অস্তিত্বে মিশে আছে যে লাল-সবুজ

লাল-সবুজ বাঙালির অস্তিত্ব্বে মিশে থাকা এক চেতনার রং। এই চেতনার উপস্থিতি শুধু পোশাকের পরিধিতেই আটকে থাকে না, বরং নানা রূপে তা মূর্ত হয়ে ওঠে হাতের ব্যান্ড থেকে শুরু করে চুড়ি, গলার মালা, ব্যান্ডানা কিংবা মাথার ফেট্টিতেও। মেয়েদের হাতের চুড়ি কিংবা গলার মালাতেও পাথর কিংবা মাটির মতো নানা উপকরণ ব্যবহার করে ফুটিয়ে তোলা হয় লাল-সবুজের থিম...

প্রকাশ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

রঙ বেরঙ ডেস্ক
দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও ভালো লাগার জায়গা থেকেই অনেকে গায়ে জড়িয়ে নেন লাল-সবুজের আল্পনা
বতর্মান প্রজন্মের তরুণরা যেন কেবল পোশাকে নয় মগজ ও মননেও রাখে বিজয়ের অনুপ্রেরণা ও শ্রদ্ধা অপরিসীম। বিজয়ের মাসে পোশাকের ক্যানভাসে কখনো যেমন মূর্ত হয়ে ওঠে স্বাধীনতার নানা পঙ্‌ক্তি তেমনি স্বাধীনতার বহু খন্ডচিত্র আর দেশপ্রেমের নানা ধারণাও। কখনো যেমন মানুষ তার মুক্তির স্বাদ ফুটিয়ে তোলে চেতনার বহুবিধ প্রকাশে তেমনি কখনো কখনো তা বাক্সময় হয়ে ওঠে পোশাক থেকে শুরু করে যাপিতজীবনের নানা অনুষঙ্গে। আর এ কারণেই প্রতিটি মানুষ তার অকৃত্রিম ভালোবাসা ও ভালোলাগার জায়গা থেকেই গায়ে জড়িয়ে নেয় লাল-সবুজের আল্পনা। লাল-সবুজ বাঙালির অস্তিত্ব্বে মিশে থাকা এক চেতনার রং। এই চেতনার উপস্থিতি শুধু পোশাকের পরিধিতেই আটকে থাকে না, বরং নানা রূপে তা মূর্র্ত হয়ে ওঠে হাতের ব্যান্ড থেকে শুরু করে চুড়ি, গলার মালা, ব্যান্ডানা কিংবা মাথার ফেট্টিতেও। বতর্মানে যেসব হাতের ব্যান্ড বাজারে বেশি দেখতে পাওয়া যায় সেগুলোয় শুধু লাল ও সবুজ রঙের বুনন ছাড়াও চোখে পড়ে সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে বাংলাদেশের পতাকা খচিত নকশা বা বাংলাদেশ লেখা ডিজাইন। অন্যদিকে মেয়েদের হাতের চুড়ি কিংবা গলার মালাতেও পাথর কিংবা মাটির মতো নানা উপকরণ ব্যবহার করে ফুটিয়ে তোলা হয় লাল-সবুজের থিম। অন্যদিকে মাথার ফেট্টি হিসেবে এক পরতের সবুজ বা লাল কাপড়ের পাশাপাশি চোখে পড়ে মূল পতাকার হুবহু প্রতিরূপও। বিজয় উৎসবকে লাল-সবুজের রঙে সাজিয়ে নিতে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোর নান্দনিক ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও বিজয় দিবসে লাল-সবুজের কম্বিনেশনে নানান ধরনের শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার কামিজ, টি-শার্টসহ বিভিন্ন পোশাক তৈরি করেছেন তারা। তবে এই সময়ে শীতের প্রাদুর্ভাব থাকায় কাপড়ে সেই দিকটি খেয়াল রাখা হয়েছে। আর বিভিন্ন পোশাকের পাশাপাশি রয়েছে চাদরও। এসব চাদরে স্বাধীনতা তথা মুক্তিযুদ্ধের নানান মোটিফ তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, শর্ট পাঞ্জাবি, পাঞ্জাবি ও টপসের সঙ্গে মানানসই শীতের চাদর ও লাল-সবুজ অলঙ্কার। অনেক হাউসে শিশুদের জন্যও রয়েছে সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও টি-শার্ট। কে-ক্র্যাফট : বিজয়ের পোশাকের বিশেষ কালেকশনে সেজে উঠেছে ফ্যাশন হাউস কে-ক্র্যাফট। সুতি কাপড়ে তৈরি এ কালেকশনে রং হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে সবুজ ও লাল। নিজস্ব ডিজাইনে লাল-সবুজ শাড়ি, টাই অ্যান্ড ডাই শাড়ি, স্ক্রিন প্রিন্ট ও বস্নক প্রিন্টে ডিজাইন করা সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া ও টপস, পাঞ্জাবি, টি-শার্র্ট, শাল, ব্যান্ডানা, স্কার্ফের একটি সমৃদ্ধ আয়োজন করা হয়েছে হাউসটিতে। ওজি : বিজয় দিবসের আয়োজনে জাতীয় পতাকার রং গাঢ় লাল-সবুজের আদলে ফ্যাশন হাউস ওজি বিজয়ে সেজে উঠেছে। দেশি সুতি কাপড়ে বস্নক ও অ্যামব্রয়ডারির কাজের পাশাপাশি শীতের উপযোগী করে থ্রি-কোয়ার্টার ও ফুল স্স্নিভ করা হয়েছে পোশাকগুলোয়। পোশাকগুলো পাওয়া যাবে ওজির সব আউটলেটে। অঞ্জন'স : বিজয়ের মাসে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, পাঞ্জাবি প্রভৃতি পোশাক এনেছে অঞ্জন'স। এসবের মধ্যে ছোটদের পোশাকও থাকছে। অঞ্জন'স তাদের পোশাকে ফুটিয়ে বিজয় উৎসবের বিভিন্ন প্রতীক ও চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। জাতীয় পতাকার রংকে ব্যবহার করা হয়েছে পোশাকের মোটিভ হিসেবে। বস্নক, অ্যাপিস্নক, অ্যামব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্টসহ দুই-তিন মাধ্যমকে একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে পোশাকগুলোয়। তবে রঙের ক্ষেত্রে লাল-সবুজ রংকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। লাল সাদা নীল হলুদ : বিজয় দিবসকে বরণ করতে লাল-সবুজে সেজেছে লাল, সাদা, নীল, হলুদ ফ্যাশন হাউসটি। ছেলেদের পাঞ্জাবির ডিজাইনে এসেছে নীলের ওপর লালের কাজ। লাল আর সবুজ জমিনের শাড়ির আঁচলে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। বিজয় দিবসের বিশেষ সাজের সম্ভার থেকে বাদ পড়েনি শিশুরাও। খাদি কাপড়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট ও অ্যামব্রয়ডারি। শীতের মধ্যে বিজয় দিবসের আনন্দকে অক্ষুণ্ন রাখতে লাল, সাদা, নীল, হলুদ এনেছে পোশাকের সঙ্গে মানানসই শীতের চাদর। কাজী ক্র্যাফট : বিজয় দিবস উপলক্ষে ফ্যাশন হাউস কাজী ক্র্যাফট বিজয়ের মোটিভে বিভিন্ন ধরনের পোশাকের পশরা সাজিয়েছে। রক্তলাল ও গাঢ় সবুজ রঙের মিশ্রণে তৈরি ফতুয়া ও পাঞ্জাবিগুলো তাঁতের কাপড়ে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী সিল্ক, অ্যান্ডি জটাকা, মানিকগঞ্জের তাঁতের খাদি কাপড়ে তৈরি মেয়েদের ফতুয়া, থ্রি-পিস, শর্ট কামিজ ও শাড়ি। ছেলেদের ফতুয়া, পাঞ্জাবি, শর্ট পাঞ্জাবি। বাচ্চাদের ফতুয়া ও পাঞ্জাবি সেটগুলোর মধ্যে কাজ করা হয়েছে বস্নক, স্প্রে, তুলির কাজ, সুই-সুতার ভরাট কাজ, অ্যাপিস্নক, অ্যামব্রয়ডারি, কারচুপি, কাটিং ডিজাইন ও টাই অ্যান্ড ডাই।