পোশাকে জ্যামিতিক নকশা

ইউরোপের বিভিন্ন ডিজাইনার পোশাকের কাটিং প্যাটার্ন ও নকশায় জ্যামিতিক ফর্ম ব্যবহার করতেন। আমাদের দেশে সীমিত আকারে পোশাকের নকশায় জ্যামিতিক মোটিফের ব্যবহার দেখা যেত। তবে কয়েক বছর ধরে এই ফর্মের পরিধি বেড়েছে। কাটিং প্যাটার্নে বেশ ভালোভাবেই যুক্ত হয়েছে। জনপ্রিয়তার কারণে পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য অনুষঙ্গে এই ফর্মের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। পোশাকে মূলত প্রিন্টের মাধ্যমে জ্যামিতিক নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। সরলরেখা, বক্র রেখা, ডট, বৃত্ত, ত্রিভুজ, বর্গ ইত্যাদি বেশি ব্যবহৃত হয়। ছোট ছোট কোণবিশিষ্ট এবং নিয়মিত বিরতিতে বাঁক নেয়া জিগজ্যাগ বা শেভরন প্যাটার্নের পোশাকও এখন তরুণীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়।

প্রকাশ | ১৫ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
জ্যামিতি এখন শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নেই। বিষয়টিকে পোশাক ও নানা অনুষঙ্গে নিয়ে এসেছেন ডিজাইনাররা। সরল রেখা, বক্ররেখা, ডট, ত্রিভুজ, বৃত্ত, বর্গসহ নানা জ্যামিতিক ফর্ম ব্যবহার করে নকশা করা হচ্ছে পোশাকের। কাটিং প্যাটার্নও হচ্ছে এই ধারায়। এর ফলে সাজপোশাকে যুক্ত হচ্ছে নতুন মাত্রা। লুকেও এসেছে পরিবর্তন। পোশাকের নকশায় ইউরোপের বিভিন্ন ডিজাইনার পোশাকের কাটিং প্যাটার্ন ও নকশায় জ্যামিতিক ফর্ম ব্যবহার করতেন। আমাদের দেশে সীমিত আকারে পোশাকের নকশায় জ্যামিতিক মোটিফের ব্যবহার দেখা যেত। তবে কয়েক বছর ধরে এই ফর্মের পরিধি বেড়েছে। কাটিং প্যাটার্নে বেশ ভালোভাবেই যুক্ত হয়েছে। জনপ্রিয়তার কারণে পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য অনুষঙ্গে এই ফর্মের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। পোশাকে মূলত প্রিন্টের মাধ্যমে জ্যামিতিক নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। সরলরেখা, বক্র রেখা, ডট, বৃত্ত, ত্রিভুজ, বর্গ ইত্যাদি বেশি ব্যবহৃত হয়। ছোট ছোট কোণবিশিষ্ট এবং নিয়মিত বিরতিতে বাঁক নেয়া জিগজ্যাগ বা শেভরন প্যাটার্নের পোশাকও এখন তরুণীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। প্রথমদিকে দুই রঙের কেবল সাদা আর কালোর কম্বিনেশনের জিগজ্যাগই ছিল। এখন মাল্টিকালার জিগজ্যাগ প্রিন্টের বেশ চল। 'টি-শার্ট থেকে শুরু করে জাম্পসু্যট সব কিছুতেই জ্যামিতিক প্রিন্টের আয়োজন নজর কাড়বে। লনের কামিজ কিংবা কুর্তির বর্ডারে জিওমেট্রিক মোটিফে পেস্নসমেন্ট প্রিন্ট ব্যবহার করা হয়। জ্যামিতির একটা দারুণ ব্যাপার সার্কল। তাই ডিজাইনে এঁকে রাখতেই হয়। এ ছাড়া তরুণীদের বিভিন্ন রঙের ত্রিকোণাকৃতি প্রিন্টেড টপ বা শর্ট ড্রেসেরও দারুণ চাহিদা এখন। ডেনিমের সঙ্গে এই রকম টপ অনায়াসে মানিয়ে যাবে। বাজার ঘুরে দেখা গেল, মেয়েদের কুর্তি, টপস, শর্ট কামিজ, লং কামিজ, জ্যাম্পসু্যট, স্কার্ট কিংবা হালের ক্রেপটপও এখন বর্ণিল জ্যামিতিক মোটিফে। এমনকি শাড়ির পাড় ও আঁচলেও জ্যামিতিক নকশা থাকছে। সাদা রঙের টপস আছে, যেগুলোর পুরো বডিজুড়েই নীল বা কালো রঙের ছোট ছোট ত্রিভুজের নকশা করা। আবার কামিজ বা টপের বুকের অংশে, হাতায় কিংবা নিচের অংশে ভিন্ন কোনো রঙে কন্ট্রাস্ট করা জ্যামিতিক মোটিফের পোশাকও মিলছে। কিছু লং কামিজের বডিজুড়েই সুতা দিয়ে