আকাশে নীল বসনে নীল

প্রকৃতিতে বইছে শরতের হাওয়া। মিষ্টি হাওয়া সতেজ করে দেয় মন। সাদা শুভ্র মেঘগুলো আপন মনে উড়ে বেড়াচ্ছে। খেয়ালি পাখিরা কিচিরমিচির শব্দে দলবেঁধে ছুটে চলছে- এ যেন এক অনাবিল আনন্দের বহিঃপ্রকাশ। নদীর ধারের কাশফুলগুলো শারদীয় বাতাসে হেলেদুলে আনন্দ প্রকাশ করছে। শরৎ ঋতু নিয়ে রচিত হয়েছে বহু গান, কবিতা ও উপন্যাস। ঋতুর এ পালাবদল মনকে যেমন দোলা দিয়ে যায়, ঠিক তেমনি ফ্যাশন ট্রেন্ডকেও আন্দোলিত করে।

প্রকাশ | ২৫ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

রঙ বেরঙ ডেস্ক
বর্তমান সময়ে ঋতুভিত্তিক পোশাকের আলাদা একটা চাহিদা রয়েছে। যে কারণে ফ্যাশন হাউসগুলো ঋতুভিত্তিক পোশাক তৈরিতে বাড়তি মনোযোগ দেয়। যে কারণে এ ধরনের পোশাকও চোখে পড়ে হরহামেশা। তবে একেক ঋতুর রং-রূপ একেক রকম। আর পোশাক তৈরিতে এ রং-রূপকেই প্রাধান্য দেয় ফ্যাশন হাউসগুলো। প্রকৃতিতে বইছে শরতের হাওয়া। শুভ্র কাশবন আর সাদা মেঘের ভেলা আর প্রশান্ত নীল আকাশকে প্রাধান্য দিয়ে ডিজাইন করা হয় শরতের পোশাক। যে ডিজাইনে প্রাধান্য পায় সাদা ও নীল রং। তবে অন্যান্য কালারের কম্বিনেশনও থাকছে। এ প্রসঙ্গে ডিজাইনার জাহিদ আকরাম জানান, একেক ঋতুতে একেক ডিজাইন এবং কালার ডিমান্ড করে। সেদিক মাথায় রেখেই ড্রেস ডিজাইন করে থাকি। এই শরতেও থাকছে ডিজাইন ভেরিয়েশন। ঋতুভিত্তিক পোশাকগুলো সাধারণত তরুণ প্রজন্মকেই বেশি আকৃষ্ট করে। সে কারণে তাদের রুচি ও পছন্দকেই প্রাধান্য দেয়া হয় বেশি। এছাড়া সব বয়সীর জন্যও থাকছে আকর্ষণীয় শারদীয় পোশাক। পোশাকের ধারা গতানুগতিক থাকলেও ডিজাইনে রয়েছে সাদা, অফ হোয়াইট বা ক্রিম কালারের কাপড়ের সঙ্গে লাল, গোলাপি এবং মেজেন্ডা রং ম্যাচ করে তৈরি করা হয়েছে সালোয়ার-কামিজ এবং শর্ট পাঞ্জাবি। থাকছে হাতের কাজ, অ্যাপিস্নক, বস্নক এবং হ্যান্ড স্প্রের সমন্বয়। ফতুয়ার ভেরিয়েশনও চোখে পড়ার মতো। কাশফুলের সিম্বলিক হ্যান্ড পেইন্ট দু্যতি ছড়াবে আপন মহিমায়। সবচেয়ে বেশি ভেরিয়েশন রয়েছে টি-শার্টে। স্ক্রিন প্রিন্ট, কিংবা স্কেচ করা বিভিন্ন ডিজাইন ক্রেতাদের সহজেই আকৃষ্ট করবে। তরুণ প্রজন্ম টি-শার্টের বেশ ভক্ত। ভাদ্র-আশ্বিন এই দুই মাস মিলিয়ে শরৎকাল। তবে আশ্বিনের তুলনায় ভাদ্রে গরমের মাত্রা একটু বেশি। তাই শরতের পোশাক প্রস্তুতের ক্ষেত্রে কাপড়ের দিকটাও খেয়াল রাখতে হয়। যে কারণে সুতি, ভয়েল, অ্যান্ডি কটনকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কোটা এবং ধুতি কাপড়ও রয়েছে এ তালিকায়। কালার কম্বিনেশনে এবার নীল রংটি সংযোজন করা হয়েছে। নীল আর সাদার কম্বিনেশন দেখে মনে হবে এ যেন নীল আকাশে সাদা মেঘ খেলা করছে পোশাকে। সাদা স্টোন এবং পুঁতির কাজের দু্যতি যেন বাড়িয়ে তুলেছে বহুগুণ। প্রতিটি ফ্যাশন হাউসেই দেখা মিলবে শরতের পোশাকের। ঈদ-পরবর্তী পোশাকের সমাগম এখন শরতের পোশাক ঘিরেই। শরতের সুতির শাড়িগুলোতে রয়েছে বস্নকপ্রিন্ট, টাই-ডাই, স্ক্রিনপ্রিন্টের কাজ। এমনকি কাঁথাফোঁড় দিয়েও তৈরি হয়েছে চমৎকার নকশা। শাড়িগুলোতে নকশা হিসেবে এসেছে নিরীক্ষাধর্মী কাজও। বেশির ভাগ নকশায় ঠাঁই পেয়েছে ফুলেল ও জ্যামিতিক মোটিফ। নকশাগুলো কখনো নীল জমিনে সাদা, আবার কখনো সাদা জমিনে নীল। আর এই সমন্বয় আঁচলে, পাড়ে, কুচিতে নানাভাবেই বিন্যস্ত। সুতি ছাড়াও সিল্ক, অ্যান্ডি সিল্কসহ নানা কাপড়ের শাড়িতে নীল-সাদা ধরা দিয়েছে নানাভাবে। সিম্পল ডিজাইন থেকে শুরু করে গর্জিয়াস ড্রেস পর্যন্ত মিলবে হাউসগুলোতে। কাপড়, রং এবং ডিজাইনের ওপর নির্ভর করছে পোশাকের দাম। সিম্পল শাড়ি মিলবে ৮০০ থেকে ২২০০ টাকায়। গর্জিয়াস শাড়ি পাওয়া যাবে ১৫০০ থেকে ৪৫০০ টাকায়। শার্ট ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা, ফতুয়া ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকা, শর্ট পাঞ্জাবি ৬০০ থেকে ১৪৫০ টাকা। টি-শার্টের মূল্য পড়বে ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা। সালোয়ার-কামিজ ১২৫০ থেকে ২৫০০ টাকা, টপস ৪০০ থেকে ১১০০ টাকা। শরতের আকাশ আরও বেশি বর্ণিল করে তুলবে শরৎকেন্দ্রিক এ পোশাকগুলো। স্নিগ্ধ পরিবেশে যা আপনাকে করে তুলবে আরও বেশি মোহনীয়, আরও বেশি আকর্ষণীয়। আর ফুটিয়ে তুলবে আপনার রুচি। নীল-সাদা শাড়ির সঙ্গে একই রঙের কাচের চুড়ি ভালো দেখাবে। এ ছাড়া মুক্তা বা রুপালি গয়না পরতে পারেন। তবে সেটা হালকা হতে হবে। গলায় গয়না পরলে যেমন কান খালি রাখা যায়, তেমনি কানে দুল পরলে খালি রাখতে পারেন গলা। নীল-সাদা শাড়িতে খোলা চুলের সাজে চোখে কাজল, কপালে টিপ, হালকা মেকআপেই আপনাকে দেখাবে আরও প্রাণবন্ত।