কেনাকাটায় থাক ঈদ উচ্ছ্বাস

আর কিছুদিন বাদেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছে সবাই। সারা ঢাকা শহর ঘুরলে দেখা যাবে ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত গোটা রাজধানীবাসী। অনেকের কেনাকাটা হয়তো এরই মধ্যে শেষ আবার কেউ কেউ ভাবছেন কখন, কীভাবে, কোথায় কেনাকাটা করবেন? কেনাকাটার আগে ঠিকঠাক প্রস্তুতি না নিলে, দারুণ বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন এ সময়। প্রচন্ড গরম ও ভিড়ে তালগোল পাকিয়ে যেতে পারে শপিং লিস্টে।

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৯, ০০:০০

তানিয়া তন্বী
শপিংয়ে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় পণ্যের একটি তালিকা করে নিন ছবি : ইন্টারনেট
ঈদ চলে আসছে। আর কিছুদিন বাদেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছে সবাই। সারা ঢাকা শহর ঘুরলে দেখা যাবে ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত গোটা রাজধানীবাসী। অনেকের কেনাকাটা হয়তো এরই মধ্যে শেষ আবার কেউ কেউ ভাবছেন কখন, কীভাবে, কোথায় কেনাকাটা করবেন? কেনাকাটার আগে ঠিকঠাক প্রস্তুতি না নিলে, দারুণ বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন এ সময়। প্রচন্ড গরম ও ভিড়ে তালগোল পাকিয়ে যেতে পারে শপিং লিস্টে। শেষমেশ ফলাফল যেটা দাঁড়াবে, ঈদ শপিং উচ্ছ্বাসের বদলে বয়ে আনবে যন্ত্রণা। তাই ভাবনা ঝেড়ে ফেলে জেনে নিন কীভাবে সহজেই সেরে ফেলতে পারবেন এবারের ঈদ কেনাকাটা। আমাদের আর্থিক অবস্থা যেমনই হোক, ঈদ নিয়ে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই। কিন্তু সাধ্যের কথা সবার আগে বিবেচনায় রাখতে হবে। সেই অনুযায়ী ঈদের আগেই কেনাকাটার একটি তালিকা তৈরি করে নিতে হবে। চাকরিজীবীরা ঈদের আগেই বেতন বোনাস পেয়ে যাবে। তবে সব টাকা কেনাকাটায় খরচ করে ফেললে ঈদের পরে পুরো মাস চলতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হবে। তাই আগেই বাড়িভাড়া, বাচ্চাদের স্কুলের বেতন এবং সংসারের অন্যান্য খরচের টাকা আলাদা করে রাখলে কোনো সমস্যা হবে না। আবার সামর্থ্যের বাইরে কিছু করতে চাওয়া ঠিক নয়। পরিবারের সবার পছন্দ এবং প্রয়োজন মাথায় রেখে ঈদের বাজেট করতে হবে। বাজেট যদি তুলনামূলক কম হয়, ফ্যাশন হাউসের তৈরি পোশাক না কিনে একটু সময় নিয়ে গজ কাপড় কিনে টেইলার্সে পছন্দমতো পোশাক তৈরি করে নিতে পারেন। ঈদে কেনাকাটায় যাওয়ার আগে আপনার করণীয় কিছু বিষয় সম্পর্কে বলা যাক। প্রথমত, ঈদের কেনাকাটার আগেই লিস্ট করে নেয়া ভালো। এতে সব কাজ গুছিয়ে করা যায়। তাই কিনতে যাওয়ার আগেই বাসায় বসে লিস্ট করে ফেলার পাশাপাশি ঠিক করে নিন কোথা থেকে কি কিনবেন। জায়গাগুলো আলাদা আলাদা হলে ভিন্ন ভিন্ন দিনে যাওয়ার পস্ন্যান করুন। একই দিনে দুটি জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনা না করাই ভালো। বাজেট নির্ধারণ করাটাও জরুরি। কোন খাতে কত খরচ করবেন সম্ভব হলে লিস্টের পাশে তাও ছোট করে লিখে ফেলুন। তাতে কেনাকাটায় সুবিধা হবে। আর কেনাকাটার জন্য উপযুক্ত সময় বেছে নিন। বেছে বেছে ভালো জিনিসটা কিনতে চাইলে শপিংয়ের জন্য একটি পারফেক্ট সময় আপনার সব রকমের ঝামেলা বাঁচিয়ে দেবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বের হবেন। কারণ তাড়াহুড়ো