বে ড়া নো

অতিথি পাখির কলতান

প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম কেউ ভাবের পাগল। কেউবা আবার ভবের পাগল। কিন্তু এই দুই পাগল ছাড়াও দুনিয়ায় আরও একশ্রেণি রয়েছে ভ্রমণপাগল। ভ্রমণ নেশা একবার যার মনন-মস্তিষ্কে জেঁকে বসবে, তাকে আর ফেরায় কে? জাগতিক সব দায়-দায়িত্ব পালনের ফাঁক-ফোকরেই বেরিয়ে পড়বে, নয়নাভিরাম প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভে। এই লাভ টাকার অঙ্কের অনেক ঊর্ধ্বে। সেরকম লাভের লোভেই দে-ছুট ভ্রমণ সংঘ, গেল শুক্রবার ছুটে গিয়েছিল প্রকৃতির নির্জাসে ডুবে থাকা বিদ্যাপিঠ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। প্রতি বছর এই সময়টাতে ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা জলাশয়গুলোতে, অতিথি পাখির আগমন ঘটে। গতবারের চেয়ে এবছর পাখির বিচরণ অনেক বেশি। প্রায় ১০-১২টি জলাশয়ের মধ্যে, ৪-৫টিতে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি দেখা যায় বেশি। দর্শনার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পার্কিংয়ের দুই ধারের জলাশয়ে, সম্ভবত সবচেয়ে কাছাকাছি ও বেশি পাখি দেখে মুগ্ধ হবেন। সেই সুদূর সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল ও চিন থেকে আসা পরিযায়ী পাখির কিচিরমিচির আওয়াজে সারাক্ষণ মুখরিত থাকে চারপাশ। পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে পাখি আর প্রকৃতি মিলেমিশে একাকার। এসব জলাশয়ে হাঁসপ্রজাতির সরালী, পচার্ড, ফ্লাই ফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক, পাতারি ও অন্য প্রজাতিগুলোর মধ্যে মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলনাগতা, খঞ্চনা, চিতাটুপি জলপিপি এবং লালগুড়গুটি অন্যতম। এ ছাড়া সচারচর জল ময়ূরী, ডুবুরি, খোঁপা ডুবুরি, ছোট পানকৌড়ি ও বড় পানকৌড়ি পাখির দেখা মেলে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবছর জানুয়ারির প্রথম ও দ্বিতীয় শুক্রবার কর্তৃপক্ষ পাখিমেলার আয়োজন করে থাকেন। তখন পাখিপ্রেমিকরা প্রায় ২০-২৫ প্রজাতির অতিথি পাখি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাওলানা ভাসানি হলের আবাসিক ছাত্র আবু রাইহান রিয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা হলো, ক্যাম্পাস এরিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা বিষয়ে বরাবরের মতোই যথেষ্ট সচেতন। যার ফলে এবার নির্ধারিত সময়ের অনেক আগ থেকেই এসব জলাশয়ে অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত হয়েছে। এই শীতে যারা বাইক্কাবিল কিংবা টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে পারবেন না, তারা অনায়াসে পাখি দেখার স্বাদ নিয়ে আসতে পারেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস ঘুরে। পাখি দেখা শেষে ঢুঁ মারতে পারেন ক্যাম্পাসের ভিতর বোটানিক্যাল গার্ডেন। বিরল প্রজাতির বাঁশঝাড় দেখতে পাবেন। গার্ডেনের ভিতর লেকের সৌন্দর্যটাও অসাধারণ। এই শুষ্ক সময়েও লেকের টলটলে পানিতে মুখচ্ছবি ভেসে উঠবে। কীভাবে যাবেন : ঢাকার বঙ্গবাজার, মতিঝিল, গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ী এবং সদরঘাট থেকে বিভিন্ন পরিবহণের বাস সার্ভিস রয়েছে সাভার বাজার স্ট্যান্ড যাওয়ার জন্য। সেখান থেকে অটো বা রিকশায় কাজিয়ালকুন্ড। ভাড়া : ঢাকা থেকে সাভার জনপ্রতি ৩৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা। সাভার স্ট্যান্ড থেকে নামাবাজার পর্যন্ত ৫ থেকে ২০ টাকা অথবা সরাসরি চলে যান বড় কুশিয়ারা গ্রামের রূপনগর হয়ে কাজিয়ালকুন্ড। ভাড়া ১০০-১২০ টাকা। উলেস্নখ্য কাজিয়ালকুন্ড ধামরাই উপজেলা। তথ্য : শর্ষে খেতে ঘুরার জন্য সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে গেলে সূর্যের আলোয় শর্ষে ফুল দেখতে বেশ লাগবে। এরপর কাজিয়ালকুন্ড খেয়াঘাট থেকে ট্রলারে বংশী নদী পার হয়ে, চলে যেতে পারবেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বেলা ৩টার পর থেকে ক্যাম্পাসের জলাশয়ে পাখি দেখার সুবর্ণ সময়।