে কাটা, সামনে ও পেছনে 'ভি' আকৃতির কাটের বস্নাউজের চল দেখা যাচ্ছে। স্টিভলেস ও কনুই পর্যন্ত হাতার বস্নাউজের সঙ্গে ফুলহাতার বস্নাউজও হবে ফ্যাশনেবল। বৈশাখে সবার আগে যে বিষয়টি তরুণীদের ভাবায়, সেটি বৈশাখের সকালের সাজ। কেমন হবে বৈশাখের প্রথম সকালের সাজের ধরন? সাজসজ্জার নানা পরামর্শ দিয়েছেন রূপবিশেষজ্ঞ গীতিবিলস্নাহ। তার মতে, বৈশাখের প্রথম সকালে শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পরে নিতে পারেন বিভিন্ন ডিজাইনের মাটির গহনা। এ ছাড়া শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের পাট কিংবা পুঁতির মালাও পরতে পারেন। আর বৈশাখের সাজে এসব গহনা আপনার সঙ্গে অনায়াসে মানিয়ে যাবে। বৈশাখের সাজ সম্পর্কে রূপবিশেষজ্ঞ গীতিবিলস্নাহ জানান, বৈশাখের সাজে ফাউন্ডেশন কিংবা ফেস পাউডার ব্যবহার না করাটাই ভালো। তবে কেউ যদি মেকআপ করতেই চায় তা হলে তেলহীন (অয়েলফ্রি) মেকআপ ব্যবহার করতে পারেন। তার সঙ্গে দিতে হবে ম্যাট ফাউন্ডেশন। আর বাইরে যাওয়ার সময় অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। মেকআপ করার আগের দিন রাতে অবশ্যই ফেসিয়াল করে নিতে হবে। কারণ তা না হলে ত্বকে মেকআপ বসবে না। তবে যদি সেটা করা না যায়, তাহলে মাইল্ড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ভালোভাবে মুছে নিতে হবে। সব ধরনের ত্বকে মেকআপ লাগানো যায়। তবে এ ক্ষেত্রে জরুরি হলো মেকআপ বেস্নডিং। তারপর টোনার দিয়ে ত্বক টোন করে নিতে হবে। এবার মুখে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। এর ৫ মিনিট পর সানস্ক্রিন বা ফাউন্ডেশন লাগান। তারপর কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর ট্রান্সলুশান পাউডার অথবা পিঙ্ক শেডের ফেস পাউডার পাফ করুন। একটু অপেক্ষার পর লাগালে মেকআপটা ত্বকে ভালোভাবে বসবে। এ সময় মুখে একটু বেশি পাউডার লাগান। তারপর সামান্য পানি স্প্রে করুন। এবার পাউডার ত্বকের সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন তাতে দেখতে সুন্দর লাগবে। তখন মেকআপ বেশি মনে হবে না। তা ছাড়া যদি পানি স্প্রে করে নেন তাহলে সারাদিন ঘাম হওয়ার ভয় থাকে না। এরপর চিকবোন হাইলাইট করুন বস্নাসন দিয়ে। বস্নাসন যেন হালকা হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। তাতে আপনার ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলে যাবে বা কাছাকাছি হবে। ফর্সা মেয়েদের গাঢ় রঙের বস্নাসন যেমন লাল, মেরুন গোলাপি বস্নাসন লাগাতে হবে। আর যাদের গায়ের রং চাপা তারা বাদামি রঙের বস্নাসন লাগাতে পারেন।