পোশাকে শরৎ

প্রকাশ | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

রঙ বেরঙ ডেস্ক
নীল আকাশে সাদা সাদা মেঘ, দখিনা বাতাস, কাশফুলের মাঠ। সব মিলিয়ে এক শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ। তার মধ্যেই আবার ঝিরঝিরে বা ঝমঝমে বৃষ্টি। আবার বেলা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তপ্ত রোদ। প্রকৃতির এই বিচিত্র খেলায় জীবনকে আরও বৈচিত্র্যময় করতে সাজ-পোশাকে আনা যেতে পারে ভিন্নতা। শরতের প্রকৃতি, নীল আকাশের সঙ্গে মিল রেখে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টপস, পাঞ্জাবি এবং শার্ট তৈরি করা হয়েছে। যেখানে নীল-সাদা রং প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। নকশার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে টাইডাই, স্ক্রিনপ্রিন্ট এবং বস্নক প্রিন্ট। গরমে সুতিই সবচেয়ে আরামদায়ক। আমরা টাঙ্গাইলের শাড়ি এবং সুতি সালোয়ার-কামিজ বেছে নিয়েছি শরতের নকশার জন্য। শরতের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজে থাকে বস্নক, হ্যান্ডপেইন্ট, টাইডাই, স্ক্রিনপ্রিন্ট এবং কাঁথা ফোঁড়ের নকশা করা হয়েছে। আর বেশির ভাগ নকশাতেই ঠাঁই পায় ফুলেল ও জ্যামিতিক মোটিফ। কখনো আবার শুধু রঙের মাধ্যমেও তুলে ধরা হয় শরতের সুনীল আকাশ, কাশফুলের শুভ্রতা প্রভৃতি। এদিকে সাদা মানে তো কেবলই সাদা নয়- চাঁপা সাদা, ঘিয়ে সাদা, উজ্জ্বল সাদা আরও কত কী! আকাশের রংও তো আর কেবল আকাশী বা নীল নয়- এক আকাশতলে শরতে কত রং ফুটে ওঠে সে সবই তুলে ধরা হয়েছে শরৎ সংগ্রহে। শরতের শাড়িটা হালকা কাজ বা কাজবিহীন হলে সন্ধ্যার দাওয়াতে এর সঙ্গে একটু ভারী কাজের বস্নাউজ পরুন। দিনের বেলা ভারী কাজের বস্নাউজের চেয়ে প্রিন্টের বস্নাউজ বেশি ভালো লাগবে। দিনের আয়োজনে পরুন সুতি শাড়ি, শরৎ সন্ধ্যায় মানাবে সিল্ক, অ্যান্ডি সিল্কের শাড়ি'। এদেশের অনেক ফ্যাশন হাউস তাদের শরতের আয়োজনে পোশাকে তুলে ধরেন নীল আকাশজুড়ে পাখির মতো দলবেঁধে উদাসী মেঘের ছোটাছুটি, ভোরের শিউলি, জলে ফোটা পদ্ম, নদীর পাড়ের কাশফুল প্রভৃতি। জ্যামিতিক এবং ফুলেল মোটিফ তো থাকেই নানা রূপে অপরূপ শরতের প্রকৃতি। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টপস ছাড়াও শরতের আয়োজনে থাকে শার্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি এবং ফতুয়া। সুতি ছাড়াও রাখা হয়েছে সিল্ক, অ্যান্ডি সিল্ক, লিলেন প্রভৃতি। নীল সাদার বিভিন্ন শেড ছাড়াও আছে সবুজ, সোনালি, বেগুনিসহ প্রকৃতির আরও কত রং! শরতের সাজ প্রসঙ্গে রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, শরতের ভোরটা খুব স্নিগ্ধ। তবে একটু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের তেজে এ আবেশ কেটে যায়। আবার হুট করে ঝরে পড়ে টাপুরটুপুর বৃষ্টি। সাজের ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে এ সবকিছুই। এ সময় মেকআপের ক্ষেত্রে বেইজ মেকআপ কমপ্যাক্ট পাউডার দিয়েই সেরে ফেলুন। তা ছাড়া লিকুইড মেকআপও হালকা করে লাগাতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন পুরো মুখ ও গলায় যেন তা মিশে যায়। প্রত্যেকের ত্বকেরই একটা ন্যাচারাল শেড রয়েছে। ত্বকের এই ন্যাচারাল শেডটিই হাইলাইট করার চেষ্টা করুন। খেয়াল রাখুন অতিরিক্ত ফাউন্ডেশনের কারণে ত্বকের ন্যাচারাল টোন যেন হারিয়ে না যায়। মেকআপ করার সময় খেয়াল রাখুন কোন সময়ের জন্য মেকআপ নিচ্ছেন। স্কিন কালারের সঙ্গে ম্যাচ করে ফাউন্ডেশন লাগান। অবশ্যই ওয়াটারপ্রম্নফ মেকআপ ব্যবহার করবেন। হাতে, পায়ে, গলায় সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। দিনেরবেলায় চোখে কাজল, নীল মাশকারা ও আইলাইনার ভালো লাগবে। রাতে চোখে ভারী করে লাগিয়ে নিন নীল আইশ্যাডো, মাশকারা, পেন্সিল আইলাইনার ও কাজল। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে নানা রঙের রঙিন কাজলের রেখাও এঁকে দিতে পারেন চোখের কোণে। সবশেষে লাগিয়ে নিন পছন্দমতো লিপস্টিক। শরতের সাজপোশাকের সঙ্গে বিশেষ করে নীল পোশাকের সঙ্গে মুক্তা এবং সিলভার রঙের গহনা অনেক বেশি মাধুর্য এনে দেয়। হেয়ার স্টাইলে খোলা চুল সবচেয়ে বেশি মানাবে। পেছনের চুলগুলো বেণি করে তারপর পেঁচিয়ে খোঁপা করে শরতের ফুল গুঁজে দিলেও মুগ্ধতা ছড়াবে।