ঝলমলে কামিজ জমজমাট ঈদ

ফ্যাশনের পরিবর্তনের সঙ্গে মিল রেখে প্রতিটি ফ্যাশন হাউসই কামিজের কাটিং প্যাটার্নে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। আর এই পরিবর্তনের ব্যাপকতা চোখে পড়ার মতো। এখনকার তরুণীরা ট্র্যাডিশনাল পোশাকের পাশাপাশি এই নতুন ধারার ফ্যাশনের সঙ্গে সহজেই নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন...

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ঈদের পোশাকে সাধারণত উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার প্রাধান্য পায় ছবি : ইন্টারনেট
তানিয়া তন্বি ঈদের আনন্দকে পরিপূর্ণ করতে চাই মনের মতো নতুন পোশাক। তাই ঈদের পোশাক নিয়ে চিন্তা-ভাবনার শেষ নেই। ঈদের মতো উৎসবের পোশাকে থাকতে হবে নতুনত্ব, নজরকাড়া ডিজাইন। মেয়েদের ঈদ ফ্যাশনের অন্যতম একটি অনুষঙ্গ সালোয়ার-কামিজ। রঙিন আর জমকালো সালোয়ার-কামিজে ঈদ রাঙাতে মনে মনে তৈরি সবাই। ঈদ উৎসবে কামিজের খবর নিয়ে এবারের আয়োজন। ঈদের পোশাকে সাধারণত উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার প্রাধান্য পায়। এবার লাল থেকে শুরু করে নীল, সবুজ, হলুদ, বেগুনি, কমলা, মেজেন্ডাসহ থাকছে সব কটা রঙেই। এক রঙা পোশাকের ফ্যাশন বদলে একই পোশাকে কয়েক রঙের ব্যবহার এখন বেশি জনপ্রিয়। তাই কখনো এক রঙা কামিজের বডিতে একই রঙের কয়েকটি শেডের কাজ করা হয়েছে। আবার কখনো দেয়া হয়েছে সম্পূর্ণ বিপরীত রঙের কাজ। কামিজের কাজের সঙ্গে রং মিলিয়ে করা হয়েছে সালোয়ার এবং ওড়নার ডিজাইন। যারা গাঢ় রঙে স্বাচ্ছন্দ্য নন, ফ্যাশন ডিজাইনাররা ভেবেছেন তাদের কথাও। কাপড় হিসেবে সবসময়ের মতো এবারও রয়েছে সুতির জয়জয়কার। পাশাপাশি অ্যান্ডি কটন, তাঁত, হাফ সিল্ক, সিল্ক, মসলিনটাও চলছে বেশ। তবে রেগুলার ডিজাইনের পোশাকেই সবার আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে। গরমের ভাব থাকার কারণে আরামদায়ক কুর্তা ও ফতুয়ার ওপরও ঝুঁকছে তরুণীরা। জিন্সের সঙ্গে মানানসই এই পোশাকগুলো হতে পারে ঈদের বিকালের জন্য আদর্শ। এই সময়ে কোনোরকম সংকেত ছাড়াই হানা দিতে পারে হঠাৎ বৃষ্টি। পোশাক ডিজাইনে তাই ঈদকে সামনে রেখে ভাবা হয়েছে ঋতু পরিবর্তনের কথাও। এ জন্যই এবারের ঈদের সালোয়ার-কামিজ তৈরি করা হয়েছে তাঁত, সিল্ক, হাফ সিল্ক, অরগ্যান্ডি, মসলিন ও শিপন কাপড়ে। ঈদের আরামদায়ক পোশাক হিসেবে সুতি কাপড়ও এখন অনেক জনপ্রিয়। এসব কামিজে থাকছে বস্নক, কারচুপি, অ্যাপিস্নক, ভরাট অ্যাপিস্নক ও অ্যামব্রয়ডারির কাজ। ঈদ উপলক্ষে সালোয়ার-কামিজে জমকালো ভাব আনতে কামিজের কাজগুলো ভারী রাখা হচ্ছে। গলায় উজ্জ্বল রঙের সুতার কাজ থাকছে। কোনো কামিজের সম্পূর্ণ বডিতে আবার কোনোটির নিচের অংশে সুতার মোটা ও ভরাট ডিজাইন, পট্টি ও লেইস ব্যবহার করা হয়েছে। বাদ যাচ্ছে না পেছনের অংশও। কামিজের হাতায়ও