সচেতন থাকুন, করোনামুক্ত থাকুন

করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত সারা বিশ্ব। থমকে গেছি আমরাও। তবে এর মধ্যেও মেনে চলতে হবে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং খুঁজে নিতে হবে প্রতিরক্ষার উপায়। নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সম্ভাব্য সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে মেলামেশা না করা এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর সর্বোত্তম উপায়।

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০২০, ০০:০০

রঙ বেরঙ ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। করোনাভাইরাস আতঙ্ক নিয়ে দিন পার করছে বিশ্বের কমপক্ষে ১২৮টি দেশ। চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া এই ভাইরাস প্রতিরোধে নানা দেশ নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্তের পর থেকে বাংলাদেশও শরিক হয়েছে করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে। করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য রোগের বিস্তার সীমিত পর্যায়ে রাখতে মেডিকেল মাস্ক সাহায্য করে। তবে এটার ব্যবহারই এককভাবে সংক্রমণ হ্রাস করতে যথেষ্ট নয়। ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে এমন মাস্ক কার্যকর বলে প্রমাণিত না হলেও এগুলো অন্তত কিছু জীবাণু মুখ কিংবা নাকে যাওয়া ঠেকাতে পারে। এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- মাস্ক পরা থাকলে মানুষের হাত যখন-তখন মুখ বা নাকে যায় না। আপনি যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন, তাহলে এমন মাস্ক অন্যদের আক্রমণ থেকে বাঁচাবে। হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় হাতের তালু দিয়ে মুখ না ঢেকে কনুই দিয়ে মুখ আর নাক ঢাকতে হবে। তবে টিসু্যও ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ব্যবহারের পর টিসু্যটি দূরে ফেলে দিয়ে হাত ভালোভাবে ধুতে হবে। তেমনিভাবে পরিধেয় পোশাকটিও ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সম্ভাব্য সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে মেলামেশা না করা এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর সর্বোত্তম উপায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পানি ও সাবান দিয়ে হাত ধুলেও চলবে। তবে নিশ্চিত করতে হবে যেন পুরো হাত ভালোভাবে ধোয়া হয়। সবচেয়ে ভালো হয় অ্যালকোহলসমৃদ্ধ তরল ব্যবহার করা। শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য অসুস্থতার মতো এই ভাইরাসের ক্ষেত্রেও সর্দি, কাশি, গলাব্যথা এবং জ্বরসহ হালকা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কিছু মানুষের জন্য এই ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। এর ফলে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট এবং অর্গান বিপর্যয়ের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। তবে খুব কম ক্ষেত্রেই এই রোগ মারাত্মক হয়। এই ভাইরাস সংক্রমণের ফলে বয়স্ক ও আগে থেকে অসুস্থ ব্যক্তিদের মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। জ্বর, কাশি কিংবা শ্বাসকষ্ট হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। যেখানে জনসমাগম বেশি সেসব জায়গায় যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত সারা বিশ্ব। থমকে গেছি আমরাও। তবে এর মধ্যেও মেনে চলতে হবে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং খুঁজে নিতে হবে প্রতিরক্ষার উপায়। পুষ্টিগত দিক দিয়ে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে আমরা খুব সহজেই আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারি। দিনের শেষে যা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে করোনাসহ যে কোনো ভাইরাসজাতীয় অসুস্থতা থেকে। তাই সবাই করোনার বিষয়ে সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন। ভিটামিন এ, সি, কে এবং ফলেই সমৃদ্ধ খাবার বাড়াতে পারে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। অর্থাৎ দৃঢ় করবে আমাদের প্রতিরোধব্যবস্থা (ইমিউন সিস্টেম)। রঙিন শাক-সবজি এবং টকজাতীয় বেশি ফল যার অন্যতম উৎস। বেদানায় আছে ক্ষমতাসম্পন্ন ধহঃযড়পুধহরহ যা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে আমাদের রক্ষা করে। পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ গরম পানি প্রতি ঘণ্টায় পান করা জরুরি। এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে মধু ও আদা যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়াবে এবং পাশাপাশি ধহঃর-রহভষধসসধঃড়ৎু এবং ধহঃরড়ীরফধহঃ হিসেবে কাজ করবে। পর্যাপ্ত যুফৎধঃরড়হ-এর জন্য কলা ও ডাবের পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধহঃর-রহভষধসসধঃড়ৎু গুণাবলি পরিলক্ষিত হয় রসুনে। যা মুরগি অথবা সবজির সু্যপে ব্যবহার করা যেতে পারে। জ্বরে আক্রান্ত হলে অবশ্যই দৈনিক খাদ্য তালিকায় প্রথম শ্রেণির প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াতে হবে। প্রতি কেজি ওজনের জন্য যা হবে ১-১ ১/২ গ্রাম। এ সময়ে অবশ্যই লক্ষ্য করতে হবে ডায়াবেটিস এবং কিডনি রোগী একটি সুষম খাদ্য তালিকা মেনে তাদের রোগের ব্যাপ্তিকে নিয়ন্ত্রণ করছে কিনা। কাঁচা মাছ-মাংস, শাকসবজি ধরার পরে অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ভালো মতো ধুয়ে ফেলতে হবে। মাছ-মাংস এবং ডিম যথাযথ পরিমাণ তাপমাত্রায় পরিপূর্ণ সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না জরুরি। উপরোক্ত বিষয়গুলো যথাযথভাবে মেনে চললে পুষ্টিগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে আমরা এ স্বাস্থ্য বিপর্যয় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।