করতে গেলে কোনো কাজই ঠিকমতো করা যায় না। তাই এমন একটা সময় বেছে নিন যা আপনার জন্য উপযুক্ত। এ ক্ষেত্রে ইফতারের আগে না গিয়ে ইফতারের পরে কেনাকাটায় বের হওয়া ভালো। দ্বিতীয়ত, কেনাকাটার সময় পরিবারের কাউকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন। আবার অভিজ্ঞ কোনো বন্ধুকেও সঙ্গে রাখতে পারেন। এতে শপিংয়ের বোরিং ভাব থেকে মুক্তিসহ তার কাছ থেকে ভালো আইডিয়াও পাবেন। অনেকসময় চেকলিস্ট ঠিকাঠাক রাখলেও ছোটখাটো ঝামেলা থেকেই যায়। আমরা প্রায়ই বুঝতে পারি না কাকে কী দেব? চলুন চট-জলদি জেনে নেই ঈদের কেনাকাটা সহজ করার দারুণ কিছু টিপস। শপিংয়ে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় পণ্যের একটি তালিকা করে নিন। এতে কম সময়েই অনেক প্রয়োজনীয় পণ্য কেনা সম্ভব হবে। ঠিক করে নিন কাকে কেমন দামের মধ্যে পোশাক ও আনুষঙ্গিক জিনিস কিনে দেবেন। এতে অযথা ঘোরাঘুরির পেছনে সময় নষ্ট হবে না। শপিংয়ে যাওয়ার মানসিক ও অন্যান্য প্রস্তুতি আপনাকে এগিয়ে নেবে অনেকটা। যেহেতু এখন বাইরে প্রচন্ড গরম, তাই এ সময় স্বাভাবিক সুতি পোশাক পরুন। তা ছাড়া যে কোনো সময় মৌসুমি বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ প্রস্তুতি হিসেবে ব্যাগে ছাতা রাখুন। যেদিন শিশুদের পোশাক কেনার দিন, সেদিনই তাদের সঙ্গে নিন এবং তাদের পছন্দমতো পোশাক কিনুন। এতে ওদেরও কষ্ট হবে আর আপনিও স্বস্তিতে শপিং করতে পারবেন না। পোশাক কেনার সময় যার জন্য কিনছেন তার বয়স, পেশা, রুচি এবং প্রয়োজনের বিষয়টি বিবেচনায় রাখুন। সব কেনাকাটা একদিনে না করে, কয়েকবারে করুন। এতে যা কিনছেন সেগুলোর মান ভালো থাকবে। কেনার সময়ে পোশাকের রং, সেলাই, মান এবং দাম ভালো করে দেখে নিন। কোনো সমস্যা থাকলে বদলে নিন। কেনাকাটা শেষে বিল দেয়ার পর, বিলের তালিকার সঙ্গে জিনিসের সংখ্যা মিলিয়ে নিন। এতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। জাকাত যদি নগদ অর্থের পরিবর্তে পোশাকের মাধ্যমে দিতে চান তবে ওগুলোও আগেই কিনে রাখুন। বিল রিসিট ফেলে না দিয়ে কিছুদিন রেখে দিন। হঠাৎ কোনো জিনিস বদলানোর সময় কাজে লাগবে। সবচেয়ে বড় কথা এখন দিন বদলেছে। এখন আর বাজারে না গেলেও চলে। বাজার চলে আসে ঘরে। ইন্টারনেট আছে এমন কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের সাহায্যে অনলাইনে ঈদের কেনাকাটা করছেন অনেকে। এখন অলনাইনে চাইলে আপনি খুব সহজেই পেতে পারেন আপনার পছন্দের যে কোনো আইটেম। ঘরে বসে অর্ডার করুন আর মুহূর্তেই পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের ঈদ বাজার। তবে কিছু কিছু অনলাইন শপের কাছ থেকে প্রতারণার শিকার হতে পারেন। পণ্যের মান যাচাই করে তবে টাকা পরিশোধ করুন। ঈদের বাজারে ঘোরার সময় নেই বা যানজটে নাকাল হতে চান না যারা, তারাই কেনাকাটা করেন অনলাইনে। যদিও এ সংখ্যা এখনো কম। তবে ক্রমেই তা বাড়ছে। দেশি প্রায় সব পোশাক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানই অনলাইনে পোশাক বিক্রির সুবিধা রেখেছে। নকশা, আকার ও পরিমাণ নির্ধারণ করে পণ্যের ফরমাশ দেয়া যায়। দাম মিটিয়ে দেয়া যায় ডেভিড-ক্রেডিট কার্ড, বিকাশের মাধ্যমে কিংবা নগদে। অর্ডারের তিনদিনের মধ্যে পণ্যটি বাড়ি বা অফিসের ঠিকানায় পৌঁছে দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।