থাকছে ভারী কাজ। সালোয়ার হচ্ছে কামিজের সঙ্গে কনট্রাস্ট করে। ওড়নায় থাকছে হালকা কাজ। লম্বা কাটিংয়ের কামিজের জায়গা এবার দখল করে নিয়েছে মাঝারি কাটিংয়ের কামিজগুলো। এবারের ঈদের বিশেষ সালোয়ার-কামিজগুলো লম্বায় হচ্ছে হাঁটুর মাঝ বরাবর। একছাঁটের এই কামিজগুলো হচ্ছে লুজ ফিটিংয়ের। জনপ্রিয়তা বেশি থ্রি-কোয়ার্টার হাতার। তবে ডিজাইন ও পছন্দভেদে থাকছে ফুল ও স্স্নিভলেস হাতাও। সালোয়ারের ক্ষেত্রে ক্রেতারা চাপা আকৃতির ও চুড়িদার সালোয়ার বেছে নিচ্ছেন বেশি। ফ্যাশনের পরিবর্তনের সঙ্গে মিল রেখে প্রতিটি ফ্যাশন হাউসই কামিজের কাটিং প্যাটার্নে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। আর এই পরিবর্তনের ব্যাপকতা চোখে পড়ার মতো। কামিজের কাটিং, কলার, লে-আউট, ছাপা, বস্নক, বুটিক, বাটিক, লেস ও চুমকির ব্যবহার প্রায় সবকিছুতে ইদানীং বিভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। এখনকার তরুণীরা ট্র্যাডিশনাল পোশাকের পাশাপাশি এই নতুন ধারার ফ্যাশনের সঙ্গে সহজেই নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন। সাধ আর সাধ্যের সমন্বয়েই তৈরি হচ্ছে এই পোশাকগুলো। আপনার ঈদকে জমকালো ফ্যাশনের রঙে রাঙাতে দাম থাকছে হাতের নাগালেই। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোয় ঈদের বিশেষ এই সালোয়ার-কামিজগুলোর দাম শুরু হচ্ছে দুই হাজার টাকা থেকে। তবে একটু বেশি ডিজাইন আর ভারী কাজ থাকছে যেসব এক্সক্লুসিভ সালোয়ার-কামিজে তার দাম রাখা হয়েছে চার থেকে বারো হাজার টাকার মধ্যে। ফ্যাশন হাউসগুলোর বাইরে অন্যান্য শপিংমলগুলোতেও এর কাছাকাছি মূল্যেই পাবেন এবারের ঈদের জন্য আকর্ষণীয় জমকালো সালোয়ার-কামিজ। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর ছোট-বড় সব শপিংমলেই রয়েছে নানা ডিজাইন ও রঙের সালোয়ার-কামিজের সমাহার। তাই যে কোনো মার্কেটে গেলেই পাবেন আপনার পছন্দের সালোয়ার-কামিজ। তবে আনস্টিচ সালোয়ার-কামিজ ও তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় মার্কেট ঢাকার গাউছিয়া, নিউ মার্কেট, চাঁদনী চক, ইসলামপুর, বনানী বাজার ও মিরপুর। এখানে আপনার জন্য রয়েছে একই জায়গায় অনেক পোশাক। সব ধরনের কাপড় ও ডিজাইনের পোশাক মিলবে এই জায়গায়। যাদের আগ্রহ ও পছন্দ দেশি ফ্যাশন হাউসগুলোর পোশাক তারা ঘুরে আসতে পারেন আড়ং, অঞ্জন'স, রঙ, স্টুডিও এমদাদ, নাগরদোলা, সাদাকালো, অন্যমেলা, কে-ক্র্যাফট, বাংলার মেলা, প্রবর্তনা, বিবিয়ানা, বাসন্তী, দেশালের শোরুমগুলোয়। তবে মনে রাখতে হবে, পোশাকের মাধ্যমে যেন আপনার ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে পুরোপুরি। পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ, ঈদের আমেজ আর চলতি ধারা সব মিলিয়ে হওয়া চাই পোশাক নির্বাচন। ঈদ উৎসবের পোশাকে বর্ণিল হোক আপনার ঈদ।