শরৎ আবহে পোশাক-আশাক

এ সময় যারা শাড়ি পরতে চান তারা বেছে নিন হালকা রঙের শাড়িগুলো। ফিকে নীল শাড়িতে জরিপাড় দেয়া, চাঁপাফুল রং, ধানি রং, সাদা জমিনে বুটি তোলা জামদানি শাড়ি এবং এর সঙ্গে ম্যাচিং বস্নাউজ। বস্নাউজের হাতা থ্রি কোয়ার্টার হলে ভালো মানাবে। যারা সালোয়ার-কামিজ পরবেন তারাও এরকম হালকা রংগুলোই বেছে নিতে পারেন। তাছাড়া শরতের নীল রং তো রয়েছেই

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

রঙ বেরঙ ডেস্ক
শরৎকালের এই সময়টায় রং, রূপ ও বৈচিত্র্যে মৌলিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। এ কারণে শরৎ ঋতু নিয়ে রচিত হয়েছে বহু গান, কবিতা ও উপন্যাস। ঋতুর এ পালাবদল মনকে যেমন দোলা দিয়ে যায়, ঠিক তেমনি ফ্যাশন ট্রেন্ডকেও আন্দোলিত করে। আর বর্তমান সময়ে ঋতুভিত্তিক পোশাকের আলাদা একটা চাহিদা রয়েছে। যে কারণে ফ্যাশন হাউসগুলো ঋতুভিত্তিক পোশাক তৈরিতে বাড়তি মনোযোগ দেয়। যে কারণে এ ধরনের পোশাকও চোখে পড়ে হরহামেশা। তবে একেক ঋতুর রং-রূপ একেক রকম। আর পোশাক তৈরিতে এ রং-রূপকেই প্রাধান্য দেয় ফ্যাশন হাউসগুলো। শরতের কড়া রোদে নাজেহাল হলেও এই গরমে কেমন পোশাকে আরাম হবে তা নিয়ে একটু-আধটু মাথাব্যথা থাকতেই পারে ফ্যাশনেবল তারুণ্যের। তার ওপর রাতের দিকে গরমের হলকা কমে যায় বলে একটু ভিন্ন তন্তুর পোশাকের দিকেও আগ্রহ থাকে অনেকের। এই শরতে তাই আরামের জন্য চাই সঠিক পোশাক, যা হতে হবে একদিকে ট্রেন্ডি এবং আরামদায়ক। এদিকে শরতে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির খেলায় আমাদের পোশাকও হতে হবে বৈচিত্র্যময়। শরতের আছে নিজস্ব বর্ণ আর গন্ধ। দেশীয় পোশাক নকশাকাররা তাই শরতের জন্য বেছে নেয়- সাদা, নীল, সবুজ আর সোনালি রং। কেমন হবে শরতের পোশাক শরতের উষ্ণতায় আরাম আর আভিজাত্য বজায় রেখে তরুণীদের পছন্দের তালিকায় বরাবরই শীর্ষে আছে সুতি পোশাক। সুতি পোশাক সহজে ঘাম শুষে নেয়। প্রাকৃতিক তন্তুর তৈরি বলে মসৃণও হয়। তাই এখন সুতি পোশাক পরিধানের পরামর্শ দিচ্ছেন ফ্যাশন বোদ্ধারা। তবে খুব বেশি চাকচিক্যময় পোশাক নয়, সাদামাটা সুতি পোশাক বেছে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডিজাইনাররা। এ সময় কৃত্রিম তন্তুর পোশাক এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন কেউ কেউ। কেননা এ ধরনের কাপড়গুলো ঘাম শুষে নিতে পারে না। ফলে পোশাকটা শরীরে লেগে থাকে এবং যা অস্বস্তি তো বটেই, দৃষ্টিকটুও। গরমে পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে মেয়েরা সাদা, হালকা গোলাপি, হালকা বেগুনি, হালকা নীল, বাদামি, আকাশি, হালকা হলুদ, ধূসরসহ হালকা রঙের পোশাকগুলো বেছে নেন। ফ্যাশন ডিজাইনাররাও এ সময় হালকা রঙের পোশাক পরিধানের ওপর প্রাধান্য দেন বেশি। আসলে গরমে সাদা ও অন্যান্য হালকা রঙের পোশাক শুধু তাপ শোষণই করে না, সেই সঙ্গে চোখকে দেয় প্রশান্তি। গরমে গাঢ় রং এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। ফতুয়ার ভেরিয়েশনও চোখে পড়ার মতো। সবচেয়ে বেশি ভেরিয়েশন রয়েছে টি-শার্টে। স্ক্রিন প্রিন্ট, কিংবা স্কেচ করা বিভিন্ন ডিজাইন ক্রেতাদের সহজেই আকৃষ্ট করবে। তরুণ প্রজন্ম টি-শার্টের বেশ ভক্ত। ভাদ্র-আশ্বিন এই দুই মাস মিলিয়ে শরৎকাল। তবে আশ্বিনের তুলনায় ভাদ্রে গরমের মাত্রা একটু বেশি। তাই শরতের পোশাক প্রস্তুতের ক্ষেত্রে কাপড়ের দিকটাও খেয়াল রাখতে হয়। যে কারণে সুতি, ভয়েল, অ্যান্ডি কটনকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কোটা এবং ধুতি কাপড়ও রয়েছে এ তালিকায়। কুর্তি-কামিজে গরমের আরাম এ সময় মেয়েদের পছন্দ সুতি কাপড়ের পোশাক। সেটা সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি বা ফতুয়া যা-ই হোক না কেন। তবে পোশাকটা যদি কামিজ হয় তাহলে সঙ্গে মানানসই রং ও ডিজাইনের সালোয়ার ও ওড়না। প্রচন্ড গরমের কারণে আরামদায়ক কুর্তা ও ফতুয়ার প্রতিও ঝুঁকছে অনেক তরুণী। জিন্সের সঙ্গে মানানসই পোশাকগুলো হতে পারে বিকালের আদর্শ। এ সময় পালাজো, লং কুর্তি, কিংবা ঢিলেঢালা কাটের পোশাকও জড়িয়ে নিচ্ছে তরুণীরা। দিনের বেলা তো বটেই, রাতের আয়োজনে নিজের পোশাকে ভিন্নতা আনতে এমন পোশাক দারুণ। এ ছাড়াও শাড়ি পরতে চাইলে সুতি শাড়িও হতে পারে এই গরমের আদর্শ পোশাক। ট্রেন্ডি কাটছাঁটে সুতি পোশাক গরমের পোশাকে এসেছে নানা বৈচিত্র্য। তরুণীরা পছন্দমতো বেছে নিচ্ছে হাতা কাটা, ছোট হাতা এমনকি ম্যাগি হাতার কুর্তি-কামিজ। উঁচু গলার কাজকে পেছনে ফেলে এখন বেশি চলছে চারকোণা, পানপাতা ও ভি-আকৃতির গলা। আর পোশাকগুলোয় করা হয়েছে বস্নক, কারচুপি, অ্যাপিস্নক, ভরাট অ্যাপিস্নক ও অ্যামব্রয়ডারির কাজ। লম্বা কাটিংয়ের কুর্তি-কামিজের পরিবর্তে এখন বেশি চলছে মাঝারি কাটিংয়ের কুর্তি-কামিজ। কেমন হবে শরতের রং প্রকৃতিতে বইছে শরতের হাওয়া। শুভ্র কাশবন আর সাদা মেঘের ভেলা আর প্রশান্ত নীল আকাশকে প্রাধান্য দিয়ে ডিজাইন করা হয় শরতের পোশাক। যে ডিজাইনে প্রাধান্য পায় সাদা ও নীল রং। তবে অন্যান্য কালারের কম্বিনেশনও থাকছে। একেক ঋতুতে একেক ডিজাইন এবং কালার ডিমান্ড করে। ঋতুভিত্তিক পোশাকগুলো সাধারণত তরুণ প্রজন্মকেই বেশি আকৃষ্ট করে। সে কারণে তাদের রুচি ও পছন্দকেই প্রাধান্য দেয়া হয় বেশি। পোশাকের ধারা গতানুগতিক থাকলেও ডিজাইনে থাকে সাদা, অফ হোয়াইট বা ক্রিম কালারের কাপড়ের সঙ্গে লাল, গোলাপি এবং মেজেন্ডা রং ম্যাচ করে তৈরি করা সালোয়ার-কামিজ এবং শর্ট পাঞ্জাবি। সঙ্গে হাতের কাজ, অ্যাপিস্নক, বস্নক, এবং হ্যান্ড স্প্রের সমন্বয়। কাশফুলের সিম্বলিক হ্যান্ড পেইন্ট দু্যতি ছড়াবে আপন মহিমায়। কালার কম্বিনেশনে এবার নীল রংটি সংযোজন করা হয়েছে। নীল আর সাদার কম্বিনেশন দেখে মনে হবে এ যেন নীল আকাশে সাদা মেঘ খেলা করছে পোশাকে। সাদা স্টোন এবং পুঁতির কাজের দু্যতি যেন বাড়িয়ে তুলেছে বহুগুণ। প্রতিটি ফ্যাশন হাউসেই দেখা মিলবে শরতের পোশাকের। পোশাকের সমাগম এখন শরতের পোশাক ঘিরেই। এ সময় যারা শাড়ি পরতে চান তারা বেছে নিন হালকা রঙের শাড়িগুলো। ফিকে নীল শাড়িতে জরিপাড় দেয়া, চাঁপাফুল রং, ধানি রং, সাদা জমিনে বুটি তোলা জামদানি শাড়ি এবং এর সঙ্গে ম্যাচিং বস্নাউজ। বস্নাউজের হাতা থ্রি কোয়ার্টার হলে ভালো মানাবে। যারা সালোয়ার-কামিজ পরবেন তারাও এরকম হালকা রংগুলোই বেছে নিতে পারেন। তা ছাড়া শরৎকালের নীল রং তো রয়েছেই।