ছোট ছোট বর্গক্ষেত্রের মতো নকশা করা হয়েছে। সেই বর্গক্ষেত্রের মধ্যে আবার কারচুপির নকশা করে বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। রঙের মধ্যে সাদা, কালো, নীল, আকাশি, মেরুন, হলুদ ইত্যাদি বেশি। আইকনিক ফ্যাশন গ্যারেজের উদ্যোক্তা ও ডিজাইনার তাসলিমা মলি জানান, 'ফ্যাব্রিকের মধ্যে কটন, লিনেন, সিল্ক, জর্জেট, ক্যাশমিলনে জ্যামিতিক মোটিফ বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।' পোশাকে নিচের অংশে কাটে নতুনত্ব চোখে পড়ার মতো। স্ট্রেট কাট, গোলাকার, ত্রিকোণাকৃতির কাটই বেশি। বটম লাইনে লেয়ারিং নকশা দেখা যাচ্ছে। সামনের অংশের চেয়ে পেছনের বেশ খানিকটা ঝুল নামানো কাটিংও আছে। কিছু কুর্তিতে বেশ খানিকটা ঘের দিয়ে তাতে এসিমেট্রিক কাট ব্যবহৃত হয়েছে। ছোট হাতা, বড় হাতা, থ্রি-কোয়ার্টার, ম্যাগি হাতা ও হাতাকাটা সব ধরনের হাতায়ই জ্যামিতিক কাট দেখা যায়। গয়নার বৈচিত্র্য হাল ফ্যাশনে তরুণীদের কাছে জ্যামিতিক নানা শেপের গয়না জনপ্রিয়। পিতল, ব্রোঞ্জ, অক্সিডাইজড পার্ল প্রভৃতি ম্যাটেরিয়ালে তৈরি হয়েছে এসব গয়না। স্কয়ার, সার্কল বা ট্রায়াঙ্গেল শেপের দুল, হাতের চুড়ি, বালা, আংটি, নাকফুল, পায়েলসহ হরেক রকম গয়না আছে। গোল, চার কোনা কিংবা বহুভুজাকৃতির জ্যামিতিক মোটিফে নকশা করা মালা হরহামেশাই চোখে পড়ছে। এসব গয়না শাড়ি, কামিজ কিংবা টপের সঙ্গে দারুণ মানিয়ে যাবে। তিন কোনা শেপের কানের দুল, চারকোণা রিং স্টাইলে বেল্ট বা ওভাল শেপের কানের ঝুমকা- সবই এখন চলতি ট্রেন্ড। এসব গয়নায় রঙিন সুতা, ডোকর ও বিডস ব্যবহারে বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে থাকছে বিভিন্ন জিওমেট্রিক শেপের রঙিন ছোট-বড় পাথরের কারুকাজ। সুতার তৈরি মালায় এসব ত্রিকোণা বা চৌকোনা স্টোন ছোট-বড় সিঙ্গেল লকেট হিসেবে গেঁথে দেয়া হচ্ছে। অনলাইন গয়নার দোকান শৈলীর ডিজাইনার তাহমিনা খান শৈলী বলেন, 'রাবার পস্নাস্টিক, পুঁতি, চামড়া, রিবনসহ নানা রকম ধাতু ব্যবহার করে যেমন গয়না তৈরি হচ্ছে, তেমনি গয়নার শেপ নিয়েও নানা নিরীক্ষা হচ্ছে। চুড়ি হতে পারে চৌকোনা বা খানিকটা ওভাল শেপের আর কানের দুলও থাকতে পারে ষড়ভুজ, বৃত্তাকার ও জিগজ্যাগ আকৃতির।' ব্যাগ ব্যাগেও জ্যামিতিক মোটিফের নকশা ও কাটিং প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে। খানিকটা গোলাকার, চৌকোনা, ত্রিকোণাসহ নানা শেপের ব্যাগ এখন বেশ চলছে। এসব ব্যাগের হাতলে থাকছে বৈচিত্র্য। পুরো গোলাকার, চার কোনা বা ত্রিকোণ হাতলও সমান জনপ্রিয়। ফ্যাশনে টোট ব্যাগ ও বক্স ব্যাগও চলছে। চার কোনা, ডিম্বাকৃতি, গোলাকৃতি, পানপাতার আকৃতি ও তিন কোনা শেপের নানা ডিজাইনের পাবেন। গুটিপার স্বত্বাধিকারী তাসলিমা মিজি বলেন, 'টোট ব্যাগ সাধারণত কাপড় বা চামড়ার হয়ে থাকে। ছাপা নকশার লেদারের টোট ব্যাগও দারুণ জনপ্রিয়। এসব ব্যাগের ওপরের ফ্যাব্রিকটি ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, গোলাকৃতি, ঘনক ইত্যাদি নকশায় সাজানো থাকে।' এ ছাড়া ছোট বাক্সের মতো দেখতে ক্লাস ব্যাগ আর চৌকাকৃতির লেদার স্স্নিম ব্যাগও চলছে। ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, গোলাকার ও অর্ধবৃত্তাকার ঝোলা ব্যাগ পাওয়া যাচ্ছে। উপকরণ হিসেবে এগুলোয় আছে পাট, চট, সুতা, ডেনিমসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড়। রঙ বেরঙ ডেস্ক