ঢাকের তালে হৃদয় দোলে

প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

মো. আশিকুর রহমান
দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হলো হিন্দু দেবী দুর্গার পূজাকে কেন্দ্র করে প্রচলিত একটি উৎসব। দুর্গাপূজা সমগ্র হিন্দু সমাজেই প্রচলিত। তবে বাঙালি হিন্দু সমাজে এটি অন্যতম বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। আশ্বিন বা চৈত্র মাসের শুকাপক্ষে দুর্গাপূজা করা হয়। আশ্বিন মাসের দুর্গাপূজা শারদীয়া দুর্গাপূজা এবং চৈত্র মাসের দুর্গাপূজা বাসন্তী দুর্গাপূজা নামে পরিচিত। বাসন্তী দুর্গাপূজা মূলত কয়েকটি পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী, ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষটিকে বলা হয় দেবীপক্ষ। দেবীপক্ষের সূচনার অমাবস্যাটির নাম মহালয়া। এই দিন হিন্দুরা তর্পণ করে তাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। দেবীপক্ষের শেষ দিনটি হলো কোজাগরি পূর্ণিমা। এই দিন হিন্দু দেবী লক্ষ্ণীর পূজা করা হয়। কোথাও কোথাও পনেরো দিন ধরে দুর্গাপূজা পালিত হয়। সে ক্ষেত্রে মহালয়ার আগের নবমী তিথিতে পূজা শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুর শহরের মৃন্ময়ী মন্দির এবং অনেক পরিবারে এই রীতি প্রচলিত আছে। দুর্গাপূজা ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালসহ ভারতীয় উপমহাদেশ ও বিশ্বের একাধিক রাষ্ট্রে পালিত হয়ে থাকে। তবে বাঙালি হিন্দু সমাজের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হওয়ার দরুন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও ঝাড়খন্ড রাজ্যে ও বাংলাদেশে দুর্গাপূজা বিশেষ জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয়। সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শারদীয় দুর্গাপূজার পোশাক মানেই সাদা-লাল পেড়ে শাড়ি। এছাড়া শাড়ির আঁচল, কামিজ বা কুর্তার নেক লাইন ও পাঞ্জাবির ক্যানভাসেও থাকতে হবে স্বতন্ত্রতা। এখন ধুতির জায়গা নিয়েছে পাজামা বা আরও এগিয়ে বললে জিন্স। অন্যদিকে শাড়ির জায়গায় সালোয়ার-কামিজ বা চুড়িদার কামিজ। তবে যাই পরেন না কেন, সেটা হতে হবে বয়সের সঙ্গে মানানসই। পূজায় সাজের ক্ষেত্রে আপনার অনুষঙ্গ সামগ্রী খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কানের দুল, গলার মালা, নাকের নথ, খোঁপার কাঁটা, সিঁথিতে সিঁদুর-এসবই পূজার সাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সিঁথিতে সিঁদুর দেয়ার ভিন্ন ভিন্ন ধরন আছে, কিন্তু বিবাহিত মেয়েদের কাছে সিঁথিতে সিঁদুর কেবলমাত্র সাজের অনুষঙ্গ নয়, পাশাপাশি হাতের শাঁখা-পলাও ঠিক তেমনই গুরুত্বপূর্ণ। কানের দুল, গলার মালা, নাকের নথ, খোঁপার কাঁটা সবই নির্ভর করে সাজের বিশেষত্ব, পোশাকের ধরন এবং মানুষটির পছন্দ ও ব্যক্তিত্বের ওপর। দুর্গাপূজায় যেহেতু বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা। তাই সাজ-সজ্জায় বাঙালি লুকটাই গুরুত্ব পায়। আর এখন যেহেতু গরমের সময় তাই হালকা মেকআপই ভালো লাগবে। আপনার চোখের জন্য আইশ্যাডোর ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্রাউন, ব্রোঞ্জ, গোল্ডেন, কপার এবং চাহিদা অনুযায়ী আইলাইনার ও দু-তিন কোট মাশকারার প্রলেপ দিন। এসবই এ সময়ের জন্য উপযুক্ত। চেহারার ধরন, সময়, পোশাক, কোথায় ঘুরতে যাচ্ছেন- সবকিছুর সঙ্গে মানানসই হওয়া চাই আপনার চুলের স্টাইল। কারণ ঠিকঠাকমতো চুলের স্টাইলই এনে দিতে পারে আপনার সাজের পরিপূর্ণতা। আর পরিপূর্ণ একটি সাজ আপনার ভাবমূর্তিকে দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলতে সহায়ক। তাই কৌশল হিসেবে আগেভাগেই চুল বাঁধার কয়েকটি ধরন রপ্ত করে রাখতে পারেন। এবারের পূজায় পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে ঝটপট চুলের সাজটি সেরে নিতে আর বেগ পেতে হবে না।